• বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ ২০১৫
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : শূন্য আর মিরপুরের সাকিব

    ২২ গজের সেলুলয়েড : শূন্য আর মিরপুরের সাকিব    

     

    ছবির পরে ছবি চলে নাকি তৈরী হয় সিনেমা। ক্রিকেট ম্যাচও তো তাই। টুকরো টুকরো অসংখ্য ছবি জন্ম নেয় যেখানে। ২২ গজ আর সবুজ ওই উদ্যানের ছবিগুলোকে যদি ধরা যেত সেলুলয়েডে! 

     

     

    শুন্য, শুন্য এবং শুন্য

     

    কাগিসো রাদাবার হ্যাটট্রিকে তিনজন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। দলের রান তখন ১৭, কিন্তু খাতা খোলেননি তামিম ইকবাল। তারপর লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি ৩৯ তম হ্যাটট্রিক, অভিষেকে দ্বিতীয় (প্রথমটি তাইজুল ইসলামের)।

     

    তবে তিনজন ব্যাটসম্যানেরই শূন্য রানে আউট হওয়ার এটি মাত্র চতুর্থ ঘটনা। ২০১১ সালে লাসিথ মালিঙ্গার বলে তিন কেনিয়ান তন্ময় মিশ্র, পিটার অনগন্ডো ও শেম এনগোচি আউট হয়েছিলেন রানের খাতা না খুলেই। ২০১০ সালে পারভিজ মাহরুফও রানের খাতা খুলতে দেননি ভারতের তিন ব্যাটসম্যান- রবীন্দ্র জাদেজা, প্রভিন কুমার ও জহির খানকে।

     

    আর প্রথম ঘটনাটিও বাংলাদেশের সঙ্গেই। ২০০৩ বিশ্বকাপে চামিন্দা ভাসের বলে আউট হয়েছিলেন হান্নান সরকার, মোহাম্মদ আশরাফুল ও এহসানুল হক। সেটি ছিল আবার ইনিংসের প্রথম ওভার। প্রথম তিন বলেই আউট হয়েছিলেন এ তিনজন। চতুর্থ বলে সানোয়ার হোসেন চার মারার আগে স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছিল, ০/৩ (০.৩)।

     

    সে বিশ্বকাপের হতাশার একটা প্রতিচ্ছবিই তো ছিল এ স্কোর!

     

     

    এ মোর আঙ্গিনা!

     

    ইমরান তাহিরের বলে ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপ দিয়ে বের হয়ে গেল বল। সাকিব দৌড়ে নিলেন তিন রান। দ্বিতীয় রান নেওয়ার পরই আরও একটা মাইলফলক ছুঁলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। মিরপুরে ওয়ানডেতে ২০০০ রান পূর্ণ করলেন তিনি। একই ভেন্যুতে ২০০০ বা তার বেশী রান করার এই কীর্তি আছে সাকিবের আগে আর পাঁচজনের। তালিকার শীর্ষে সনাথ জয়াসুরিয়া। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে করেছেন ২৫১৪ রান। একই ভেন্যুতে কুমার সাঙ্গাকারারও আছে ২১৫৬ রান। ইনজামাম-উল-হক ও সাঈদ আনোয়ারেরও এই কীর্তি একই ভেন্যুতে। শারজায় ইনজির রান ২৪৬৪, আনোয়ারের ২১৭৯। আর এমসিজি-তে রিকি পন্টিংয়ের রান ২১০৮।

     

    এই কীর্তি ছোঁয়ার কাছাকাছি আছেন তামিম ইকবাল (১৯১৯) ও মুশফিকুর রহিম (১৮৩২)। বলাই বাহুল্য, দুজনের এই রানই মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।

     

     

    মাহমুদুল্লাহর ফেরা

     

    চোটের কারণে ভারত সিরিজের পুরোটাই মিস করেছিলেন। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে প্রথম ওয়ানডেতে ফিরলেন। তবে ফেরাটা সুখকর হলো না মোটেও। তাঁকে আউট করেই যে হ্যাটট্রিক পূরণ করলেন কাগিসো রাদাবা! পরে বল হাতে দুই ওভারে ১৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। কেবল মাশরাফির বলে আমলার ক্যাচটি তালুবন্দী করে ম্যাচে অবদান রাখতে পেরেছেন। বিশ্বকাপের পর চার ওয়ানডেতে মাহমুদুল্লাহর রান ৪, ১৭, ৫, ০। উইকেট নেই একটিও।

     

    বিশ্বকাপের সেই মাহমুদুল্লাহকে ফিরে পাওয়াটাই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল! তিনি নিজেও নিশ্চয়ই সেটিই চান!

     

     

    রিভিউ, প্লিজ!

     

    ইনিংসে ইমরান তাহিরের প্রথম বল। লেগ স্ট্যাম্পে পিচ করে বাইরের দিকে যাওয়ার আগে প্যাডে লাগলো সাকিব আল হাসানের। দক্ষিণ আফ্রিকানদের আবেদনে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার মাইকেল গফ। রিভিউ চাইলেন অধিনায়ক হাশিম আমলা। হকআই দেখালো, বল স্ট্যাম্পের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। আফ্রিকার রিভিউ খরচ হয়ে গেল।

     

    ইমরান তাহিরের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বল। মিডল স্ট্যাম্পে ফুল লেংথে পিচ করা বলটা সাকিব ডিফেন্ড করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন, লাগলো প্যাডে। এবার আফ্রিকানদের আবেদনে সাড়া দিলেন আম্পায়ার শরাফউদ্দৌলা। রিভিউ চাইলেন সাকিব। হকআইয়ে আম্পায়ারস কল, মানে সাকিব আউট-ই হলেন! বাংলাদেশের রিভিউ খরচ হলো এবার!

     

     

    মিল

     

    বাংলাদেশ খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে, বাংলাদেশেই। আর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ এর সঙ্গে খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এ পর্যন্ত তিনটি ম্যাচই হয়েছে একই দিনে। ঢাকার দুটি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হারলেও ডারবানে জিতেছিল বাংলাদেশের যুবারা। তবে মিরপুরের প্রথম ওয়ানডের দিনে পিটারমারিজবার্গে নেমেছিল মেহেদী হাসানের দল। মাশরাফির দল এই ম্যাচেও হেরেছে, ৩য় যুব ওয়ানডেতে হেরেছে মেহেদীর দলও!

     

    মিরপুরে বাংলাদেশের রানরেট ছিল ৪.৩৮, পিটারমারিজবার্গে এই ৪.৩৮ হারে রান তুলেই অবশ্য জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকার যুবারা!