আমাদের বিশ্বকাপ এখন থেকে শুরু: মেসি
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টিনা কোচ হোর্হে সাম্পাওলিও কথা বলেছিলেন একই সুরে। “বিশ্বকাপ জিততে দরকার আর ৫টা ম্যাচে জয়, পরেরদিন থেকেই শুরু আমাদের লড়াই।“ নাইজেরিয়াকে হারিয়ে প্রথম জয়টা পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ স্বপ্ন তাই এখনও টিকে থাকল তাদের। অধিনায়ক লিওনেল মেসিও ম্যাচের পর কথা বললেন সাম্পাওলির মতো করেই। আগের কয়েকদিন কোচ আর খেলোয়াড়দের মধ্যে বিবাদ নিয়ে অনেক কথা ছাপা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু একটা জয় বোধ আবারও এক সুতোয় গেঁথেছে আর্জেন্টিনাকে। আত্মপ্রত্যয়ী মেসির কথায়ও সেই আভাস।
“আমাদের বিশ্বকাপ আজ থেকে শুরু হলো। যে কোনো মূল্যে আমাদের একটা জয় দরকার ছিল। এখন থেকেই আমাদের নতুন বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করতে হবে”, নাইজেরিয়াকে ২-১ গোলে হারানোর পর বলেছেন মেসি।
দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতেই যে এতো বেগ পেতে হবে সেটা অপ্রত্যাশিতই ছিল মেসির কাছে। তবুও আনন্দেই ভাসছেন তিনি, প্রথম রাউন্ড থেকে আর্জেন্টিনার বিদায় নেওয়াটা অন্যায্য হত বলেও মনে করছেন তিনি, “এভাবে পরের রাউন্ডে যাওয়া সত্যিই রোমাঞ্চকর। প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল না। আমরা জানতাম, আমরাই জিতব। কিন্তু ব্যাপারটা যে এতো কঠিন হবে, সেটা আশা করিনি।"
বাঁচা মরার ম্যাচে সব সমীকরণ যখন আর্জেন্টিনার বিপরীতে ছিল মেসির ভরসা ছিল তখন ঈশ্বরের ওপর। ঈশ্বর আর্জেন্টিনার সঙ্গে থাকবেন সেটা জানাই ছিল মেসির, “আমি জানতাম ঈশ্বর আমাদের সঙ্গেই আছেন। তিনি আমাদের এমন অবস্থায় ফেলে যাবেন না!”
"নিজেদের সবটুকু দিয়ে আজ যারা খেলেছে আর আর্জেন্টিনা থেকেও যারা সমর্থন যুগিয়ে গেছে সবাইকে ধন্যবাদ। আর্জেন্টিনার জার্সিটা সবকিছুর ওপর।"
নাইজেরিয়ার সঙ্গে জিততে শেষ পর্যন্ত লড়তে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। দুই দলই খেলছে সমান তালে। তাই ভাগ্যটাও যে আর্জেন্টিনার সহায় ছিল সেটা জানেন মেসিও, "ম্যাচটা যে কেউই জিততে পারত। প্রথমার্ধে আমরাই বল দখলে এগিয়ে ছিলাম। পেনাল্টির পর আমরা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম, আমাদের আক্রমণেও গতি বেড়েছিল। ভাগ্য ভালো ছিল যে আমরা গোলটা পেয়ে গেছি।"
দলের দুঃসময়ে গোলটা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটাও নিয়ে কথা বলেছেন, "শেষ কয়েকটা ম্যাচের ফল আমাদের দমিয়ে দিয়েছিল। আমরা খুবই অগোছালো অবস্থায় ছিলাম। তাও ভালো, আমরা শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ করেছি।"
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে যার গোলে ম্যাচ জিতেছে আর্জেন্টিনা সেই মার্কোস রোহোই সবার আগে কথা বলেছেন। ম্যাচের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রোহো তার গোল উৎসর্গ করেছেন পরিবার আর দলকে, "ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে হারের পর আমরা আমাদের ঐক্য আরও বেড়েছিল। এই গোলটা আমার পরিবার আর দলকে উৎসর্গ করতে চাই। তারাই এটার প্রাপ্য। ভামোস আর্জেন্টিনা!"
ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায়, সাম্পাওলি ধন্যবাদ দিয়েছেন সমর্থকদের। গতকাল টিম হোটেলের সামনে জড়ো হয়েছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা। নেচে গেয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গকেই তারা বানিয়ে ফেলেছিল এক টুকরো আর্জেন্টিনা। রাশিয়ার মাঠটাকে সমর্থকেরা বানিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার ঘরের মাঠ। সেটাই আর্জেন্টিনাকে জিততে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে পরের চ্যালেঞ্জটা যে আরও কঠিন সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচটা সাম্পাওলির কাছে ফাইনালের মতোই। "আমরা এমন একটা দলের সঙ্গে খেলতে যাচ্ছি যারা বিশ্বকাপের দাবিদার। আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। ফ্রান্স এমন একটা দল যাদের একাধিক খেলোয়াড় যারা একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।"