খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই নকআউট পর্বে সুয়ারেজের উরুগুয়ে
দেশের হয়ে মাইলফলকটা ‘মনে রাখার’ মতো করতে পছন্দ করেন সব সময়। অভিষেক ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন, ৫০তম ম্যাচে বলিভিয়ার সঙ্গে গোল পেয়েছিলেন। উরুগুয়ের হয়ে শততম ম্যাচে গোল পাবেন না তাও কী হয়? লুইস সুয়ারেজ গোল করেই সেটা উদযাপন করলেন, সৌদি আরবকে উরুগুয়ে হারাল ওই এক গোলেই। ১৯৫৪ সালের পর এই প্রথম উরুগুয়ে জয় পেল গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে। সেই সঙ্গে রাশিয়াকে সঙ্গে করে উঠে গেল নকআউট পর্বে, গ্রুপের শেষ ম্যাচটা এখন শুধুই শীর্ষস্থান নির্ধারণী।
২৩ মিনিটের ওই গোল ছাড়া পুরো ম্যাচটা আসলে ভুলে যাওয়ার মতোই। উরুগুয়ে আগের ম্যাচের চেয়েও বিবর্ণ ছিল আজ, মধ্যমাঠে নিয়ন্ত্রণ বলতে কিছুই ছিল না। সৌদি আরব বরং মধ্যমাঠ দাপিয়ে খেলেছে, আগের ম্যাচে রাশিয়ার সঙ্গে দুঃস্বপ্নটাও ভুলেছে অনেকখানি। তবে রক্ষণ ও মধ্যমাঠ ভালো খেললেও গোলের সামনে এসে বার বার খেই হারিয়ে ফেলেছে এশিয়ার দলটি। উরুগুয়ের রক্ষণে ফুটো করার মতো যথেষ্ট গোলাবারুদ ছিল না তাদের।
২৩ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটা পেয়ে যান সুয়ারেজ। ভুলটা অবশ্য সৌদি রক্ষণ আর গোলরক্ষকেরই। কর্নারে সুয়ারেজকে ঠিকমতো মার্ক করেনি রক্ষণ, আর গোলরক্ষক বেরিয়ে এসেছিলেন লাইন ছেড়ে। জায়গামতো পেয়ে যাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি সুয়ারেজ, ডান পায়ের শট জড়িয়ে দিয়েছেন জালে। দেশের হয়ে নিজের ৫২তম গোল পেয়ে গেছেন।
দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল পেলেন সুয়ারেজ। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সঙ্গে পেয়েছিলেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। বিশ্বকাপে এটি সুয়ারেজের ষষ্ঠ গোল, উরুগুয়ের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিন বিশ্বকাপে গোল পেলেন।
কিন্তু এরপর খোলসে গুটিয়ে গেল উরুগুয়ে, গা ছাড়া দিয়ে দুইটি সুযোগও পেয়ে গিয়েছিল সৌদি আরব। ২৯ মিনিটে সমতা প্রায় নিয়েই এসেছিল সৌদিরা। বাঁ দিক আসা ক্রসটা ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন হাতান বাবরি, কিন্তু কয়েক গজ দূর থেকে তাঁর নেওয়া শট চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। তার আগে ২৫ মিনিটেও এই বাবরি দূর থেকে শট করেছিলেন বাঁ পায়ে। কিন্তু ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে।
বিরতির পর পরও উরুগুয়ের গোল করার আগ্রহ খুব একটা দেখা যায়নি। এর মধ্যেও ৫১ মিনিটে সুয়ারেজ ফ্রিকিক থেকে আরেকটি গোল পেয়েই গিয়েছিলেন, সৌদি ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিকবদল করে তাঁর শট চলে যাচ্ছিল জালে। তবে সৌদি গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিয়েছেন তা। ৬২ মিনিটে সানচেজের নেওয়া হেড একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে, উরুগুয়ে হারায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। তবে ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয়ার্ধের সেরা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন এডিনসন কাভানি। কিন্তু সৌদি গোলরক্ষক আল ওয়াইস তাঁর শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন দারুণভাবে। শেষ দিকে সৌদি আরব চেষ্টা করেছিল একটু, কিন্তু মুসলেরার হাতে দুয়েকবার বল তুলে দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারেনি। ১-০ গোলের ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচটা শেষ হলো সৌদিদের বিদায় দিয়ে।