• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    'জিততে না চাওয়ার' ম্যাচে জিতল বেলজিয়ামই

    'জিততে না চাওয়ার' ম্যাচে জিতল বেলজিয়ামই    

    কালিনিনগ্রাদে ম্যাচ শুরুর আগে থিবো কোর্তোয়া আর গ্যারি কেহিল হাত মেলালেন। দুই অধিনায়ক ক্লাব সতীর্থ, আগে থেকেই চেনা, হাত মেলানোর দৃশ্য দেখেই বোঝা গেল সেটা। কিন্তু  দুই দলের শুরুর একাদশ দেখে আর হিসাব মেলানো গেল না। আগের দুই ম্যাচে নামানো প্রায় পুরো দলটাকেই বিশ্রামে পাঠিয়েছেন দুই দলের কোচ। সবমিলিয়ে ১৭ টি পরিবর্তন, যার আবার ১৫ জনই খেলেন প্রিমিয়ার লিগে। রবার্তো মার্টিনেজ বলেছিলেন গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটা উৎসবের। বিরতির সময় দুই দলের খেলোয়াড়দের হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকতে দেখেও সেটাই মনে হলো। কিন্তু কোর্তোয়া জানিয়েছিলেন সম্মানের জন্য হলেও এই ম্যাচটা জিততে চান তিনি। হয়ত দুইদলের কেউই জিততে চায়নি ম্যাচটি। কিন্তু কোর্তোয়ার চাওয়াটাই পূরণ হয়েছে শেষে। আদনান ইয়ানুজাইয়ের গোলে বেলজিয়াম ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ১-০ ব্যবধানে। তাতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে উঠেছে বেলজিয়াম।


    ম্যাচের আগে দুইদলের পয়েন্ট ছিল সমান। গোলব্যবধানও একই। কিন্তু ফেয়ার প্লে-তে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা হ্যারি কেইন ছিলেন না, বেলজিয়াম দলে ছিলেন না রোমেলু লুকাকুও। গোলের সামনে তাই শুরু থেকেই দুই দলের আনকোরা আক্রমণভাগের এলোমেলো চেষ্টা। তবে দল হিসেবে যে বেলজিয়ামের শক্তিমত্তা বেশি সেটা টের পাওয়া গেল। ১০ মিনিটে মারুয়ন ফেলানির হেড থেকে মিচি বাতসুয়াই ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলেন। জর্ডান পিকফোর্ড অবশ্য সেই চেষ্টা রুখে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভালোভাবে ধরতে পারেননি বল, তার কাছ থেকেই ফসকে গোল হয়ে যেতে পারত সেটা। গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করে ইংল্যান্ডকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন দলে ফেরা কেহিল।  প্রথমার্ধে এছাড়া বলার মতো আক্রমণে যেতে পারেনি বেলজিয়াম। জেইমি ভার্ডি আর রুবেন লফটাস চিকের দুইটি লক্ষ্যহীন হেড ছাড়া ইংল্যান্ডও ভীতি ছড়াতে পারেনি বেলিজিয়ানদের রক্ষণে। 


    ম্যাড়মেড়ে ম্যাচে বিরতির পর সব আলো কেড়ে নেন ইয়ানুজাই। ৫১ মিনিটে ডানদিক থেকে কাট করে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে বাঁ পায়ের নিখুঁত ফিনিশে টপ কর্নারে বল জড়ান বেলজিয়ান উইঙ্গার। ওই গোলেই পরে নির্ধারণ হয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। গোল হজমের পরও ইংল্যান্ড ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেটকে বিচলিত মনে হলো না। বড় কোনো বদলিও করালেন না। তবে ৬৬ মিনিটে শুরু থেকে খেলতে থাকা মার্কস র‍্যাশফোর্ড আরেকটু হলেই সমতায় ফেরাতে পারতেন দলকে। ওয়ান অন ওয়ানে র‍্যাশফোর্ড আর গোলের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান কোর্তোয়া। আঙুলের ছোঁয়ায় গোলবঞ্চিত করেন ইংল্যান্ডকে। পুরো ম্যাচে ইংলিশদের ওই একটাই শট অন টার্গেট।

    এরপর বাকি সময়ে দুই কোচই দলের বাকি খেলোয়ড়দের বিশ্বকাপের স্বাদ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গোলরক্ষক বাদে দুইদলের সবাই অন্তত কয়েক মিনিট হলেও খেলতে পেরেছেন বিশ্বকাপ। এমন একটা ম্যাচ না পেলে হয়ত মাঠেই নামা হত না অনেকের। ড্রিস মার্টেনস অবশ্য আগের দুই ম্যাচেই খেলেছিলেন। শেষদিকে নেমে তিনি বেলজিয়ামের জয়ের ব্যবধান বাড়াতে পারতেন, পিকফোর্ডে অবশ্য ভালোভাবেই শট ঠেকিয়ে দিয়ে সেটা হতে দেননি। 

    গ্রুপ জি এর আরেক ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে পানামাকে হারিয়েছে তিউনিসিয়া। তিনটি গোলই অবশ্য তাদের করা। শুরুরটা ছিল আত্মঘাতী, পরে বেন ইয়োসেফ, আর ওয়াহাব খাজরির গোলে জয় নিশ্চিত হয় তিউনিসিয়ার। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসে তাই গ্রুপের তলানীতে থেকেই শেষ করলো পানামা। আর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বেলজিয়াম দ্বিতীয় রাউন্ডে পেল জাপানকে। ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া।