নাভাস-প্রাচীর জয় করলেন দুর্দান্ত কোলারভ
এক পাশে চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন কেইলর নাভাস। সার্বিয়ার আক্রমণ আছড়ে পড়েছিল একের পর এক, রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিচ্ছিলেন সবকিছু। কিন্তু আলেকজান্ডার কোলারভের ফ্রিকিকটা এতোটাই দুর্দান্ত ছিল, সেটা আর পারলেন না ঠেকাতে। কোস্টারিকাকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল সার্বিয়া, তবে গোলের ব্যবধানটা বড় হতে পারত অনায়াসেই।
সেজন্য কিছুটা দায় নিতে হবে তাদের স্ট্রাইকার মিত্রোভিচকে। অন্তত দুবার নাভাসকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। এর মধ্যে ৪৯ মিনিটে একবার নাভাস নিজে ঠেকিয়ে দিয়েছেন, ওয়ান টু ওয়ানে শটটা ঠিকঠাক করতে পারেননি মিত্রোভিচ। আর শেষ দিকে পেনাল্টি বক্সে ঢুকে শট নিতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছেন ভারসাম্য।
তবে ম্যাচের প্রথম পরিষ্কার সুযোগটা পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়াই। ১১ মিনিটে কর্নার থেকে ফাঁকায় বল পেয়েও জিয়ানকার্লো গনজালেজ। হেড রাখতে পারেননি পোস্টে। তার আগে আরও একবার তাঁর হেড সরাসরি চলে গিয়েছিল সার্বিয়া গোলরক্ষকের কাছে।
তবে শুরুর বেসামাল অবস্থাটা গুছিয়ে খুব দ্রুতই থিতু হয় সার্বিয়া। ম্যাচের লাগামটা নিয়ে নেয় নিজেদের হাতে, আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে সেটা নিয়েছেন সের্জেই মিলিনকোভিচ-সাভিচ। এবারের বিশ্বকাপে আলাদা করে চোখ ছিল লাৎসিওর এই তরুণ প্লেমেকারের ওপর। প্রথম ম্যাচেই জানান দিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে মাতামাতি বাড়াবাড়ি নয়। ৪৩ মিনিটে দারুণ এক ওভারহেড কিকে গোল করেই ফেলেছিলেন, সেটা ঠেকিয়ে দিয়েছেন নাভাস। রেফারি যদিও তা অফসাইদ দিয়েছেন, পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে আসলে তা অফসাইড ছিল না।
তবে সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও প্রথম গোলের উপলক্ষটা সার্বিয়াকে এনে দিয়েছেন মিত্রোভিচই। ৫৬ মিনিটে তাঁকে ফাউল করা হলে ফ্রিকিক পায় কোলারভ। দারুণ ফ্রিকিকটা ঠেকানোর সাধ্য ছিল না নাভাসের, এই বিশ্বকাপে এটা ফ্রিকিক থেকে তৃতীয় গোল। অথচ এর আগের বিশ্বকাপে ফ্রিকিক থেকে সাকুল্যে গোলই হয়েছিল তিনটি।
এরপর কোস্টারিকা বল ধরে রাখলেও পরিষ্কার সুযোগ পায়নি। বরং ৭৫ মিনিটে সার্বিয়াই গোল পেয়ে গিয়েছিল ডান দিক থেকে। ডুসান টাডিচের ক্রসটা আঙুল দিয়ে ছুঁতে পেরেছিলেন নাভাস, আর তাতেই হাত ছোঁয়া দূরত্বে থেকেও বলটা জালে জড়াতে পারেননি কস্টিচ। শেষ দিকে জল ক্যাম্পবেল নামার পর কোস্টারিকার খেলার গতি বাড়লেও গোল করার জন্য তা আর যথেষ্ট ছিল না। গত বিশ্বকাপের স্বপ্নযাত্রার পর এবার শুরুটা তাই ভুলে যাওয়ার মতোই হলো কোস্টারিকার।