রোমেরোর জায়গায় খেলবেন কে?
গোলরক্ষকের পজিশন নিয়ে এমনিতেই কিছুটা সংশয় ছিল আর্জেন্টিনার। দলের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো ক্লাবের হয়ে নিয়মিত খেলেন না। তবে এর আগের দুই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার গোলবারের নিচে থাকায় রোমেরোর ওপরই ভরসা রেখেছিল আর্জেন্টিনা। রোমেরোর অভিজ্ঞতায় নির্ভার ছিলেন হোর্হে সাম্পাওলিও। কিন্তু গতকাল হুট করেই ইনজুরিতে পড়ে শেষ হয়ে গেছে রোমেরোর বিশ্বকাপ, তাই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ মিশনেও। এখন ছক বদলাতে হবে কোচকে, নতুন গোলরক্ষককেও মানিয়ে নিতে হবে তাড়াতাড়ি, না হলে এই জায়গাটাই কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে আর্জেন্টিনার জন্য। নতুনদের বাজিয়ে দেখার মতো আর্জেন্টিনা কোচ পাচ্ছেন মাত্র দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ।
ফ্রাঙ্কো আর্মানি
ফুটবলে নাম কামিয়েছেন কলম্বিয়ায়। মেডিইনের পাওয়ারহাউজ অ্যাটলেটিকো নাসিওনালে খেলেছেন ৮ বছর। কলম্বিয়ান এক নারীকে বিয়ে করে সেখানকার নাগরিকত্বের জন্যও আবেদন করেছিলেন ফ্রাঙ্কো আর্মানি। কলম্বিয়ার জাতীয় দল থেকেই আগে সাড়া পেয়েছিলেন। কিন্তু কী মনে করে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন আর্মানি। পরে জানিয়েছিলেন জন্মভূমি আর্জেন্টিনার হয়েই খেলতে চান। আর্মানির সেই স্বপ্নটা যদি এভাবে সত্যি বনে তা কে জানত। একজন খেলোয়াড়ের ইনজুরি খুলে দিতে পারে আরেকজনের সম্ভাবনার দুয়ার। আর্মানির ক্ষেত্রেও হয়েছে সেটাই রোমেরো বাদ পড়ার আর্জেন্টিনার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দেওয়া খবর অনুযায়ী আর্মানিই হতে যাচ্ছেন এক নম্বর গোলরক্ষক।
৩১ বছর বয়সী গোলরক্ষক এই মৌসুমে যোগ দিয়েছেন রিভার প্লেটে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। বড় মঞ্চে কেমন করবেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তাই বিশ্বকাপ পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে দুর্দিনে একটা ছোট পরিসংখ্যান মনে করে আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা আপাতত আশায় বুক বাঁধতে পারেন। সবশেষ যে দুইবার রিভারপ্লেটের গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার গোলবারের নিচে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই দুইবারই বিশ্বকাপ নিয়ে ফিরেছিল লা আলবিসেলেস্তেরা। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক ছিলেন ফিওল, আর ১৯৮৬ তে পাম্পিডো।
উইলফ্রেড ক্যাবেয়ারো
ক্যারিয়ার সায়াহ্নে এসে অবশেষে উইলফ্রেড ক্যাবেয়ারোর আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে নামার সৌভাগ্য হয়েছে গত মার্চে। অভিষেকে ইতালির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে কোনো গোল হজম করেননি। এর কয়েকদিন পর শুরুর একাদশে নামেননি, কিন্তু রোমেরোর ইনজুরির কারণে প্রথমার্ধেই স্পেনের বিপক্ষে নামতে হয়েছিল ক্যাবেয়ারোকে। ওই ম্যাচটা ক্যাবেয়ারোর গেছে দুঃস্বপ্নের মতো। তিনি নামার পর আর্জেন্টিনা গোল হজম করেছিল ৪টা, তাতে তার দায়ও কম ছিল না। ৩৬ বছর বয়সে এসে তার নিয়মিত ম্যাচ খেলার ফিটনেস আছে কি না সেই প্রশ্নও জ্বলজ্বল করছে বড় করে। ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা ক্যাবেয়ারো কাটিয়েছেন স্পেনে, মালাগার হয়ে। লা লিগার অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হয়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিয়েছিলেন। গতবার ক্লাব বদলে হয়েছেন চেলসির- কিন্তু ইংল্যান্ডে তার সময়টা কেটেছে সাইডবেঞ্চে বসেই। গেল মৌসুমে থিবো কোর্তোয়ার ইনজুরির কারণে এফএ কাপ, লিগ কাপ বাদেও প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল ক্যাবেয়ারোর। সেই ম্যাচগুলোতেই নজর কাড়ার মতো তেমন কিছু করতে পারেননি।
নাহুয়েল গুজমান
৩৫ সদস্যের দলে ছিলেন, কিন্তু ২৩ জনের চূড়ান্ত দলে বাদ পড়েছিলেন। আবার ভাগ্যের ফেরে ডাক পেলেন আর্জেন্টিনা দলে। বাকি দুই গোলরক্ষকের চেয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নাহুয়েল গুজমানেরই বেশি। সবমিলিয়ে মোট ৬ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। মেক্সিকোর ক্লাব টাইগ্রিসে খেলা ৩২ বছর বয়সী গোলরক্ষক সংখ্যাপূরণ করতে রয়েছেন দলে- সেটা বললে খুব বেশি বিপদ হওয়ার কথা নয়।