কলম্বিয়া ও কার্ডের হলুদ বিষে নীল সেনেগাল
কলম্বিয়ার জার্সির রঙটা হলুদ। সামারায় এই হলুদ ম্লান হয়ে গিয়েছিল প্রায়।
৭৪ মিনিটে মিনার গোলে খাদের কিনার থেকে ফিরে এলো কলম্বিয়া, শুধু ফিরলো না, পরের রাউন্ডে গেল গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন হয়েই! আর এই হলুদই বিষ হয়ে গেল সেনেগালের জন্য। আজকের ম্যাচে কলম্বিয়ার কাছে এক গোলে হেরেও সেনেগাল যেতে পারতো পরের রাউন্ডে, তবে জাপানের কাছে তারা পিছিয়ে পড়লো ফেয়ার-প্লে পয়েন্টে! যে ফেয়ার-প্লে পয়েন্টের বড় নিয়ামক হলুদ কার্ড, সেখানেই জাপানের চেয়ে দুই পয়েন্টে পিছিয়ে তারা! বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো নিয়ামক হয়ে দাঁড়ালো ফেয়ার-প্লে। আর ১৯৮২ সালের পর এই প্রথমবার নক-আউট পর্বে নেই কোনও আফ্রিকান দল।
গ্রুপ এইচ-এ এক পোল্যান্ড ছাড়া সুযোগ ছিল বাকি তিন দলেরই। তবে সেই হিসাব-নিকাশই বদলে যেতে থাকলো ক্ষণে ক্ষণে। জাপান ওদিকে পিছিয়ে পড়লো পোল্যান্ডের কাছে, এদিকে তখনও সমতা। ফলটা শেষ পর্যন্ত তেমন থাকলে বাদ পড়ছে কলম্বিয়া, পরের রাউন্ডে যাচ্ছে সেনেগাল।
৭৪ মিনিটে সেই হিসাবটাই বদলে গেল চোখের পলকে। কুইন্তেরোর কর্নারের ক্রসে থেকে লাফিয়ে উঠে বুলেট গতির হেড করলেন মিনা, উচ্ছ্বাসে ভাসালেন কলম্বিয়াকে। এ বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটা করলেন তিনিই। বদলে গেল সমীকরণ, এবার বাদ পড়ার কিনারে চলে গেল সেনেগাল। শেষ পর্যন্ত হলো সেটাই, গ্রুপ-চ্যাম্পিয়ন কলম্বিয়া, বিদায় সেনেগাল!
অথচ ১৭ মিনিটে পেনাল্টি প্রায় পেয়েই গিয়েছিল সেনেগাল। সাদিও মানেকে পেছন থেকে ট্যাকেল করেছিলেন ডেভিডসন সানচেজ, তবে রেফারির সিদ্ধান্ত বদলে গেছে ভিএআরের পর। বলটায় পা লাগাতে পেরেছিলেন সানচেজ, খলনায়ক হতে গিয়ে বনে গেছেন নায়ক।
প্রথমার্ধে সে অর্থে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনও দল, ৩০ মিনিটে হামেস রদ্রিগেজকে হারিয়ে বরং ধাক্কাই খেয়েছে কলম্বিয়া। “চোটগ্রস্ত” তাকে তুলে নিয়েছেন কোচ হোসে পেকারম্যান, হতাশ রদ্রিগেজ ডাগ-আউট ছেড়ে চলেই গিয়েছিলেন ড্রেসিংরুমে।
সেই রদ্রিগেজ পরে ফিরে এসেছেন, পেকারম্যানের পাশে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের উৎসাহও দিয়ে গেছেন। আর সেনেগাল হাপিত্যেশ করে মরেছে শুধু একটি গোলের জন্য। ৭২ মিনিটে একটা ধাক্কাও খেয়েছে তারা, চোট পেয়ে উঠে গেছেন সাবালি। শেষ মুহুর্তে গিয়ে সেনেগাল রীতিমতো মগ্ন প্রার্থনায়, একটি গোলের জন্য! যদি হয় একটি মিরাকল!
সেটা হয়নি। কলম্বিয়া ও কার্ড- দুই হলুদের মিশ্রিত বিষে শেষ হয়ে গেছে সেনেগালের বিশ্বকাপ।