নাইজেরিয়াকে হারিয়ে এক ধাপ এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া
গ্রুপের প্রথম ম্যাচ ড্র হওয়ায় এই দুই দলের ম্যাচটা ভিন্ন গুরুত্ব বহন করছিল। গুরুত্বপুর্ণ সেই ম্যাচটা জিতে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে গেল সবার আগে। নাইজেরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ডি গ্রুপের শীর্ষে এখন ক্রোয়াটরাই।
কালিনিনগ্রাদে নাইজেরিয়াকে হারাতে তেমন বেগ হয়নি ক্রোয়েশিয়ার। তবে ভাগ্যটাও ভালো ছিল ক্রোয়াটদের। ৩২ মিনিটে আত্মঘাতী গোল দিয়েই নিজেদের সর্বনাশ ডেকে এনেছিল নাইজেরিয়া। এর আগ পর্যন্ত ক্রোয়াটদের সঙ্গে লড়াইটা ভালো ভাবেই চালিয়ে যাচ্ছিল সুপার ইগলরা। কিন্তু কর্নার থেকে রেবিচ আর মাঞ্জুকিচের হেডটা ঠেকাতে গিয়ে উলটো নিজের জালেই বল ঢুকিয়ে দেন এতেবো। ইভান পেরিসিচ আর আন্দ্রে ক্রামারিচ ডিবক্সের বাইরে থেকে দুইবার শট করেছিলেন প্রথমার্ধে। তবে নাইজেরিয়ার ১৯ বছর বয়সী গোলরক্ষক ফ্রান্সিস উজোহোর পরীক্ষা নিতে পারেননি কেউই। ক্রামারিচ পরে হেডও করেছিলেন ডিবক্সের ভেতর থেকে, সেটাও গেছে বাইরে দিয়ে। অন্যপ্রান্তে দানিয়েল সুবাসিচও প্রথমার্ধে অলস সময় পার করেছেন। প্রথমার্ধে দুই দলের কেউই অন টার্গেটে শট নিতে পারেননি। ২০১৪ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া-মেক্সিকো ম্যাচের পর বিশ্বকাপে এমন ঘটনা ঘটল এবারই প্রথম।
পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ক্রোয়াটদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে চেয়েছিল নাইজেরিয়া। কিন্তু তাতে টলেনি ক্রোয়াট রক্ষণ। নাইজেরিয়ানরাও নিশ্চিত গোলের সুযোগ করতে পারেননি, কিন্তু ম্যাচে টিকে ছিল তারা। ভিক্টর মোজেস প্রথমার্ধে দারুণ খেলেছেন, দ্বিতীয়ার্ধে অতোটা ভালো না করলেও তিনিই ছিলেন ক্রোয়াটদের ভয়ের কারণ। কিন্তু ইতিহাস বদলাতে পারেননি মোজেসরা। বিশ্বকাপের শেষ যে ৬ ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েছে নাইজেরিয়া, তার একটাও তাদের জেতা হয়নি। সেই ধারাটা অব্যাহত থাকলো আবারও।
রক্ষণের ভুলেই ম্যাচটা ৭১ মিনিটে ফসকে যায় নাইজেরিয়ার কাছ থেকে। কর্নার থেকে মাঞ্জুকিচকে মার্ক করছিলেন ট্রুস্ট একং। সেই কাজ করতে গিয়েই মাঞ্জুকিচকে আটকে রাখতে গিয়ে ক্রোয়াটদের পেনাল্টি দিয়ে বসেন একং। নিয়মিত পেনাল্টি টেকার লুকা মদ্রিচ ভুল করেননি। উজোহাকে ভুল পথে পাঠিয়ে স্পটকিক থেকে গোল করে জয়টা তখনই প্রান্ত নিশ্চিত করেছেন ক্রোয়াট অধিনায়ক। মনে করে দিয়েছেন ছোট একটা স্মৃতিও। ১৯৯৮ সালে রোমানিয়ার বিপক্ষে ডেভর সুকার পেনাল্টি থেকে গোল করেছিলেন। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর, বিশ্বকাপে পেনাল্টি থেকে ক্রোয়াট জার্সিতে গোল করেননি কেউই। মদ্রিচ হয়ে গেছেন দ্বিতীয় খেলোয়াড়।
দুই দশক আগের ক্রোয়াটদের স্বপ্নের মতো যাওয়া সেই বিশ্বকাপের সঙ্গে আরও একটা ব্যাপার মিলে গেছে। ২০ বছর পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে ক্রোয়াশিয়া। শেষদিকে বদলি মাতেও কোভাচিচ দারুণ এক সুযোগ নষ্ট না করলে ডালিচের দল আরও বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারত। তবে ২০ বছর পর বোধ আরও একটা ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর দিকেই এগুচ্ছে তারা। ১৯৯৮ সালের পর তো আর গ্রুপপর্বের বাঁধাই পার করা হয়নি ক্রোয়েশিয়ার। এমন মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করার কথা নয় তাদের! ৫ দিন পর আর্জেন্টিনার সঙ্গে ম্যাচটা জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে সেটা।