আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে অপহরণ করা হয়েছিল ওবি মিকেলের বাবাকে
আর্জেন্টিনা বিপক্ষে ম্যাচে নাইজেরিয়ার অধিনায়ক জন ওবি মিকেলকে দেখে মনে হয়েছিল, ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে গেছে? সেই ম্যাচের ঘন্টা চারেক আগে তিনি খবর পেয়েছিলেন, অপহরণ করা হয়েছে তার বাবাকে, ফোনে তার কাছে প্রায় ২৮ হাজার ইউএস ডলার দাবি করা হয়েছিল মুক্তিপণ হিসেবে। কর্তৃপক্ষকে জানালে সঙ্গে সঙ্গেই তার বাবাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল অপহরণকারীরা।
ওবি মিকেল অবশ্য জাতীয় দলের দায়িত্ব পালনটাই এগিয়ে রেখেছিলেন সবার আগে। এতদিন মুখ খোলেননি, ২ জুলাই তার বাবাকে পুলিশ উদ্ধার করার পরই জানিয়েছেন এসব।
ইএসপিএন বলছে, একটা শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ পূর্ব নাইজেরিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল পা ওবি মিকেলের। ২৬ জুন মাকুর্দি-ইনুগু মহাসড়কে অপহরণ করা হয় তাকে। তিনি ও তার ড্রাইভারকে একটা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পর ২ জুলাই উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মিকেলের বাবাকে এরপর নিতে হয়েছে হাসপাতালে। পারিবারিক সূত্র কিউইসে ইএসপিএনকে বলেছে, “বড়” মিকেলকে একাধিক সেলাই দিতে হয়েছে। তবে সেসব সেলাইও ফেটে যাওয়ায় আবার হাসপাতালে নিতে হয়েছিল তাকে। ওবি মিকেল বাবার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার কথা ভাবছেন।
তবে এ ব্যাপারে ম্যাচের আগে কাউকেই কিছু বলেননি ওবি মিকেল। নাইজেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন, কোচ গারনট রোর- কেউই কিছু টের পাননি। এসব কিছুর চেয়ে লিওনেল মেসির মুখোমুখি হওয়াটাই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
“আমি দ্বিধায় ছিলাম। কী করবো বুঝছিলাম না। তবে ১৮ কোটি নাইজেরিয়ানের দায়িত্বটা আমি ফেলে দিতে পারি না,” বলেছেন মিকেল।
“আমাকে এটা মাথা থেকে ছুড়ে ফেলতে হয়েছে, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা সবার আগে। তারা আমাকে বলেছিল, কাউকে জানালে বাবাকে সরাসরি গুলি করবে তখনোই।”
“আর কোচের সঙ্গেও এটা নিয়ে আলোচনা করতে চাইনি। গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচের আগে কারও মনযোগে ব্যঘাত করতে চাইনি। কোচের সঙ্গে আলোচনার যতো ইচ্ছাই থাকুক, আমি পারিনি।”
আর্জেন্টিনার সঙ্গে সে ম্যাচটা ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে নাইজেরিয়া।
অবশ্য মিকেলের বাবাকে অপহরণের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১১ সালে অপহরণ করা হয়েছিল তাকে, মুক্তি মিলেছিল ১০ দিন পর। নাইজেরিয়ায় ওবি মিকেলের পরিবারের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মিকেলের উপদেষ্টা।