সুইস-ভল্ট ভেঙে শেষ আটে সুইডেন
৬৪ বছর ধরে কোয়ার্টার ফাইনালটা মরীচিকা হয়ে আছে সুইজারল্যান্ডের জন্য। আর সুইডেনের জন্য সেই অপেক্ষাটা ২৪ বছরের। সুইডিশদের প্রতীক্ষাটাই শেষ হলো আগে, সুইস ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে তারা জিতল ১-০ গোলে। ১৯৯৪ সালের পর আবার কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেন, সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড বা কলম্বিয়া।
নকআউট পর্বের সবচেয়ে বিস্মরণীয় ম্যাচে গোলটাও সুইডেন পেয়েছে পাকেচক্রে। পুরো ম্যাচে দুই দলই বলতে গেলে একইভাবে আক্রমণের চেষ্টা করেছে, এক পাশ থেকে ক্রস আর তা থেকে হেডে গোল। তবে ৬৬ মিনিটে একমাত্র গোলটা এসেছে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের কাছ থেকে। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা এমিল ফর্সবার্গ বল পেয়ে গিয়েছিলেন বক্সের মাথায়। খানিকটা ভেতরে ঢুকে তাঁর নেওয়া শট হয়তো ঠেকিয়ে দিতেন সুইস গোলরক্ষক । কিন্তু আকাঞ্জির পায়ে লেগে দিকবদল করে জড়িয়ে গেছে জালে। এর আগে এই বিশ্বকাপে ১৩ বার শট নিয়েও গোল পাননি ফর্সবার্গ। আনলাকি থার্টিনের পর ১৪ বারে এসে সফল হলেন।
ম্যাচের বলের দখল, পাসিং, গোলে শট নেওয়া সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল সুইজারল্যান্ড। কিন্তু সেভাবে গোলের সুযোগই পাচ্ছিল না, চীনের প্রাচীরের মতো দুই সেন্টারব্যাক লিন্ডেলফ-গ্রাঙ্কভিস্ট ঠেকিয়ে দিয়েছেন সব আক্রমণ। শাকিরি একের পর এক ক্রস করেছেন, কিন্তু বেশির ভাগই ছিল নিস্ফলা। বরং প্রথমার্ধে গোল করার পরিষ্কার দুইটি সুযোগ সুইডেনই পেয়েছিল।
৩৯ মিনিটে ম্যাচের সেরা সুযোগ পেয়েছিলেন একদাল। ডান দিক আসা দুর্দান্ত ক্রসটা ভলিতে এসে পড়েছিল তাঁর পায়। কিন্তু কয়েক গজ দূর থেকে পোস্টে রাখা দূরে থাক, মেরেছেন বারের অনেক বাইরে দিয়ে। তার আগে ৯ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে বার্গের ডান পায়ের নেওয়া শট চলে যায় বাইরে দিয়ে।
সুইজারল্যান্ডের প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটা পেয়েছিলেন জুবের। ৩৯ মিনিটে জেমাইলির সঙ্গে ওয়ান টু খেলে বক্সে ঢুকে পড়েছিলে জুবের, কিন্তু তাঁর শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। ২৪ মিনিটে শাকিরি ভালো একটা বল বাড়িয়েছিলেন বক্সে, কিন্তু ১০ গজ দূর থেকে জুবের তা পোস্টে রাখতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে সুইসদের চেপে ধরে সুইডিশরা। গোলটা পেয়ে যায় কিছুটা ভাগ্যক্রমেই। শেষ দিকে সেফেরোভিচ-এমবেলোরা নামার পর একটু চেষ্টা করছিল সুইসরা। ৮০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড পোস্টে ঢোকার আগ মুহূর্তে ফর্সবার্গ সেটি ক্লিয়ার করে দেন। আর অতিরিত সময়ে সেফেরোভিচের হেডটা জালে ঢুকেই যাচ্ছিল। কিন্তু জায়গামতো থাকায় ওলসেন কোনো বিপদ হতে দেননি।
শেষ মুহূর্তে সুইডেন পেনাল্টি পেয়েই গিয়েছিল। অলসেনকে ফেলে দেওয়ার জন্য রেফারি সুইস ডিফেন্ডার লংকে পেনাল্টির সঙ্গে লাল কার্ডও দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য ভিডিও দেখে পেনাল্টিটা আর দেননি। তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি সুইডেনের। ১৯৫৮ সালের এই প্রথম বিশ্বকাপে জয় পেল টানা দুই ম্যাচে।
সেবার তারা কতদূর গিয়েছিল জানেন? ফাইনাল!