জার্মানির পর দক্ষিণ কোরিয়াকেও পাত্তা দিল না মেক্সিকো
শিন তাই-ইয়ংয়ের চোখেমুখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার আভাস। অবশেষে একটা গোল দক্ষিণ কোরিয়ার! হিউ-মিং সন উল্লসিত, তবে উদযাপনের সময় কই তার! যোগ করা ৫ মিনিট সময়ের বাকি আছে মাত্র ২ মিনিট, এমন সময়ে দারুণ এক গোলের পরও তাই দক্ষিণ কোরিয়ানদের উদযাপনটা আটকে গেল ওখানেই, এখনও যে একটা গোল শোধ করা বাকি। বাকি দুই মিনিটে অঘটন ঘটতে দিল না মেক্সিকো, জার্মানিকে ২-০ গোলে হারানোর পর রস্তভ-ন-দন্যুতে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে তারা হারিয়েছে ভেলার পেনাল্টি ও হার্নান্দেজের রেকর্ড গোলে। অবশ্য টানা দুই ম্যাচ জিতেও নিশ্চিত নয় মেক্সিকোর পরের রাউন্ড, দক্ষিণ কোরিয়া প্রায় বিদায় নিয়েও তাই নেয়নি এখনও!
জার্মানির বিপক্ষে আক্রমণে দুর্দান্ত থাকা মেক্সিকো এদিন ছিল রক্ষণে বেশ মনযোগী। কাউন্টার-অ্যাটাক থেকে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া, তবে মেক্সিকোর রক্ষণ বা ওচোয়ার কাছে আটকে গেছে সেসব। মেক্সিকো অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল ২৫ মিনিটেই, সুইডেনের মতো এদিনও পেনাল্টি হজম করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
গুয়ার্দাদোর ক্রস আটকে গিয়েছিল শূন্যে থাকা ইয়াংয়ের হাতে, রেফারি ভিএআরের সাহায্য ছাড়াই সরাসরি দিয়েছেন পেনাল্টি। এ নিয়ে ১৪টি পেনাল্টি হলো রাশিয়া বিশ্বকাপে, গত বিশ্বকাপের থেকে যে সংখ্যা এখনই একটি বেশি! বেশ সময় নিয়ে কিক করতে হয়েছে কার্লোস ভেলাকে, তবে ধৈর্য্যচূতি ঘটেনি তার। গোলরক্ষকের বাঁয়ে বল ঢুকাতে ভুলও হয়নি ভেলার।
উল্লাসের পাশে বেদনা/এএফপি
৬৬ মিনিটে গিয়ে লিড ডাবল করেছেন হাভিয়ের হার্নান্দেজ, প্রথম ফুটবলার হিসেবে মেক্সিকোর হয়ে ৫০তম গোল করলেন তি নি। দক্ষিণ কোরিয়ার থ্রো থেকে পাওয়া বলে লোজানো এগিয়েছেন বেশ গতিতে, হার্নান্দেজকে দেওয়া আগে তিনিই এগিয়েছিলে অনেকখানি। জ্যাং মার্কিংয়ে ছিলেন, তবে কাছের পোস্টে মারার আগে তাকে ফাঁকি দিয়েছেন হার্নান্দেজ।
এর আগে একটা ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন তিনিই। দূর থেকে নেওয়া কিকটা ব্লক হলেও ছোট-বক্স থেকে নেওয়া শটটা দারুণভাবে আটকেছিলেন গোলরক্ষক জো। এরপর মোরেনোর কাছ থেকে পাওয়া লোজানোর ভাল একটা বলও গোলের মুখ দেখেনি মেক্সিকোর, কি ব্লক করেছেন দারুণভাবে।
১৩ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া, বলতে গেলে আচমকাই। কাউন্টার অ্যাটাকে হয়াং বল পেয়ে দিয়েছিলেন ইয়ং লিকে, তবে তিনি শট নেওয়ার আগেই সামনে হাজির লোজানো। তবে সেটাকেও ছাপিয়ে গেছে ৭৫ মিনিটে পাওয়া সুযোগটা। একটু চাপে থাকা ওচোয়ার কাছ থেকে বল পেয়েছিলেন হিউ মিন সন, তবে মেক্সিকোর কড়া রক্ষণে আটকা পড়ে গেছেন তিনি, কির কাছে থেকে বলটা কেড়ে নিয়েছেন ওচোয়াই।
অনেক সুযোগ তৈরি করেও গোল না পাওয়ার আক্ষেপটা দূর করেছেন সন, তবে ততক্ষণে যে দেরি হয়ে গেছে বড্ড! গোলটা হয়ে থেকেছে সান্ত্বনা হিসেবেই। বিশ্বকাপে টানা আট ম্যাচ হারের বৃত্ত থেকেও তাই বেরুতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেও তাই-ইয়ং পাননি স্বস্তি!