• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    সুইসদের ফিরে আসার গল্পটা লিখলেন শাকিরি

    সুইসদের ফিরে আসার গল্পটা লিখলেন শাকিরি    

    ম্যাচের প্রায় শেষ মুহূর্ত, খেলা ১-১ গোলে সমতা। দারুণ এক থ্রু বল থেকে হাফলাইনের ওপরে বল পেলেন জের্দান শাকিরি। দুর্দান্ত এক দৌড়ে মার্কার টসিচকে ছিটকে ফেললেন, গোলরক্ষক স্টকোভিচও কিছু করতে পারলেন না। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও সার্বিয়াকে ২-১ গোলে হারাল সুইজারল্যান্ড। রাশিয়া বিশ্বকাপে একমাত্র দল হিসেবে প্রথমে গোল হজম করেও জিতে আসল ভ্লাদিমির পেটকোভিচের দল।

     

    কালিনিনগ্রাদে ম্যাচের শুরু থেকেই সুইসদের চেপে ধরেছিল সার্বিয়া। ৫ মিনিটেই লিড নিয়ে নিতে পারত তারা। মিডফিল্ডার সের্গেই মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচের ক্রস থেকে স্ট্রাইকার আলেকজান্ডার মিত্রোভিচের হেড দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন সুইজারল্যান্ড গোলরক্ষক ইয়ান সমার। তবে এর মিনিটখানেক পর ঠিকই লিড নেয় ম্লাদেন ক্রিস্টাসিচের দল। ডানপ্রান্তে দুসান তাদিচের ক্রস থেকে চমৎকার এক হেডে গোল করেন মিত্রোভিচ। ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলে পেটকোভিচের দল। মাঝমাঠে ভুল পাসিং, বোঝাপড়ার অভাবে সার্বিয়ার জন্য খেলাটা বেশ সহজই করে দেন শাকা-জেমাইলিরা। খাপছাড়া সুইসদের বিপক্ষে অবশ্য ব্যবধান দ্বিগুণের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সার্বিয়া।

    মাঝমাঠে মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচকে কড়া মার্কিংয়ে রেখে সার্বিয়ার আক্রমণের ধারটা কমিয়ে দেন গ্রানিত শাকা। লাভও হয় তাতে। ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরতে থাকে সুইজারল্যান্ড। দেখা মেলে সেই গোছানো পাসিং। এমনই এক আক্রমণে ৩১ মিনিটে আরেকটু হলেই সমতায় ফিরত সুইসরা। জেমাইলির সুযোগসন্ধানী থ্রু পাস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান স্ট্রাইকার হারিস সেফেরোভিচ। কিন্তু সার্বিয়ার গোলরক্ষক স্টইকোভিচের দুর্দান্ত সেভে আর সমতায় ফেরা হয়নি পেটকোভিচের দলের। উলটো প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তাদিচের দুর্দান্ত ভলি গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে গেলে ব্যবধান আর দ্বিগুণ করা হয়নি সার্বিয়ার।

     

     

    দ্বিতীয় গোলের বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করার মাশুলটা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দিতে হয়েছে সার্বিয়াকে। ৫৩ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে আগুনে এক শটে দলকে সমতায় ফেরান শাকা। দেশের জার্সিতে করা ১০ গোলের ৫টিই করেছেন বক্সের বাইরে থেকে। দ্বিতীয়ার্ধের বাকিটা সময় আক্রমণ বেশি ছিল সুইসদেরই। ৫৯ মিনিটে লিডটাও নিয়ে নিতে পারত তারা। কিন্তু জের্ডান শাকিরির বাঁকানো শট সুইস বারপোস্টে প্রতিহত হলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় সার্বিয়া। এর মিনিট ছয়েক পর সুইস ডিফেন্ডার রনাল্ড জুবা ডিবক্সে মিত্রোভিচকে ফেলে দিলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। এমনকি ভিডিও রেফারির সাহায্য নেওয়ারও দরকার মনে করেননি। রেফারির এমন সিদ্ধান্তে স্বভাবতই অসন্তোষ প্রকাশ করেন কোচ ক্রিস্টাসিচ। অপেশাদারি ব্যবহারের জন্য সতর্কও করে দেন চতুর্থ রেফারি।

    ৮৪ মিনিটে ইভানোভিচের ক্লিয়ারেন্স গোলের বাইরে দিয়ে চলে গেলে এবং ৮৫ মিনিটে গাব্রানোভিচের মিস হতাশায়ই ভোগায় সুইসদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শাকিরির গোলে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে সুইসরা। শাকার মতো তিনিও আলবেনিয়ান ইগল উদযাপন করে জানিয়ে দিয়েছেন, অতীতটা ভুলে যাননি তারা।  শেষ ম্যাচে এরই মাঝে বিদায় নেওয়া কোস্টারিকার বিপক্ষে হার এড়ালেই শেষ ষোলতে যাবে সুইজারল্যান্ড।তিন ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৪, ব্রাজিলেরও তাই। ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে সার্বিয়া।

     

    ছবিঃ এএফপি।