বার আনা বিশ্বকাপের সঙ্গে চার আনা রাজনীতি
বিশ্বকাপ এমনই।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরন ভিআইপি বক্সের আসন ছেড়ে হাত ছুঁড়ে উদযাপন করতে থাকেন। দুই আসন দূরে বসা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাততালির ভাবার্থ বোঝা দায়, ঠিক ‘পুতিনীয়’ বলে ধরে নেওয়াটাই শ্রেয়। ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাভার-কিতারোভিচ আলিঙ্গনে বাঁধলেন ম্যাকরনকে, নিজে রানার্স-আপ হলেও বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে তো অভিবাদন জানাতেই হয়।
বেশ একটা বিরতির পর তিনজনই নেমে এলেন মাঠে বানানো মঞ্চে, সঙ্গে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফানতিনো ও পুরষ্কার বাকি বিতরণীর অতিথিরা। মস্কোর আকাশ গুমোট হয়ে ছিল আগে থেকেই, বজ্রপাতও বারকয়েক হুমকি দিয়ে গেছে ঝড়-বৃষ্টির। সেটা নামলো ওই পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়ই। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ভিজতে লাগলেন, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভিজতে লাগলেন- তবে তাদের যে তাতে খুব আপত্তি ছিল সেটা বুঝার উপায় নেই অবশ্য। তারা জাতিভেদ ভুলে খেলোয়াড়দের আলিঙ্গনে বাঁধতে ব্যস্ত, সেসব আলিঙ্গনে মিশে আছে অভিবাদন বা সান্ত্বনা। ভ্লাদিমির পুতিনের মাথার ওপর একটা ছাতা উঠে এল- পেছন থেকে কোনও সহকারি উঁচিয়ে ধরেছেন সেটা। রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপের রোমাঞ্চকর ফাইনালের পর সব নজর যেন কাড়লো সেটাই।
রাশিয়া বিশ্বকাপটাও এমনই। বৃষ্টির মতো করেই শুরু থেকেই ছিল রাজনীতি, বৈরিতা, বিদ্রোহ, বিদ্বেষের শঙ্কা। পুতিন বা রাশিয়া সেসব থেকে রক্ষা পেয়েছে নিরাপত্তার, আতিথেয়তার ছাতা তুলে ধরেই।অথবা চেষ্টা করেছে সেভাবে। মাঠের ফুটবলের রোমাঞ্চ, ঘটন-অঘটন, ভিএআর- সব পসরা সাজিয়ে হাজির হওয়া বিশ্বকাপ সেসব শঙ্কাকে কাটিয়ে গেছে। ছিঁটেফোঁটার মতো করে গায়ে লেগেছে অবশ্য বেশকিছু ‘রাজনৈতিক’ ব্যাপার। আর ছাতা ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকার মতো করে রেখে গেছে একটা প্রভাব। ফাইনালে ‘পুসি রায়ট’ নামের ব্যান্ডের চারজন দল মাঠে ঢুকে গেলেন ওই বৃষ্টির মতো করেই, নিরাপত্তার চাদর বা ছাতা ভেদ করে।
ফুটবল বিশ্বকাপ যখন ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’, তখন বৈশ্বিক বা দেশীয় রাজনীতির প্রভাব এতে থাকবে না, সেটা ভাবা বেশ কঠিনই।
****
সুইজারল্যান্ড-সার্বিয়ার ম্যাচে আলবেনিয়া বা কসোভো আসে কিভাবে? গ্রানিত শাকা ও জেদরান শাকিরির উদযাপন আপনাকে পেছনের গল্পটা জানতে আগ্রহী করে তোলে। তাদের উল্লাসে সায় দেয় আলবেনিয়া, কসোভো, আর নারাজ হন সার্বিয়ানরা। ফিফা নড়েচড়ে বসে, তদন্ত করে, সতর্ক করে ছেড়ে দেয় দুই ফুটবলারকে।
রাশিয়ার সঙ্গে মহাকাব্যিক কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে ক্রোয়েশিয়ার ডোমাগো ভিদা, আর সহকারি কোচ ভুকোয়েভিচের ভিডিও তোলপাড় তোলে কেন? পরের ম্যাচে রাশিয়ার দর্শকদের দুয়ো শুনে গেছেন ভিদা, ক্ষমাও চেয়েছেন। আর ইউক্রেন অন্য নজরে দেখা শুরু করেছে তাকে। রাশিয়ান ফেডারেশনের ক্রিমিয়া দখলের কাহিনী আপনি জেনে যান তাই।
চেচনিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোহাম্মদ সালাহর ছবি তোলা কেন সবাই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেন না, সেটাও ঘেঁটে দেখার ইচ্ছা হয় আপনার। মেসুত ওজিলকে জার্মানদের ‘অপছন্দ’ করার পেছনে একটা কারণ হিসেবে যে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার তোলা ছবির দায় থাকে, আপনি হয়ত এটাও জানেন, বা ধারণা করেন। ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিভক্ত ইংল্যান্ডকে একত্র করে বিশ্বকাপ-সাফল্য। আবার ‘যুক্তরাষ্ট্রের রেফারি ইংল্যান্ডের জন্য ম্যাচ চুরি করেছেন’ বলে দাবি করেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ম্যারাডোনা আর ইংল্যান্ড- ইতিহাসটা তো কম পুরোনো নয়!
