আয়ারল্যান্ড হাসছে, 'নিষিদ্ধ' ক্রিকেটে টেস্টের হাসি
একটা ক্রিকেট দলের কেতাবি ফটো-সেশন। সিনিয়ররা সামনে চেয়ারে বসে, অধিনায়ক মাঝের দিকে। চেয়ারে বসে দুই হাত দুই হাঁটুর ওপর। মুখে হাসি। পেছনে দাঁড়িয়ে থাকাদের মুখেও মুখে হাসি। চোখ ক্যামেরার দিকে। চেয়ারের আলাদা গুরুত্ব আছে, লর্ডসের মতো জায়গায় ফটোসেশন করতে হলে তো নিজেদেরই সেসব বয়ে আনতে হয় লং-রুম থেকে। ক্রিকেট ঐতিহ্যগুলোর এটিও একটি।
আয়ারল্যান্ডের এই ছবিটাও কেতাবি কায়দায় তোলা। চেয়ারে মাঝের দিকে বসে অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, তার ডানে এড জয়েস, তারও ডানে ও’ব্রায়েন ভাতৃদ্বয়- কেভিন ও নিয়াল। পোর্টারফিল্ডের বাঁদিকে গ্যারি উইলসন, বয়েড র্যাঙ্কিন, পল স্টার্লিং। স্টার্লিংয়ের পেছনে দাঁড়ানো টিম মারটাঘ, তার ডান থেকে জেমস শ্যানন, ন্যাথান স্মিথ, অ্যান্ড্রু ব্যালবার্নি, স্টুয়ার্ট থম্পসন, টাইরন কেন ও অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন। হাসছেন সবাই।
সাদা ট্রাউজারস, সাদা জার্সির ওপরে সবুজ বর্ডার দেওয়া সুয়েটারের ওপর অঙ্কিত সবুজ শ্যামরক পরা এই দলের ছবিটা ঐতিহাসিক। চোট পেয়ে শেষ মুহুর্তে ছিটকে যাওয়ার আগে স্মিথও এখানে হাসছিলেন, হয়তো তিনিও বাঁধিয়ে রাখবেন ছবিটা। আয়ারল্যান্ডের ছেলেদের প্রথম টেস্ট স্কোয়াডে ছিলেন তিনি, আরও ১৩ জনের মতো। ৭০ বছর যে দেশে নিষিদ্ধ ছিল ক্রিকেট, সেই দেশই হচ্ছে ১১তম টেস্ট খেলুড়ে দেশ।
আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট হাসছে। ২৫০ বছরের বেশি সময় ধরে যে দেশটা ক্রিকেট খেলেছে, তারা এবার জায়গা পাচ্ছে প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো এক অভিজাত ক্লাবে। ডাবলিনের মালাহাইড ক্রিকেট ক্লাবের মাঠ দ্য ভিলেজে তাদের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। যে পাকিস্তানকে প্রায় একযুগ আগে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে হারিয়ে নতুন পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল আইরিশ সমুদ্রপাড়ের এই ক্রিকেটজাতির।
****
সেন্ট প্যাট্রিকস ডে। ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের বাৎসরিক ভোজের দিন। ২০০৭, কিংস্টন, জ্যামাইকা। স্যাবাইনা পার্কের পিচটা সবুজাভ। আইরিশরা তো এমন পিচে খেলেই অভ্যস্থ, পাকিস্তানিরা নয়। মোক্ষম সুযোগ। ফিল্ডিংয়ে নামার সময় একদল পাকিস্তানি দর্শক ব্যঙ্গ করছিলেন, “ক্রিকেট মাঠে আইরিশরা কী করছে! তাদের থাকার কথা পানশালায়, বিয়ার নিয়ে!”
