আইসল্যান্ডের বিদায়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ক্রোয়েশিয়া
প্রথমার্ধের ১২ মিনিটে একবার, দ্বিতীয়ার্ধের ১২ মিনিটে আরেকবার। ভাইকিং ক্ল্যাপ দিয়ে আইসল্যান্ড বিশ্বকাপেও জানিয়েছিল তাদের উপস্থিতি। তবে আপাতত শেষ তাদের প্রথম বিশ্বকাপ অভিযান। ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে বাঁচা-মরার ম্যাচে হেরে গেছে তারা। রস্তভ-ন-দন্যুতে ক্রোয়াটদের “দ্বিতীয় একাদশ”-এর সঙ্গে সমতায় ফিরেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি আইসল্যান্ড, ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপকে বিদায় বলতে হয়েছে তাদের। আগের ম্যাচ থেকে ৯টি পরিবর্তন এনেও ক্রোয়েশিয়াকে গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে বাদেল ও পেরিসিচের গোল। গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচই জিতলো ক্রোয়াটরা, বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসে টানা তিন ম্যাচ জেতার ঘটনাও এটাই প্রথম তাদের।
গ্রুপ ডি-এর হিসাব নিকাশ বেশ জটিল হলেও আর্জেন্টিনার মতো আইসল্যান্ডের জন্যও মূলশর্তটা ছিল সহজ- জিততেই হবে। ক্রোয়েশিয়ার হিসাব ছিল শুধুই গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তারা নেমেছিল আগের ম্যাচ থেকে নয়টি পরিবর্তন নিয়ে।
আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া- দুই অর্ধে দুইদল খেলেছে বিপরীত রকমের খেলা। প্রথমার্ধে বেশ এলোমেলো ছিল ক্রোয়েশিয়া, আর বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরী করেও ফিনিশ করতে পারেনি আইসল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে জ্বলে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া, এবার বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে আইসল্যান্ড। তবে দুই অর্ধেই কাউন্টার অ্যাটাকগুলোতে সেভাবে সুবিধা করতে পারেনি আইসল্যান্ড, গতির সঙ্গে ছিল কম্পোজিশনেরও অভাব।
প্রথমার্ধে সবচেয়ে সেরা সুযোগটা পেয়েছিলেন গুনারসন, যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে। গুন্ডমুন্ডসনের বাড়ানো বলে দারুণ স্ট্রাইক করেছিলেন গুনারসন, বাঁকা হয়ে যেটা ঢুকছিল গোলে। কালিনিচ ঠেকিয়ে দিয়েছেন সেটা। এর আগে আরও দুইটি সুযোগ পেয়েছিল আইসল্যান্ড। ৪০ মিনিটে ফিনবোগাসনের শট লেগেছে বাইরের জালে। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বিয়ার্নসনের সেট পিস নিচু হয়ে ঠেকিয়েছেন কালিনিচ।
দ্বিতীয়ার্ধে আইসল্যান্ডকে চেপে ধরেছিল ক্রোয়েশিয়া, ৫৩ মিনিটে তাদের ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন বাদেল। ঠিক আগমুহুর্তেই ক্রসবারে লেগেছিল তার শট, এবার ঠিকই করেছেন লক্ষ্যভেদ। মদ্রিচের ক্রস বাউন্সের ওপর ঠেকিয়ে মেরেছেন হাফ-ভলি, হ্যালডরসনের কোনও সুযোগই ছিল না। আইসল্যান্ড এরপর ফিরে এসেছে পেনাল্টিতে, ৭৬ মিনিটে।
বিয়ার্নসনের ক্রস লেগেছিল লভরেনের হাতে। নাইজেরিয়ার সঙ্গে যেদিক মেরে মিস করেছিলেন সিগুর্ডসন, এবার স্পট-কিকে সফল হয়েছেন সেখানেই, টপ কর্নারে। ওদিকে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার ম্যাচে সমতা, আরেকটি গোল পারতো আইসল্যান্ডকে আরেকটি রূপকথা এনে দিতে।
৭২ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগও পেয়েছিলেন বিয়ার্নসন, তবে কাজে লাগাতে পারেননি সেটা। ফিনবোগাসনের ক্রস ছোট-ডি এর ভেতর পেয়েও ভেতরে ঢোকাতে পারেননি, মেরেছেন বাইরেই। আইসল্যান্ডের স্বপ্নটাও কার্যত শেষ হয়ে গেছে তখনোই।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আরেকটি গোল করে আইসল্যান্ডের সে স্বপ্নেরই এপিটাফ লিখেছে ক্রোয়েশিয়া। বক্সের বাঁদিকে বল পেয়ে টপ কর্নারে ঢুকিয়েছেন পেরিসিচ, হ্যালডরসনের হাতও আটকাতে পারেননি সেটা।
পরের রাউন্ডে ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক, ১ জুলাই।
ক্রোয়েশিয়া একাদশ
কালিনিচ, করলুকা, জেদভা, কালেতা-কার, ইভারিচ, কোভাচিচ, মদ্রিচ, বাদেল, পেরেসিচ, ক্রামারিচ, পিয়াকা
আইসল্যান্ড একাদশ
হ্যাল্ডারসন, সেভেসন, ইনগাসন, সিগুর্ডসন, ম্যাগনাসন, গুডমুনসন, পিয়ার্নাসন, গিলফি সিগুর্ডসন, গানারসন, হালফ্রেডসন, ফিনবোরাসন