ফ্রান্সের সঙ্গে আফ্রিকার সূত্রটাও এখন জানেন আপনি। অথবা রোমেলু লুকাকু, ইভান রাকিটিচ, লুকা মদ্রিচ, রাহিম স্টার্লিংদের গল্পগুলো আপনাকে তাদের শেকড় আর আলো-বাতাসে বড় হওয়া দুইটি ভিন্ন দেশের গল্প শোনায়। রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতিতে মদ্রিচদের সাফল্যও কেন সুবাতাস বয়ে দিতে পারে না, সেই হাহাকার জাগিয়ে দেয়।
রাশিয়ার রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপে আপনার রাজনীতির এক পাঠ হয়ে যায় কিন্তু!
****
আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে। ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের ঝামেলা নতুন করে ফিরে এল জেরুজালেমকে ঘিরে। এমনিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ সাধারণত হয় ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে, তবে আর্জেন্টিনাকে এবার ইসরায়েল আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সেই জেরুজালেমে। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা সে ম্যাচটা বাতিলই করলো। লিওনেল মেসিরা মুখে কিছু বললেন না, তবে তাদের নীরবতায় ভর করে ‘মানবতাবাদ’-এর জয়গান গাইলেন অনেকেই।
বিশ্বকাপের আগে সব দলেরই প্রীতি ম্যাচ থাকে, ইরানেরও ছিল গ্রীসের সঙ্গে। খেলার কথা ছিল তুরস্কের ইস্তানবুলে। বাগড়া বাঁধালো গ্রীস, তুরস্কের সঙ্গে সীমান্তে ঝামেলা চলছিল তাদের। গ্রীসের এমন আচরণ মেনে নিতে না পেরে তাদের সঙ্গে সব ফুটবলীয় সম্পর্কই ছিন্ন করেছে ইরান। শুধু প্রীতি ম্যাচ নয়, ইরান ঝামেলায় পড়লো তাদের ফুটবলারদের বুট নিয়েও।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি নাইকিই বুট সরবরাহ করতো ইরানকে, তবে বিশ্বকাপের কয়েকদিন আগে তারা জানিয়ে দেয়, সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটা করতে পারবে না তারা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইরানের ওপর, জরিমানার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তাই পিছু হটেছিল নাইকি। ইরানের অভিজ্ঞ কোচ কার্লোস কুইরোজ বেশ চটেছিলেন তাদের ওপর, খেলার মাঝে রাজনীতির ব্যাপার-স্যাপার টানা পছন্দ হয়নি তার।
কুইরোজের পছন্দ-অপছন্দে কি খুব বেশি কিছু যায় আসে বিশ্ব-রাজনীতিতে?
