সুইডেনকেও জয় উপহার দিল ভিএআর
এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট কার? কুইজের উত্তরটা একটু প্যাঁচানোই। কোনো খেলোয়াড় নন, ভিআরের সহায়তায় এসেছে সবচেয়ে বেশি গোল। যেমন ১২ বছর পর বিশ্বকাপে ফিরে সেটি পেল সুইডেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ১-০ গোলের জয়টা এসেছে ভিডিওর কল্যাণেই!
ম্যাচের স্কোরলাইন অবশ্য চিত্রটা বোঝাতে পারছে না পুরোপুরি। সুইডেনের জয়ের ব্যবধানটা অনায়াসেই আরও বেশি বড় হতে পারত। পুরো ম্যাচে শেষ কয়েক মিনিট বাদ দিলে বল পজেশন, গোলে শট সবই তাদের বেশি কিছু। সেটা হয়নি তাদের নিজেদের ব্যর্থতায় আর দক্ষিণ কোরিয়া গোলরক্ষক চো-ইউন হোর জন্য।
২০ মিনিটেই যেমন তা হলো। সুইডেনের মার্কাস বার্গ এমন একটা মিস করলেন, যেটা ভুলতে সময়ই লাগবে তাঁর। বক্সের ভেতর অরক্ষিত বল পেয়ে গিয়েছিলেন বার্গ, কয়েক গজ দূর থেকে জালটা প্রায় হাত ছোঁয়া দূরত্বে। কিন্তু বার্গের শটটা অবিশ্বাস্যভাবে ঠেকিয়ে দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক চো-হিউন উ। এক মিনিট পরেই ওলা তয়ভনেন পেয়ে যান আরেকটি দারুণ সুযোগ, কিন্তু এবার তাঁর হেড একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
শুরু থেকেই সুইডেনের পায়েই বেশি ছিল পজিশন, সেট পিসে উচ্চতার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ভোগাতে চেয়েছে কোরিয়ানদের। ২৯ মিনিটে সেই সেট পিস থেকেই আরও একবার হুমকি সুইডেনের। কিম ইয়ং গুন আজ দারুণ খেলেছেন, রক্ষণে চীনের (পড়ুন কোরিয়ার) প্রাচীর হয়ে ছিলেন। মার্কাস বার্গের শটটা প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে শরীর দিয়ে ঠেকিয়ে গোলবঞ্চিত করেছেন দলকে।
৪৩ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন বার্গ, এবার গোলরক্ষককে একা পেয়ে শটও করেছিলেন, কিন্তু কঠিন কোণ থেকে পোস্টে রাখতে পারেননি। এবারও কৃতিত্ব দিতে হবে গোলরক্ষক চো-ইউনকে।
বিরতির পর ৫১ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া, কিন্তু বক্সের ভেতর ফ্রি হেড পেয়েও জে সি কুর হেড একটুর জন্য চলে গেছে পোস্ট ঘেঁষে।
শেষ পর্যন্ত কোরিয়া ভুলটা করে বসল ৬৪ মিনিটে, সুইডেন পেয়ে গেল উদযাপনের সুযোগ। কোরিয়ার বক্সে বলের জন্য একসঙ্গেই দৌড় দিয়েছিলেন কোরিয়ার কিম মিন উ এবং সুইডেনের ভিক্টর ক্লাসেওন। কিন্তু ক্লাসেওন আগে যান বলের কাছে, মিন উ তাঁকে ফেলে দেন। শুরুতে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি, পরে রঙ্গমঞ্চে আবার ভিএআর। রিপ্লে দেখে রেফারি নিশ্চিত হয়েছেন, ওটা পেনাল্টিই ছিল। এই বিশ্বকাপে আরও একবার ভিএআর বদলে দিল সিদ্ধান্ত। দেশের হয়ে চারবারের একবারও পেনাল্টি মিস করেননি অধিনায়ক আন্ড্রিয়াস গ্রাঙ্কভিস্ট, এবারও করলেন না।
শেষ মুহূর্তে অবশ্য সমতা ফেরানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল কোরিয়া, যোগ করা সময়ে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও গিয়েছিল। কিন্তু হোয়াং হে-চানের হেড কয়েক গজ দূর থেকে চলে যায় বাইরে। সুইডেন ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পর নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেল প্রথমবার, সেই সঙ্গে একটা বার্তাও দিল জার্মানি ও মেক্সিকোকে।