১৩ হাজার টাকা জার্সির মজুরি দিনপ্রতি ১৯০ টাকা!
একটা রেপ্লিকা জার্সির দাম প্রায় ১৩ হাজার টাকা! টাকার অংকটা শুনে চক্ষু চড়কগাছ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের রেপ্লিকা জার্সিকে বলা হচ্ছে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে দামি জার্সি। কিন্তু এই দামি জার্সি বানানোর কারিগর যারা, সেই বাংলাদেশি তৈরি পোশাক কর্মীদের প্রতিদিন বেতন দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৯০ টাকা!
ইংলিশ পত্রিকা দ্যা টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বেশ কিছু অবাক করা তথ্য। পত্রিকাটির বরাতে পোশাককর্মীদের নিয়ে কাজ করা দ্যা ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন নামের সস্থাটি বলছে, জার্সি তৈরি করা পোশাককর্মীদের যে বেতন হওয়া হয়, সেটা রীতিমত অমানবিক, ‘ বিশ্বের সবচেয়ে কম বেতন দেওয়া দেশগুলোর মাঝে বাংলাদেশ অন্যতম। মাসিক ৫৩০০ টাকা বেতনে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনোমতে খেয়ে পরে দিন কাটাচ্ছে শ্রমিকরা। তাদের বেতন মৌলিক চাহিদা পূরণের ধারেকাছেও নেই। এরকম কর্মীদের দিয়ে জার্সি তৈরি করে নাইক অনেক বেশি লাভ করছে। ফুটবল ভক্তরাই জার্সি বেশি ব্যবহার করেন। তাদের উচিত নাইককে এই পুরো পদ্ধতির পরিবর্তন আনার জন্য চাপ দেওয়া।’
ব্যাপারটি নজরের এসে ইংল্যান্ড সরকারেরও। ইংল্যান্ড সরকারের ক্রীড়া বিষয়ক কমিটির সদস্য সিমন হার্ট বলছেন, ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে জার্সি তৈরি ব্যাপারে জবাবদীহি করতে হবে, ‘কীভাবে জার্সি তৈরি হচ্ছে, পুরো ব্যাপারটা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। এটা ফুটবল ভক্ত ও আমাদের সবারই চাওয়া।’
নাইকির এক মুখপাত্র অবশ্য টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, কোম্পানির নীতিমালা মেনেই জার্সি তৈরি করিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশের ন্যূনতম বেতন কাঠামো মেনেই দেওয়া হচ্ছে শ্রমিকদের বেতন। এতে আন্তর্জাতিক বেতন কাঠামো কিংবা নৈতিকতার কোনো লঙ্ঘন ঘটছে না। টেলিগ্রাফ বলছে, মূল বেতন কমই, জার্সি তৈরি করা শ্রমিকদের ওভারটাইমও খুবই নগণ্য। বহু শ্রমিকই তাদের পরিবার পরিজনদের গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে খরচ চালাতে না পেরে।
হ্যারি কেনদের জার্সি বিশ্বব্যাপী বিক্রি হবে। হাজার হাজার টাকায় সেই জার্সি কিনবেন ভক্তরা। কিন্তু সেই জার্সির কারিগরদের জীবন কি এভাবেই কেটে যাবে?