শেষ চারে 'ঘরে ফেরার' স্বপ্নে বিভোর ইংল্যান্ড
ফেসবুক-টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে গেছে ‘ইটস কামিং হোম’। ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপ স্বপ্নে আবারও বিভোর ইংলিশরা। মস্কো এখনও দূর, তবে বাস্তবতা হচ্ছে শিরোপা থেকে ইংল্যান্ডের দূরত্ব মাত্র দুই ম্যাচ। সুইডেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৯৯০ বিশ্বকাপের পর প্রথম বারের মতো সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড। ঘরের ফেরার স্লোগানটা এখন খুব বেশি ফাঁপা বুলি মনে হচ্ছে না!
এই বিশ্বকাপ এবার একের পর এক চমক দিয়েই যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চমকগুলোর একটি, এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সেরা একজন গোলরক্ষক। ইংল্যান্ড পুরো ম্যাচেই দাপটের সঙ্গে খেলেছে, হ্যারি ম্যাগুইরে ও ডেলে আলী হেড থেকে গোল করে খুব বেশি নির্ভাবনায় থাকতে দেননি কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে। তবে গোলপোস্টের নিচে জর্ডান পিকফোর্ড অমন দুর্দান্ত না খেললে সুইডেন অন্তত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নাও হারতে পারত।
অবশ্য সুইডেন প্রথমার্ধে কিছুই করতে পারেনি। বরং ১৯ মিনিটে ইংল্যান্ড পেয়ে যায় প্রথম সুযোগ। রাহিম স্টার্লিংয়ের দুর্দান্ত দৌড়ের পর বল পেয়ে যান হ্যারি কেইন। কিন্তু ২০ গজ দূর থেকে বক্সের বাইরে থেকে কেইনের শট চলে যায় পোস্টের পাশ ঘেঁষে।
৩০ মিনিটে গোল পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। আরও একবার সেট পিসে, অ্যাশলি ইয়াংয়ের কর্নার থেকে হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন হ্যারি ম্যাগুইরে। এই বিশ্বকাপে যে ১০টি গোল করেছে ইংল্যান্ড, তার পাঁচটিই এসেছে সেট পিস থেকে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম বিশ্বকাপে ১০টি গোল করল ইংল্যান্ড।
৪৩ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সুবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া করে ফেলেন স্টার্লিং। হেন্ডারসনের দারুণ লব থেকে বল পেয়েছিলেন বক্সে, ফার্স্ট টাচে সেটা নিয়ন্ত্রণেও নিয়েছিলেনও ঠিকমতো। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে ভুগতে দেরি করে ফেললেন, অথচ কেইনকে পাস দিলে গোলও হতে পারত।
তবে দ্বিতীয়ার্ধটা যেন সুইডেন বনাম পিকফোর্ড। আরও একটি নির্দিষ্ট করে বললে বার্গ বনাম পিকফোর্ড। ৪৬ মিনিটে প্রথম সুযোগ পেয়ে যায় সুইডেন, মার্কাস বার্গের হেড দারুণভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন ইংলিশ গোলরক্ষক।
গোল পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে সুইডেন রক্ষণে একটু অমনযোগী হয়ে পড়েছিল। সেই সুযোগে ৫৮ মিনিটে ইংল্যান্ড পেয়ে যায় দ্বিতীয় গোল। এবার ট্রিপিয়েরের কাছ থেকে বল পেয়ে লিনগার্ড ক্রস ভাসিয়েছিলেন হাওয়ায়। হেড করে গোল এনে দিয়েছেন ডেলে আলী। মাইকেল ওয়েনের পর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল পেলেন আলী।
৬২ মিনিটে আবারও ত্রাণকর্তা পিকফোর্ড। দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিল সুইডেন, বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন ক্লাসেওন। কিন্তু তাঁর শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে আরেকবার বাঁচিয়ে দিয়েছেন পিকফোর্ড।
৭০ মিনিটে আবারও পিকফোর্ড, এবার বার্গের শট দুর্দান্ত এক সেভে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। আগের ম্যাচে পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক হয়েছিলেন, এবার হলেন সেভ করে। শেষ দিকে ইংল্যান্ড সুযোগ পেয়েছিল ব্যবধান বাড়ানোর, তবে পায়নি। তাতে অবশ্য খুব একটা মন খারাপ করবেন না সাউথগেট। এমন জয়ের পর চাওয়ার আর কী থাকে!
ইংল্যান্ড একাদশ
পিকফোর্ড, ওয়াকার, স্টোনস, ম্যাগুয়ের, লিনগার্ড, হেন্ডেরসন, কেইন, স্টার্লিং, ট্রিপিয়ের, ইয়াং, ডেলে অ্যালি
সুইডেন একাদশ
ওলসেন, লিন্ডেলফ, গ্রাঙ্কভিস্ট, অগাস্টিনসন, লারসন, একদাল, বার্গ, ফসবার্গ, ক্রাফথ, ক্লেসন, টইভোনেন