সে বিশ্বকাপে আইরিশ বোলারদের মন্ত্র ছিল একটাই। স্টাম্প ধরে বোলিং। নো বল করা যাবে না। তবে তারা সেই ইনিংসে করলেন তিনটা নো-বল। বাকি মন্ত্র ঠিকই থাকলো। ১৩২ রানে অল-আউট পাকিস্তান। তবে কাজটাও বাকি। বিরতির সময় অধিনায়ক ট্রেন্ট জনস্টন ছড়িয়ে দিলেন ক্রিকেটের চেয়েও বড় মন্ত্র। তখন আয়ারল্যান্ড দলে পেশাদার ক্রিকেটার বলতে দুইজন- এড জয়েস ও এওইন মরগান। বাকি সবারই পেশাটা আলাদা, নেশাটা একই। আইরিশ পানশালায় বসে বিয়ার নয়, ২২ গজের ক্রিকেট।
উড়ছেন কেভিন ও'ব্রায়েন, ২০১১ বিশ্বকাপে
“ফিরে গিয়ে আবার কাপড় বেচতে চাও? কৃষিকাজ করবে? স্কুলে পড়াতে চাও? যদি না করতে চাও, তাহলে এটাই সুযোগ”, জনস্টন উদোম গায়ে চিৎকার করছিলেন ড্রেসিংরুমে।
আজহার মাহমুদকে লং-অন দিয়ে ছয় মেরে আইরিশদের উল্লাসে মাতালেন সেই জনস্টনই। ক্রিকেট বিশ্ব শুনলো হারিয়ে যাওয়া এক ‘আইরিশ পাব সং’। সুপার এইটে আইরিশদের শিকার বাংলাদেশ। সেই শুরু।
পরের দুই বিশ্বকাপে আরও তিনটি টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হারালো আয়ারল্যান্ড। তবে একটি দলকে হারানো যেন ছাড়িয়ে গেল সবকিছুকে। তাদের সাবেক শাসক ইংল্যান্ডকে। যাদের বয়ে আনা ক্রিকেটটা আইরিশরা গ্রহণ করেছিল, তবে দীর্ঘদিন ধারণ করতে পারেনি! আর যাই হোক, এটা যে বৃটিশ খেলা, আইরিশ নয়!
****
জিএএ। গ্যেলিক অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন। ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা। আয়ারল্যান্ডের বাতাসে তখন জাতীয়তাবাদের সুর। নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যস্ত। জিএএ করলো সেটাই- ছড়িয়ে দিল মন্ত্র, খেলাধুলাতেও সবকিছু হবে আইরিশ। খেলা হবে মূলত হারলিং, গ্যেলিক ফুটবল। আর কিছু নয়।
১৯০১ সালে ‘নিষিদ্ধ’ করা হলো ক্রিকেটকে। ক্রিকেটের মতো ‘বিদেশী’ খেলা শুধু খেলতে নয়, নিষেধাজ্ঞা এলো দেখাতেও। যারা এ নিয়ম ভঙ্গ করবেন, তাদেরকে জিএএ আয়োজিত কোনও খেলায় অংশ নিতে দেওয়া হবে না। জাতীয়তাবাদের চাপে চাপা পড়ে গেল ক্রিকেট।
অথচ এর আগে ক্রিকেট ছিল আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। সেই ১৭৩০ সাল থেকে শুরু, উনবিংশ শতাব্দিতেও ৩২টা কাউন্টিতে খেলা হতো, ক্যাথলিক, প্রোটেসটান্টরা খেলতেন মিলেমিশে। সেই ক্রিকেটই মিলিয়ে যেতে লাগলো। তবে ঠিক হারিয়ে গেল না। কিছু পরিবার চালিয়ে গেলেন খেলা।
এই নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। তবে ক্রিকেট ততোদিনে টিকে আছে শুধু এর ছায়ায়। যারা তখনও ক্রিকেট খেলতেন, ব্যঙ্গ করে তাদের বলা হতো ‘ওয়েস্ট ব্রিটস’। ক্রিকেট তখন শুধুই মজার বিষয়, এ নিয়ে সিরিয়াস হওয়ার কিছু ছিল না।
পোর্টারফিল্ডের সঙ্গে মরগান, একই দলে
ইংল্যান্ডে যেসব জাতীয় দল সফরে যেত, তারা আয়ারল্যান্ডে থামতো গা-গরমের জন্য। তবে সেসব ম্যাচে টস হতো না। সফরকারিরাই আগে ব্যাট করতো বরাবর। আয়ারল্যান্ডের খেলা বলতে বছরে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে শুধু একটি ম্যাচ।
১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড ছিল ইংল্যান্ডের ‘মাইনর কাউন্টি’র মর্যাদার। সে বছর আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ পেল আয়ারল্যান্ড। ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের নতুন দেওয়ালের প্রথম ইট সেটিই। এরই মাঝে অস্ট্রেলিয়া থেকে এলেন জনস্টন, মিডলসেক্সে নিজেকে প্রতিষ্টা করলেন এড জয়েস।
