পুরো লিগ খেলে এক টাকাও পাননি কলাবাগানের একাধিক ক্রিকেটার
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের ক্রিকেটাররা ক্লাবের বিরুদ্ধে পারিশ্রমিকের টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ করেছেন। আজ মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন তাসামুল হকসহ কয়েকজন ক্রিকেটার। তাদের দাবি, জসীম উদ্দিন, সনজিত সাহা দীপ ও আবু বকর অনিক এক টাকাও পাননি। তাসামুল এ তালিকায় আশরাফুল আছেন বললেও আরেক ক্রিকেটার নাবিল সামাদ বলেছেন, আশরাফুলের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন। বাকিরা পেয়েছেন ৫০ শতাংশের মতো।
প্রিমিয়ার লিগে এবার ছিল ‘প্লেয়ারস বাই চয়েস’ পদ্ধতি, যেখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্দিষ্ট করে দেওয়া ছিল ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক। বিসিবি বলেছিল, পারিশ্রমিক নিয়ে স্বচ্ছতার জন্যই এমন পদ্ধতি। তবুও এবার উঠলো অভিযোগ। বিসিবি অবশ্য বলছে, যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন তারা।
তাসামুলের দাবি, “আমাদের নিয়মানুযায়ী ৫০ শতাংশের পর ২৫ শতাংশ পাওয়ার কথা, বলা হয়েছিল খেলা শেষ হলে দেবে। টাকা কেটে নেওয়ার কোনও সুযোগই নেই। আমরা বিসিবিকে বলেছিলাম। বাকি ৫০ শতাংশই দাবি করছি। ক্লাব প্রত্যাখ্যান করলে আমরা বিসিবিকে জানিয়েছি।”
তাদের চিঠি বিসিবি গ্রহণ করেছে। কলাবাগানকে বিসিবির পক্ষ থেকে একটা চিঠিও দেওয়া হয়েছে, যার উত্তর দিয়েছে তারা। তবে সেটা বিবেচনায় এনে বিসিবি কবে পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তারিখ পাননি ক্রিকেটাররা।
অবশ্য ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ বিষয়ে ক্রিকেটাররা একটা কাগজে স্বাক্ষর করেছিলেন। তাসামুল বলছেন, সেটা ছিল নিতান্তই পারফরম্যান্সজনিত চাপ, কারণ-দর্শানো নোটিশ। পারিশ্রমিক কেটে নেওয়ার কোনও কথা সেখানে ছিল না, আর এমন নিয়মও নেই।
“আমাদেরকে এমনভাবে বলা হয়েছিল, ‘যাতে তোমরা পারফরম্যান্স ভাল করতে পারো, একটা চাপ দেওয়ার জন্য। ক্লাব থেকে এটা করা হয়েছে। তোমরা এটা (সই) করে দাও। আর এটা ক্লাবের কোনও প্যাডও না। তোমরা করে দাও, সমস্যা নেই।”
“ক্লাবের প্যাডও ছিল না। পারফরম্যান্স খারাপ হচ্ছিল, ফটোকপি ছিল। ওইটার কোনও ভিত্তি ছিল না। কারণ দর্শানো নোটিশ ছিল। আর আমাদের টাকা কেটে নিতে পারবে, এমন কিছুও ছিল না ওখানে। আমরা ওইটার সাথে একমত ছিলাম না।”
বিসিবিকে জানানোর পর ক্লাবের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তারা। এবার বিসিবির কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছে কলাবাগান, “ক্লাব বলেছে, তোমরা (বিসিবিকে) লিখিত (অভিযোগ) দেওয়ার পরে ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাভ হবে না। এখন বিসিবিই তোমাদের পারিশ্রমিক প্রদান করবে।”
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরি বলছেন, তারা একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন, “ক্রিকেটাররা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সাথে যে ক্লাবগুলো বোর্ডের সঙ্গে কাজ করে, তারাও গুরুত্বপূর্ণ। যে অভিযোগ এসেছে, তা সংশ্লিষ্ট ক্লাবের সাথে আলোচনা করে যতো দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবো।”
পারিশ্রমিকের পদ্ধতিটা আরও ভাল করার চেষ্টাও করবে বিসিবি, “পেমেন্ট সিস্টেম আরো ভালো করার জন্য আমরা চেষ্টা করবো। সব সময় আসলে চেষ্টা করা হয়েছে। সামনেও বোর্ড চেষ্টা করবে। এখন পর্যন্ত আমরা একটা ক্লাবের অভিযোগ পেয়েছি এবং এটা নিয়েই কাজ করা হচ্ছে।”
“আমাদের মনিটরিং সিস্টেম আছে। সেটা সম্ভব হয়, যখন কোনো প্লেয়ার আমাদের জানায়, তখনই তা নিয়ে কাজ করা হয়। নির্ধারিত সময়ে পেমেন্ট করা হয়নি বলেই অভিযোগ এসেছে। আমরা ক্লাবের নীতিনির্ধারক যারা আছেন, তাদের সঙ্গে সরাসরি বসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবো।”
৫ এপ্রিল শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আসর। কলাবাগান যে লিগ থেকে রেলিগেটেড হয়ে গেছে এবার।