একই দিনে দুই ইনিংসে দুইরকম আয়ারল্যান্ড
ডাবলিন টেস্ট
তৃতীয় দিনশেষে
পাকিস্তান ১ম ইনিংস ৩১০/৯ ডিক্লে. (শফিক ৬২, শাদাব ৫৫, ফাহিম ৮৩, মারটাঘ ৪/৪৫, থম্পসন ৩/৬২, র্যাংকিন ২/৭৫)
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস ১৩০ (কেভিন ও’ব্রায়েন ৪০, উইলসন ৩৩*, আব্বাস ৪/৪৪, শাদাব ৩/৩১) ও ২য় ইনিংস (ফলোয়িং অন) ৬৪/০ (জয়েস ৩৯*, পোর্টারফিল্ড ২৩*)
আয়ারল্যান্ড ১১৬ রানে পিছিয়ে
মালাহাইডে উজ্জ্বল আকাশের নিচে প্রথমে বিবর্ণ আইরিশ ব্যাটিং। টেস্ট ক্রিকেটটা তাদের কাছে ঠেকলো বড্ড অচেনা, পাকিস্তানের সম্মিলিত প্রথম শ্রেণির ম্যাচের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা নিয়েও তাই আমির-আব্বাস-শাদাবদের বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো আইরিশ ব্যাটিং লাইন-আপ। তবে অভ্যাস হয়ে গেলে নাকি মানুষ কতো কঠিন কিছু করতে পারে, ফলো-অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান এড জয়েস ও উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের ব্যাটিংয়ে দেখা গেল তারই প্রতিচ্ছবি। পাকিস্তানকে আবার ব্যাটিং করাতে এখনও ১১৬ রান করতে হবে তাদের, তবে দিনশেষে ৬৪ রানে শূন্য উইকেটের স্কোরটাই হতে পারে অনেক বড় অনুপ্রেরণার নাম!
নিজেদের প্রথম টেস্টে এর আগে ইনিংস ব্যবধানে হারের অভিজ্ঞতা আছে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের। প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং যেন আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে যাচ্ছিল সে পথেই। ডাবলিনে প্রায় ভুলতে বসা একটা অভিজ্ঞতা ফিরিয়ে আনলো পাকিস্তান, ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডকে ফলো-অন করানোর পর এই প্রথম এমন কিছু করলো তারা!
প্রথম ইনিংসে ‘অভিশপ্ত’ ৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল আয়ারল্যান্ড। আব্বাসের বলে এলবিডব্লিউ জয়েস ও অ্যান্ডি ব্যালবার্নি, আমিরের বলে উড়ে গেল পোর্টারফিল্ডের অফস্টাম্প। জয়েস অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন, আব্বাসের বলটা পড়েছিল লেগস্টাম্পের বাইরে। আব্বাসের তৃতীয় শিকার নিয়াল ও’ব্রায়েন, তিনিও এলবিডব্লিউ, অবশ্য এ উইকেট নিয়ে সন্দেহ নেই।
২০ বলে ১৭ রান করে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দেওয়া পল স্টার্লিং-ও বিলিয়ে এলেন উইকেট, ফাহিম আশরাফকে কাট-পুলের দ্বিধায় ভুগে তুললেন খাড়া ক্যাচ। ড্রাইভ পছন্দ করছিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন, আমিরকে সেটাই করতে গিয়ে কাভারে ইমাম-উল-হকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে করতে পেরেছেন ৪০- আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোর।
গ্যারি উইলসন ও বয়েড র্যাঙ্কিন নবম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করে আরেকটু লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন। এই দুইজনের আগেই স্টুয়ার্ট থম্পসন ও টাইরন কেনকে বিদায় করেছে শাদাব খানের লেগস্পিন। তিনি ফিরে এসেই শেষ করেছেন আইরিশ ইনিংস, ব্যাট-থাই প্যাডে শর্ট লেগে ধরা পড়েছেন টিম মারটাঘ। তার আগে আব্বাসের চতুর্থ শিকার র্যাংকিন, কাট করতে গিয়ে হয়েছেন আন্ডার-এজড। শেষ পর্যন্ত সঙ্গীহীনতায় ভুগলেন উইলসন, ৩৩ রানে থাকলেন অপরাজিত।
দ্বিতীয় নতুন বলের প্রথম ওভারেই মারটাঘের ইনসুইংয়ে এলবিডব্লিউ শাদাব, মোহাম্মদ আমিরকেও ইন-অ্যাওয়ে সুইংয়ের সেট-আপে ফিরিয়েছেন তিনি। এই দুইজনের মাঝে ফাহিম আশরাফ স্টুয়ার্ট থম্পসনের দারুণ ডেলিভারিতে কট-বিহাইন্ড হয়ে মিস করেছেন সেঞ্চুরি। তবে আটে নামা তার ৮৩ রান যথেষ্টর চেয়ে বেশিই ভুগিয়েছে আইরিশদের। ৯ উইকেট নিয়েই ইনিংস ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
অবশ্য তৃতীয় দিনশেষে আইরিশ প্রতিরোধের সঙ্গে পাকিস্তানের আরেকটা দুশ্চিন্তা আমিরকে নিয়েও। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছেড়ে ফিরে এসেছিলেন, তবে ওভার অসম্পূর্ণ রেখেই আবার উঠে যেতে হয়েছে তাকে।