আইসল্যান্ড স্বপ্নে নাইজেরিয়ার ধাক্কায় জমে উঠলো গ্রুপ ডি
একদিকে ইউরোপিয়ান ভাইকিংস, আরেকদিকে আফ্রিকান সুপার ইগল। একদিকে ভাইকিং ক্ল্যাপ, আরেকদিকে নাম না জানা মুদ্রার সব নৃত্য। আইসল্যান্ড নতুন এক রুপকথার অপেক্ষায়, আর প্রথম ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে মশগুল নাইজেরিয়া। ইতিহাস নাইজেরিয়ার পক্ষে, আর নতুন ইতিহাসের অপেক্ষায় আইসল্যান্ড। আর্জেন্টিনাকে ক্রোয়েশিয়া হারানোর পর এই ম্যাচের দিকে নজর বেড়ে গিয়েছিল আরও, যেখানে শেষ হাসি নাইজেরিয়ারই। দ্বিতীয়ার্ধে আহমেদ মুসার জোড়া গোলে আইসল্যান্ডকে বিদ্ধস্ত করেছে নাইজেরিয়া। গ্রুপ ডি-এর লড়াই তাই এখন আরও জমজমাট।
বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া এর আগে জিতেছিল পাঁচটি ম্যাচ, পাঁচটিই ইউরোপিয়ান দেশের সঙ্গে। আইসল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে সুপার ইগলদের ইতিহাসই ছিল তাদের পক্ষে। সেই রেকর্ড ধরে রাখতে এসে নাইজেরিয়া গড়লো আরেকটি রেকর্ড, প্রথমার্ধে অন-টার্গেটে কোনও শটই নেই! ২০১৪ সালে আলজেরিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার পর কোনও দলের এমন নিস্ক্রিয় থাকার ঘটনা এটাই প্রথম।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন ভোল পাল্টালো চমকের মতো। শুরুতেই নাইজেরিয়ার আক্রমণ, ৪৬ মিনিটে প্রথম অন-টার্গেটে শট। জেতার ইচ্ছায় থাকা আইসল্যান্ডও রক্ষণে রাখলো ফাটল। নাইজেরিয়া সুযোগ নিল কাউন্টার অ্যাটাকের। ৪৯ মিনিটে আইসল্যান্ডের থ্রো থেকে নাইজেরিয়ার কাউন্টার-অ্যাটাক, ডানদিক দিয়ে এগিয়েছেন মোসেস। তার ক্রসে প্রথমে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন আহমেদ মুসা, এরপর বলকে জড়িয়েছেন জালে।
উড়েছেন মুসা, উড়েছে নাইজেরিয়া/ এএফপি
এনদিদির বাইরে থেকে নেওয়া শট দারুণভাবে সেভ করেছেন এরপর হালডরসন, মোসেসের ডানদিক থেকে নেওয়া শট বা বালোগুনের হেডে লক্ষ্যভেদ হয়নি অবশ্য শেষ পর্যন্ত। ৭৪ মিনিটে দূর থেকে নেওয়া মুসার শট তো বিদ্ধ হলো ক্রসবারেই! তবে নাইজেরিয়া দ্বিতীয়ার্ধে ছিল দুর্দান্ত, ঠিক পরের মুহুর্তেই মুসা করলেন নিজের ও নাইজেরিয়ার দ্বিতীয় গোল। নাইজেরিয়ার কাউন্টার অ্যাটাকে বাঁদিকে বালোগান বাড়িয়েছিলেন দারুণ বল, আরনাসনকে ঘুরিয়ে গোলবার পেয়েছেন গোলকিপারকে ছাড়াই। স্কোর করতে ভুল হয়নি তার।
প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ তৈরির চেষ্টায় ছিল আইসল্যান্ড, সফল হয়নি কোনোটিই। সেরা সুযোগটি ভাইকিংসরা পেয়েছিল ৪৪ মিনিটে, সিগুর্ডসনের ডানদিক থেকে নেওয়া কিকটা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন ফিনবোগাসন।
তবে সিগুর্ডসনের পেনাল্টি মিস ছাড়িয়ে গেছে সেই আক্ষেপকেও। ৮০ মিনিটে ভিএআর থেকে পেনাল্টি পেয়েছিল আইসল্যান্ড, বক্সের ভেতর ফিনবোগাসনকে ফাউল করেছিলেন এবুএহি। রেফারির বাঁশির পরও কিছুক্ষণ যেন স্নায়ু সামলানোর চেষ্টা করলেন সিগুর্ডসন, তবে শেষ পর্যন্ত মারলেন বাইরে দিয়েই। এক নাইজেরিয়ান পর্যন্ত এসে সান্ত্বনা দিয়ে গেলেন তাকে!
আইসল্যান্ডের রুপকথার আশাটাও যেন ধাক্কা খেল সেভাবেই। আর ইউরোপিয়ানদের বিপক্ষে রেকর্ডটা অটলই থাকলো আফ্রিকান সুপার ইগলদের।