সেই জয়েস, স্কুলে থাকতে যার ব্যাট চুরি যেতো প্রায়। ডাবলিনের দক্ষিণের এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা জয়েসের মতোই অবস্থা ডাবলিনের উত্তরের শ্রমিক পরিবার থেকে আসা জন মুনির। ট্রেনে করে অনুশীলনে যাওয়ার সময় তাকেও লুকিয়ে রাখতে হতো ব্যাট।
ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ড ছেড়ে গিয়েছিল অনেক আগেই, তবে তাদেরকে ছাড়েনি ইংলিশ ভূত। ক্রিকেট মানেই ইংল্যান্ডের অনুসারি ধরনের ব্যাপার তখনও আয়ারল্যান্ডে। উপায় একটাই- সেই ইংল্যান্ডকেই সেই ক্রিকেটেই হারানো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে নিজেদের পরিচয় হিসেবে বেছে নিয়েছিল, ক্রিকেটকে বেছে নিয়েছিল তাদের ‘প্রভূ’ ইংল্যান্ডকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটকে ধারণ করলো।
এলো বেঙ্গালুরু। ২০১১।
“এই হা**দের হারাতে পারলে জীবনে আর কোনও ম্যাচ জেতার দরকার নেই আমার”, প্যাড-আপ করতে করতে বলছিলেন মুনি। কেভিন ও’ব্রায়েন মুখে কিছু বলেননি। বেছে নিলেন তার ব্যাটটা, কথা বলার জন্য। বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরি এলো, জয় এলো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এককালের ‘নিষিদ্ধ’ ক্রিকেট, শীর্ষ চার খেলার পর ‘অন্যান্য খেলা’র পর্যায়ে পড়া ক্রিকেট এলো সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়।
****
এই ইংল্যান্ডের কাছেই ‘টেস্ট’ ক্রিকেটারদের হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ২০০৭ বিশ্বকাপের পরই এড জয়েস চলে গেলেন, যদিও শেষ পর্যন্ত খেলতে পারলেন না টেস্ট। এওইন মরগান গেলেন। টেস্ট খেললেন, এখন তো ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের অধিনায়কই তিনি। বয়েড র্যাঙ্কিন গেলেন, একটি টেস্ট খেলে ফিরে এলেন। আয়ারল্যান্ডের প্রথম টেস্টের স্কোয়াডেও আছেন তিনি।
তবে এই ইংল্যান্ড-যাত্রার আরও আগেই আইরিশরা গেছেন বিভিন্ন জায়গায়। অ্যালান লুইস যেমন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন। তার পরিবারেই ছিল ক্রিকেট। তার আগে গিয়েছিলেন সমারসেটে। ছিলেন দ্বিতীয় একাদশে। এবার ছুটলেন সিডনি। সেখানকার গ্রেড ক্রিকেটে। তাকে দেখে অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন, “আইরিশরাও ক্রিকেট খেলে নাকি!” মার্ক টেলরদের সঙ্গে খেলেছিলেন লুইস। আয়ারল্যান্ডে তার সতীর্থ ছিলেন হ্যানসি ক্রনিয়ে।
১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে যেতে পারলো না আয়ারল্যান্ড, লুইস অবসরে গেলেন। আইরিশ ক্রিকেটের আঁধারে লুকিয়ে থাকা উজ্জ্বল তারকা বনে গেলেন রাগবি রেফারি, দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্বকাপেও। এখনও সবাই তাকে রাগবির বিশ্বকাপ রেফারি হিসেবেই চেনে আয়ারল্যান্ডে!
তবে জয়েস-মরগানদের যে ইংল্যান্ডে যাওয়া, এতে তাদের ওপর কোনও রাগ ছিল না কারও। তারা আয়ারল্যান্ডে ‘গর্বিত আইরিশ’ হিসেবেই ছিলেন। তবে ছিল শুধু হতাশা। ইংল্যান্ডের একটা ভাল মানের স্কুলের সমানও যে ক্রিকেট-সুবিধা ছিল না আয়ারল্যান্ডে। আবার কাউন্টি ক্রিকেটই ছিল আয়ারল্যান্ডের মেধা তুলে আনার একমাত্র সুযোগ।
এড জয়েস : পূরণ হচ্ছে টেস্ট-স্বপ্ন!