****
প্রীতি ম্যাচেরও আগে যান। রাশিয়া বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই তো শুরু বিতর্ক। রাশিয়ার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ইংল্যান্ড, শেষ মুহুর্তে তাদেরকে ছাপিয়ে ২০১০ সালে রাশিয়াই পেয়েছিল এ সুযোগ। এরপর সরে গেছেন সেপ ব্ল্যাটাররা। পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ব্ল্যাটারের সম্পর্ক ভাল বলেই তাকে হটানোর চেষ্টা করা হয়েছে ফিফা থেকে। ‘দুর্নীতির দায়’ মাথা পেতে না নিলেও ব্ল্যাটার অতীত হয়ে গেছেন অবশ্য।
আর বিভিন্ন সময়ে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি থেকে কথা এসেছে ফিফার প্রতি- রাশিয়া থেকে যেন সরিয়ে নেওয়া হয় বিশ্বকাপ।
২০১৪ সালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সেভেনটিন উড়ছিল আমস্টারডম থেকে কুয়ালালামপুরের দিকে। পূর্ব ইউক্রেনের আকাশে “গুলি করে” বিধ্বস্ত করানো হয়েছিল সেটা, ২৮৩ জন যাত্রী ও ১৫ জন ক্রুর সবাই মারা গিয়েছিলেন। পশ্চিমা নেতারা এর দায় চাপিয়েছিলেন রাশিয়ার ওপর, আরেকবার বিশ্বকাপ রাশিয়া থেকে সরিয়ে নিতে উচ্চকিত ছিলেন তারা। নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল ফিফাকে। তখনকার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও এমন প্রস্তাব জানানোর পক্ষে ছিলেন বলেই জানা যায়।
ফিফা অবশ্য সেসব কথায় কান দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। ব্ল্যাটার তখন বলেছিলেন, রাশিয়া বিশ্বকাপ হবে ‘ভাল কিছুর সপক্ষের শক্তি’।
আর পুতিন অবশ্য বরাবরই এ বিশ্বকাপকে চেয়েছেন রাশিয়ার কল্যাণে ব্যবহার করতে, পরবর্তী প্রজন্মকে আরও সচেতন করে তুলতে। তিনি ফুটবল খুব একটা পছন্দ করেন, সেটা জোর গলায় বলেন না কেউ। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপকে নিয়েছিল বেশ একটা সুযোগ হিসেবেই। বর্ণবাদ, সমলিঙ্গের প্রতি রাশিয়ার আচরণ, প্রতিবাদীদের দমিয়ে রাখার নীতি নিয়ে শঙ্কাও ছিল এর সঙ্গে।
রাশিয়া এসব সামলে এসেছিল বেশ ভালভাবে, ফাইনালের ঠিক ‘সেই’ মুহুর্তটার আগে। সেই ‘পুসি রায়ট’-এর অনুপ্রবেশের আগ পর্যন্ত।
****
পরনে কালো ট্রাউজারস, সাদা শার্ট, মাথায় পুলিশী স্টাইলের হ্যাট। এমন পোশাকের তিনজন হুট করেই ঢুকে পড়লেন লুঝনিকির মাঠে, ক্রোয়েশিয়া তখন আরেকটি আক্রমণে ব্যস্ত। সে আক্রমণের চেষ্টা থমকে গেল, রেফারি খেলা থামিয়ে দিলেন, নিরাপত্তাকর্মীরা ছুটতে লাগলেন তিনজনের পেছন পেছন। আরেকজন ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, সাইডলাইনেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। সেই তিনজনও ধরা পড়লেন, রীতিমতো পাঁজকোলা করা নিয়ে যাওয়া হলো তাদের।
অফিশিয়াল ব্রডকাস্টাররা এমন অনাহুত কেউ মাঠে ঢুকে পড়লে তাদের ছবি দেখান না, তবে মাঠে তো আর সংবাদকর্মীদের অভাব নেই, দর্শকদের কাছেও অভাব নেই ক্যামেরা ফোনের। সেসব ছবিতেই এলো, এই তিনজনের একজন দৌড়পথে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে ‘হাই-ফাইভ’ও করেছেন।
‘পুসি রায়ট’ নামে একটা ব্যান্ড দাবি করেছে এর দায়। ‘সরকার-বিরোধী’ এমন কান্ড তাদের জন্য নতুন নয়, ২০১২ সালে গীর্জায় পারফর্ম করার জন্য জেলও হয়েছে তাদের সদস্যদের। তাদের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে ফাইনালের ব্যাপারে বলা হয়েছে, “মহান রাশিয়ান কবি দিমিত্রি প্রিগোভের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। প্রিগোভ রাশিয়ান পুলিশের একটা স্বর্গীয় প্রতিচ্ছবি দাঁড় করিয়েছিলেন, যারা জাতিসত্ত্বাকে ধারণ করে, রাশিয়ান সংস্কৃতিকে ধারণ করে।
“...সেই স্বর্গীয় পুলিশ জাতিসত্তার দারুণ উদাহরণ সৃষ্টি করে, আর মর্ত্যের পুলিশ মানুষকে আঘাত করে। স্বর্গীয় পুলিশ শিশুর ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়, আর মর্ত্যের পুলিশ রাজনৈতিক বন্দীদের নিপীড়ন করে। পুলিশকে জেলে ভরে ‘রিপোস্ট’ বা ‘লাইক’ এর মতো কারণে।
“....ফিফা বিশ্বকাপ ভবিষ্যতের মহান রাশিয়ায় সেই স্বর্গীয় পুলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান দিয়েছে, তবে মর্ত্যের পুলিশ এই নিয়মবহির্ভূত খেলায় ঢুকে আমাদের দুনিয়া তছনছ করে দিয়েছে। যখন মর্ত্যের পুলিশ খেলায় ঢুকে পড়ে, তখন আমরা দাবি জানাই...।”
এরপর ছয়টি দাবি জানানো হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। সেগুলোর মধ্যে আছে রাশিয়ার রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, ইন্টারনেটে বাক-স্বাধীনতা, প্রতিবাদের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ।
টুইটারে এসবের সঙ্গে এসেছে একটি ভিডিও। যেখানে একজন ছেলে ও মেয়ে মাঠের সেই পুলিশের পোশাকে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন একজনের সঙ্গে, যিনি হাতকড়া আনতে বলছেন।
“তোমরা জানো, এর কারণে ফিফার কাছে রাশিয়াকে জরিমানা গুণতে হবে?”, ক্যামেরার বাইরে থাকা লোকের কন্ঠে বেশ রাগের সুর, “তোমরা রাশিয়াকে নোংরা করতে চেয়েছিলে, তাই না?”
