পেরুর হৃদয় ভেঙে ফ্রান্সকে শেষ ষোলতে নিয়ে গেলেন এমবাপ্পে
কিলিয়ান এমবাপ্পে জন্মেছিলেন ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জেতারও প্রায় পাঁচ মাস পর। সেই এমবাপ্পে আজ ইতিহাস গড়লেন। বিশ্বকাপ বা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গড়লেন গোল। ফ্রান্স যেন বার্তা পেল, সঠিক প্রজন্মের ওপরই তাদের ফুটবলের ভার!
পেরু বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিল ৩৬ বছর পর। একটা প্রজন্ম যেন ভুলেই গিয়েছিল, দেশ বিশ্বকাপে খেললে কেমন অনুভূতি হয়! সেই পেরুর বিশ্বকাপ আশা টিকে রইল মাত্র পাঁচদিন। এ প্রজন্ম পেল অন্যরকম হতাশা!
এমবাপ্পের একমাত্র গোলে হৃদয় ভেঙেছে পেরুর, ডেনমার্কে পর ফ্রান্সের সঙ্গেও একই ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে তারা। আর অস্ট্রেলিয়ার পর পেরুকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে চলে গেছে ফ্রান্স।
বাঁচা-মরার ম্যাচে আক্রমণের শুরুটা করেছিল পেরুই, সফলতা আসেনি। এরপর ফ্রান্স শুরু করেছিল আক্রমণ, সেবারও হয়নি গোল। মাঝে খানিকটা সময় ফ্রান্সকে চাপে রাখলো পেরু, তবে প্রথমার্ধে পরের গল্পটা শুধুই ফরাসী আক্রমণের।
৩৪ মিনিটে বক্সের বাঁদিক থেকে জিরুর ক্রস রদ্রিগেজের পায়ে ডিফলেকটেড হয়ে ফাঁকি দিয়েছে গ্যালেসেকে, খানিক আগেই পেরুভিয়ান গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে ব্যর্থ হওয়া এমবাপ্পের সামনে এবার ফাঁকা পোস্ট, ফ্রান্সকে ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন তিনিই। হয়ে গেছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। ১২তম “টিনএজার” হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করলেন ১৯ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড।
ফ্রান্স এরপর আরও গোল পেতে পারতো, তাদেরকে হতাশ করেছেন গ্যালেসে। গ্রিযমানের কাছ থেকে পাওয়া পাসে হার্নান্দেজের স্ট্রাইক আটকে দিয়েছিলেন গ্যালেসে, জিরুর থেকে ফিরতি বলটা পেয়ে ওপর দিয়ে মেরেছেন হার্নান্দেজ। গ্যালেসে এর আগেও করেছিলেন আরেকটি দারুণ সেভ, পগবার শটে। দারুণ সেভে পেরুকে হতাশ করেছেন ১০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা হুগো লরিসও। কুয়েভার কাট থেকে পাওয়া বলে পাওলো গেরেরোর শট লরিস আটকে দিয়েছেন নীচু হয়ে। প্রথমার্ধে পেরুর সবচেয়ে দারুণ সুযোগ ছিল এটিই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চেষ্টা করে গেছে পেরু, তবে বক্সের বাইরে থেকেই। ৬০ মিনিটে ফ্লোরেস, ৬৭ মিনিটে আদভিনচুলার শট গেছে গোলবারের ওপর দিয়েই। তবে এর আগেই গোলের সবচেয়ে কাছে গিয়েছিল পেরু, আকুইনোর ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শটটা বেঁকে এসে লাগলো পোস্টে। আরেকটু বাঁকলেই হুগো লরিসেরও করার থাকতো না কিছুই! বক্সের ভেতরে ঢুকে সবচেয়ে বড় হুমকিটা তৈরি করেছিলেন আদভিনচুলা-ফারফান মিলে, সফল হয়নি সেটাও। ৮৮ মিনিটে ফ্রি-কিকটা সরাসরি লরিসের হাতে মেরেছেন গেরেরো।
ফ্রান্স দ্বিতীয়ার্ধে সবচেয়ে ভাল সুযোগটা পেয়েছিল ৮২ মিনিটে, ডেম্বেলের শটটা অবশ্য গেছে বাইরে দিয়েই। এরপর জিরুর শটটা শুরুতেই ট্যাকল করে আটকে দিয়েছেন ট্রউকো।
তবে ফ্রান্সকে শেষ পর্যন্ত আর আটকানো হলো না পেরুর। উলটো বিদায় নিতে হলো তাদেরকেই!
ফ্রান্স একাদশ
লরিস, পাভার্দ, ভারান, উমতিতি, হার্নান্দেজ, কান্তে, পগবা (এনজোনজি), এমবাপ্পে (ডেমবেলে), গ্রিযম্যান (ফেকির), মাতুইদি, জিরু
পেরু একাদশ
গ্যালেসে, রদ্রিগেজ, ট্রউকো, রামোস, আদভিনচুলা, কুয়েভা (দিয়া), কাররিলো, ইয়োতুন, ফ্লোরেস, আকুইনো, গেরেরো