২০০৪ সালে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের একমাত্র ‘ফুলটাইম’ কর্মকর্তা বলতে ছিলেন তাদের জাতীয় কোচ। তখনও আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে স্ট্যাটস পায়নি, স্পোর্টস হেডকোয়ার্টারে ‘সংখ্যালঘু’ খেলাগুলোর জন্য বরাদ্দ কক্ষগুলোর একটিতে ছিল আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট ইউনিয়ন।
এখনকার প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ডিউট্রোম যখন ইংল্যান্ডে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে এসে যোগ দিলেন, তখন নির্বাহী কর্মকর্তা বলতে ছিলেন তিনি একাই। আর ছিলেন তার দুইজন সহকারি। তখন যদি তাকে কেউ বলতো, এক যুগ পরই টেস্ট খেলবে আয়ারল্যান্ড, এই কাঠামোর ভিতে দাঁড়িয়ে, নিশ্চিত ডিউট্রোম তার মানসিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন।
কিন্তু আয়ারল্যান্ডে তখন একগুচ্ছ মেধাবি আর তরুণ ক্রিকেটার ছিল। তারাই বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিলেন বাংলাদেশে, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। সে দলে ছিলেন এখনকার অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, ছিলেন তার বন্ধু এওইন মরগান।
আয়ারল্যান্ডে এখন ২০ জন চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার। ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়ছে, ২০০৭ বিশ্বকাপের পর ক্রিকেট খেলা মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার থেকে গত বছরে এসে ঠেকেছে ৫০ হাজারে। ১০ বছর ধরে ডাবলিনের স্কুলগুলোকে নিয়ে চালু হওয়া ক্রিকেট বলের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এখন খেলছে প্রায় ৫০টা স্কুলের ছেলে-মেয়েরা।
****
২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর আরও দুইটি ম্যাচ জিতলো আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ডে চেয়েও একটি বেশি। টুইটারে আয়ারল্যান্ডকে বলা হলো, “ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন”। তবে পরের বিশ্বকাপ থেকে আইসিসি হয়ে পড়লো ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন, বিশ্বকাপ নেমে এলো ১০ দলে।
যে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টাই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড, সেই জিম্বাবুয়েতেই অল্পের জন্য বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেই বাদ পড়তে হলো এবার তাদের।
অবশ্য আইসিসি আয়ারল্যান্ডকে দিল টেস্ট স্ট্যাটাস। তারা এখন পূর্ণ সদস্য, নতুন এফটিপিতে ওয়ানডে লিগের অংশ তারা এখন। আইসিসির সিদ্ধান্তে তারা ভোট দিতে পারবেন, অংশ হবেন লাভ ভাগাভাগির।
তবে টি-টোয়েন্টির ডামাডোলে এই পাঁচদিনের ম্যাচ কতখানি আগ্রহ জোগাতে পারবে আইরিশদেরর? আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করে যাচ্ছে, তাদের স্লোগান, "ইতিহাসের অংশ হতে আসুন।" আপাতত তাদের বেশি টেস্ট খেলার ইচ্ছা নেই। তারা এগুতে চায় ধীরে ধীরে। মানুষকে কাছে টেনে। যে ক্রিকেট ছিল একসময় সবচেয়ে জনপ্রিয়, যে ক্রিকেট পরে ছিল নিষিদ্ধ, সেই ক্রিকেটেরই সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেছে আয়ারল্যান্ড- এখনকার জন্য মানুষকে কাছে টানতে তো এটাই যথেষ্ট!
ক্রিকেট এখন আর বিজাতীয় খেলা নয় আয়ারল্যান্ডে। উচ্চবিত্ত ‘ওয়েস্ট ব্রিটস’-দের খেলাও নয় শুধু। প্রোটেসটানট-ক্যাথলিক, শ্রমিক শ্রেণি-মধ্যবিত্ত শ্রেণি, আদি আইরিশ ছেলে-মেয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বংশোদ্ভূত, সঙ্গে আছে এশিয়ান উপমহাদেশ থেকে আসা অভিবাসীরা- ক্রিকেট এখন সবারই খেলা।
আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট ভ্রমণটা দীর্ঘ বেশ। কখনও খেই হারিয়ে ফেলতে হয়েছে একে, কখনও থমকে দাঁড়িয়েছে। আবার চলা শুরু করেছে ধীরলয়ে, দ্রুতপায়ে। এরপর দৌড়। এরপর কাঙ্খিত সেই স্টেশন- টেস্ট ক্রিকেট।
জয়েস-পোর্টারফিল্ডদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে ১১ মে। ডাবলিনের মালাহাইডে আয়ারল্যান্ডের হয়ে যে ১১ জনের টেস্ট অভিষেক হবে, তাদেরও একটা ছবি থাকবে।
সেই ১১ জন হাসবেন, আনন্দাশ্রু লুকিয়ে। আর আনন্দাশ্রু থাকবে আরও শত ক্রিকেটারের। যারা বুকের এককোণে আয়ারল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলার স্বপ্নটা ধারণ করতেন।