ছেলে বন্দীটি জবাব দিয়েছেন, “আমরা রাশিয়ার জন্যই”।
“মাঝে মাঝে আমার আফসোস হয়, এটা ১৯৩৭ সাল নয় কেন”, ক্যামেরার বাইরে থাকা ব্যক্তি এবার আফসোস করলেন। সে বছর সোভিয়েত একনায়ক জোসেফ স্তালিনের নিপীড়ন নিয়েছিল চূড়ান্ত রুপ।
****
ফাইনাল শেষে টুইট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন ফ্রান্সকে, এমন বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়া ও ভ্লাদিমির পুতিনকে। এ বিশ্বকাপকে তিনি বলেছেন, “অন্যতম সেরা”।
এই টুইটের আগে স্কটল্যান্ডে নিজের গলফ ক্লাবে বসে একটা সাক্ষাতকার দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে বলেছেন, “আমার মনে হয়, আমাদের অনেক শত্রু। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আমাদের শত্রু, আমাদের সঙ্গে বাণিজ্যে তারা যা করে। চীন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের শত্রু, নিশ্চিতভাবেই। রাশিয়া কিছু ব্যাপারে শত্রু। এর মানে এই নয়, তারা খারাপ। এর আসলে কোনও অর্থই নেই। এর মানে হলো, তারা প্রতিদ্বন্দ্বী।”
ট্রাম্প এখানে ফুটবলের কথা বলেননি, সেটা নিশ্চিতই। এবার যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে খেলেনি, তবে তারা বাছাইপর্ব পেরুলে ১৯৮০ ও ‘৮৪ অলিম্পিকের বয়কটের মতো কিছু ঘটতে পারতো বলেও আশঙ্কা করা হয়েছিল। কোল্ড ওয়ারের সময় ‘মস্কো’ অলিম্পিক বয়কট করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, চার বছর পর লস অ্যাঞ্জেলেসের অলিম্পিক বয়কট করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তাদের মিত্ররা।
রাশিয়ায় তেমন কিছু হয়নি।
চার বছর পর বিশ্বকাপ কাতারে, মধ্যপ্রাচ্যে। কাতারের সঙ্গে বেশ কিছু দেশের ঝামেলা আছে, ফিফা প্রেসিডেন্ট ফুটবল দিয়েই সমাধানের রাস্তা খোলা রাখতে চাইছেন সেসবের, “এমন হতে পারে, যারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্যায় ভুগছে, তাদেরকে একত্র করে সংলাপের ব্যবস্থা করতে পারি আমরা।”
কাতারের পরের আসর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয়।
রাশিয়া বিশ্বকাপ যে রাজনীতির পাঠ দিয়েছে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন আপনি। কাতার বা তার পরের আসরে কাজেও লেগে যেতে পারে সেসব! আসরটা যখন বিশ্বকাপ ফুটবল, তখন রাজনীতি সেখানে মিশবেই।
বিশ্বকাপ এমনই।
তথ্যসূত্র
দ্য ইন্ডেপেন্ডেন্ট
দ্য গার্ডিয়ান
লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস
উইকিপিডিয়া
টুইটার
রয়টার্স
বিবিসি
সনি টেন টু