বার্সার শিরোপার বদলে জাতীয় দলে কিছু জিততে চাই : মেসি
বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর ৩২ শিরোপা জিতে ফেলেছেন, কিন্তু দেশের হয়ে শিরোপাখরা ঘোচাতে পারেননি এখনও। কাছাকাছি গিয়েও খালি হাতে ফেরত এসেছেন কয়েকবার। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শিরোপা জেতার আকাঙ্ক্ষার কথা এর আগেও বলেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ সামনে রেখে এবারও জানালেন সেই আশার কথা। বললেন, প্রয়োজনে বার্সায় জেতা যে কোনো একটা শিরোপার বিনিময়ে হলেও জাতীয় দলের হয়ে শিরোপাখরা ঘোচাতে চান তিনি।
"বিশ্বকাপ জেতা আমার আর আমার দলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, আমার আর আমার দলের জন্য। আমাদের আর আমাদের দেশের মানুষের স্বপ্ন একটাই।"
"বিশ্বকাপে দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা বিশাল ব্যাপার। বার্সেলোনার একটা শিরোপার বিনিময়েও যদি জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা জেতা যেত, তাহলে সেটাই করতাম আমি। ক্লাবের হয়ে আমি এই শিরোপাগুলো আবারও জিততে চাই। তবে জাতীয় দলের হয়ে একটা হলেও শিরোপা আমি জিতে যতে চাই।"
"আমি জানি বিশ্বজয়ী হতে পারলে সেটা আলাদা সম্মানের। এটার সঙ্গে কোনোকিছুর তুলনা হয় না।"
জার্মানির কাছে এক্সট্রা টাইমে হারার পর কোপা আমেরিকার দুই ফাইনালেই আর্জেন্টিনা হেরেছিল টাইব্রেকারে। আর্জেন্টিনার সক্ষমতা নিয়েই প্রশ উঠে গিয়েছিল তাতে। বাছাইপর্বও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পার হয়েছে আর্জেন্টিনার। এরপর প্রীতি ম্যাচে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে স্পেনের কাছে হার- সবমিলিয়ে এবারের আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতার দৌড়ে বাকি বোর দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে আছে কিছুটা। গ্রুপটাও সহজ হয়নি এবার বিশ্বকাপে। মেসি নিজেও স্বীকার করেছেন সেটা, তবে দিনশেষে নিজের দলের ওপরই ভরসা রাখছেন তিনি।
"আমাদের ড্রটা বেশ কঠিন হয়েছে। আইসল্যান্ড যে কোনো দলের সঙ্গেই লড়াই করতে পারে- সেটা তারা প্রমাণ করেছে। ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ড খুবই ভালো, আর নাইজেরিয়ার সঙ্গে খেলা সবসময়ই কঠিন।"
"যদিও এই দলটার ওপর আমার ভরসা আছে। আমাদের অভিজ্ঞ আর যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে। আমরা ট্রেনিংয়েও ভালো করছি। কিন্তু আমাদের ঘিরে এগুতে হবে। আমরা এমন কোনো বার্তা পাঠাতে চাই না যে আমরাই বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছি কারণ আমরা সেরা। আসলে সেটা আমরা না। এই মুহুর্তে বিশ্বকাপে ফেভারিট ব্রাজিল, জার্মানি, স্পেন।"
১৩ বছর বয়সে আর্জেন্টিনা থেকে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন মেসি। চাইলে এতোদিনে স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জিতে ফেলতে পারতেন। কিন্তু স্পেনের বদলে তিনি বেছে নিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে।
"আমার এক বন্ধু আমাকে একবার বলেছিল যে স্পেনের হয়ে খেললে এতদিনে আমি বিশ্বকাপজয়ী হয়ে যেতে পারতাম। আমি যদি স্পেনের জার্সিই গায়ে দিতাম, তাহলে এতো অনুভূতিটা কখনই এক হত না। আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জিততে পারলে সেটা হবে পুরোপুরি আলাদা এক অনুভূতি।"
এসব বলতে বলতে খানিকটা স্মৃতিচারণ করলেন মেসি, "তখন আমার বয়স ছিল ১৬। আমি কিছুটা সিরিয়াস ছিলাম, আর বাকিটা মজা করেই খেলতাম। স্পেনের অনুর্ধ্ব-১৭ দলের কোচ আমাকে তার দলে নিয়ে ফেলেছিল। ফিনল্যান্ডে যখন এই ঘটনা ঘটেছিল তখন ফ্যাব্রিগাস আমার সতীর্থ। কোন দেশের দেশের হয়ে খেলতে চাই সেটা নিয়ে আমার মনে অবশ্য কখনই সন্দেহ ছিল না।"