অপেক্ষা শেষ হলো চিলির
লিওনেল মেসির বাড়ানো বলটা খুঁজে নিলো এজেকিয়েল লাভেজ্জিকে। দূর থেকে এসে বলটা জালে জড়ানোর চেষ্টা করলেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। কিন্তু বলটা জড়াতে পারলেন সাইডনেটে, সঙ্গে সঙ্গেই বেজে গেল নির্ধারিত সময়ের শেষ বাঁশি।
ওই মুহূর্তে গোল হলে সেটা রূপকথার একটা সমাপ্তিই হতে পারত। কিন্তু ফুটবল তো আর সবসময় সেরকম হয় না। প্রাপ্তির চেয়ে কখনও হতাশাটা বেশি, আনন্দের চেয়েও কখনও বড় হয়ে ওঠে বেদনা। সেকারণেই আর্জেন্টিনার গল্পটা হয়ে থাকে এত কাছে তবু এত দূরের। মেসিকে তাই ক্লাবের হয়ে সবকিছু জিতেও অপেক্ষায় থাকতে হয় দেশের হয়ে কিছু অর্জনের। কাগজে কলমে বিশ্বের সেরা আক্রমণ নিয়েও তাই একটা গোলের জন্য হাপিত্যেশ করে মরতে হয়। আর্জেন্টিনা কাগজে কলমে কোপার সেরা দল হয়েও, প্যারাগুয়েকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে উঠেও তাই পুড়তে হয় হতাশায়। সানচেজের পানেনকা পেনাল্টির সঙ্গে সঙ্গে সান্তিয়াগোর এস্তাদিও মনুমেন্টাল ফেটে পড়ে কোরাসে, স্লোগানে স্লোগানে হয়ে ওঠে মুখর।
হিগুয়েইনের পেনাল্টিটাই বোধহয় দেখিয়ে দিয়েছে, এই ম্যাচ আর্জেন্টিনার নয়। পেনাল্টিটা বারের অনেক বাইরে দিয়ে মেরেছেন, পরে বানেগার দুর্বল পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়েছেব ক্লদিও ব্রাভো। আর রোমেরো একবারও ঠেকাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময় গোলশুন্য ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে জিতেই কোপা আমেরিকা চিলির।
ইতিহাসে কখনও বড় কোনো ট্রফি জেতা হয়নি চিলির। চারবার ফাইনালে উঠেও কোপার ট্রফিটা হাতে নেওয়া হয়নি। নিজেদের দেশে টুর্ণামেন্ট; সানচেজ, ভিদালদের সোনালী প্রজন্মের এটাই ছিল সেরা সুযোগ। হোর্হে সামপাওলির দল দেখিয়ে দিয়েছে, তারা যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে। ম্যাচের অনেকটা সময় লাগাম তাদের হাতেই ছিল। রোমেরো কয়েকটা দারুণ সেভ না করলে আর শেষদিকে সানচেজ দুইটি সুযোগ নষ্ট না করলে চিলি জিতে যেতে পারত নির্ধারিত সময়েই।
সুযোগ আর্জেন্টিনাও পেয়েছিল। হিগুয়েইনের ওই মিসটা তো আছেই, প্রথমার্ধেও ব্রাভোও দারুণ একটা হেড ঠেকিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মেসি যেন এদিন নিজেকে হারিয়ে খুঁজলেন, আগুয়েরো পেলেন না গোল। চিলির রক্ষণও খেলেছে দারুণ। ভাগ্যও যেন আর্জেন্টিনার পক্ষে ছিল না, নইলে বড় আসরে আরও একবার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে ডি মারিয়া নেমে যাবেন কেন? বদলি লাভেজ্জিকে পুরো ম্যাচেই খুঁজে পাওয়া যায়নি, আগুয়েরোর জায়গায় হিগুয়েইনকে নামানো নিয়েও উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন।