হাডিনের বিষয়ে মুখ খুললেন অজি কোচ
বিতর্কটা অনিবার্যই ছিল। অসুস্থ মেয়েকে সময় দিতে গিয়ে লর্ডস টেস্ট খেলা হয় নি অসি কীপার ব্র্যাড হাডিনের। কিন্তু দলের সাথে সময়মত যোগ দিয়েও জায়গা মেলে নি এজবাস্টন টেস্টের একাদশে। তবে কি পরিবারকে প্রাধান্য দিয়ে কোন ‘অন্যায়’ করে ফেলেছিলেন হাডিন? সাবেক অজি তারকারা তো বটেই, এমন প্রশ্ন নাকি উঠতে শুরু করেছিল খোদ দলের ভেতর থেকেই! অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন ল্যামেন। পরিষ্কার করেই জানিয়ে দিয়েছেন, এজবাস্টন টেস্টে হাডিনের জায়গা না মেলার একমাত্র কারণ তাঁর সাম্প্রতিক ফর্মহীনতা, অন্য কিছু নয়।
প্রসঙ্গত, লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ কন্যা মিয়াকে সময় দিতে লর্ডস টেস্টের দল থেকে নিজেই সরে দাঁড়ান হাডিন। তাঁর বদলি হিসেবে সুযোগ পাওয়া পিটার নেভিল সপ্রতিভ পারফরম্যান্সে দলের ৪০৫ রানের বিশাল জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ না পেলেও প্রথম ইনিংসে করেন ৪৫ রান। আর গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে দু’ ইনিংস মিলিয়ে তালুবন্দী করেন সাত সাতটি ক্যাচ। সে সুবাদেই এজবাস্টনে তৃতীয় টেস্টের দলেও হাডিনের পরিবর্তে তাঁকেই রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ব্র্যাড হাডিন (ডানে) ও পিটার নেভিল
কিন্তু বিষয়টা মোটেও ভালোভাবে নেন নি সাবেক অজি কিংবদন্তীরা। রিকি পন্টিং, ইয়ান হিলি, ম্যাথিউ হেইডেন, শেন ওয়ার্নের মতো গ্রেটরা এ নিয়ে কথা শোনাতে ছাড়েন নি। তবে আরও গুরুতর খবর হচ্ছে যে বর্তমান দলের ভেতরই নাকি এ নিয়ে তৈরি হয়েছে চাপা অসন্তোষ!
এজবাস্টন টেস্ট আড়াই দিনেরও কম সময়ে ৮ উইকেটে হেরে যাবার পর হাডিনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন কোচ লেহম্যান। বলেছেন তাঁর কোচিং তথা খেলোয়াড়ি জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল এটি। একইসাথে এ নিয়ে কোন মন কষাকষির সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী এই সাবেক অজি ক্রিকেটার, “আমাদের মধ্যে কোন দূরত্ব নেই। আর এ নিয়ে আমরা খোলাখুলিই কথা বলেছি।”
কেন হাডিনকে ৩য় টেস্টের দলে রাখা হয় নি সেটার ব্যাখ্যাটা পরিষ্কার করেই দিলেন কোচ, “দেখুন এ নিয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে হাডিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে লম্বা সময় ধরে অসাধারণ ক্রিকেট খেলে যাচ্ছে। আর তাঁকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তটা আমার কোচিং জীবনের এমনকি হয়তো আমার খেলোয়াড়ি জীবনেরও সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। তবে বাস্তবতা হচ্ছে শেষ ১২ টেস্টে সে সাকুল্যে ২৫০ রান করেছে, ২১ ইনিংসের মধ্যে ১৬টিতেই বোল্ড হয়েছে। সুতরাং, স্রেফ পারফরম্যান্সের বিচারেই এ সিদ্ধান্ত। তাছাড়া প্রতিটা ম্যাচের জন্যই আমাদেরকে সেরা একাদশটা বাছাইয়ের চেষ্টা করতে হয়। নেভিল লর্ডসে ভালো করার পর তাঁকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তটাও তো ভালো কিছু হতো না।”
সমালোচকদের জবাবটাও লেহম্যান দিয়েছেন কোন ভনিতার আশ্রয় না নিয়েই, “অনেকেই পরিবারকে সময় দেয়ার বিষয়টি এখানে টেনে আনার চেষ্টা করছেন। আমি বলবো, অস্ট্রেলিয়া দল এখনও ‘আগে পরিবার’ নীতিতে অবিচল রয়েছে। হাডিন ও তাঁর পরিবারের প্রতি আমরা আগের মতোই যত্নশীল আছি। সবার আবেগ একরকম হবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে পেশাদার খেলাধুলায় আমাদেরকে আবগটুকু পেশাদারিত্ব দিয়েই সামলাতে হয়।”