"সাকিব বলেছে নাকি, সে খেলতে চায় না"
সাকিব আল হাসান সহ বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটারের টেস্টে অনাগ্রহের খবর জানেন না ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। সাকিবকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার মনে করে আকরাম বলেছেন, এমন ইচ্ছা আসলেই প্রকাশ করলে সেটা হবে দুঃখজনক। নতুন পেসার তৈরী ও বাউন্সি উইকেটের ব্যাপারে বোর্ডের ইচ্ছার কথাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
চোট থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই টেস্টে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অ্যান্টিগার বিপর্যয়ের পর জ্যামাইকায় একা লড়াই করেছেন, ফিফটির সঙ্গে নিয়েছেন ছয় উইকেট। অবশ্য হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ, সে সিরিজের পর্যালোচনার সময়ই বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান বলেছেন, সাকিবসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার টেস্ট খেলতে আগ্রহী নন।
“সে তো টেস্ট খেলছে, আর টেস্টের অধিনায়কও সে। সে বলেছে নাকি যে সে খেলতে চায় না। বোর্ড প্রেসিডেন্ট যা বলেছে এই ব্যাপারে আমি পুরোপুরি জানি না”, আকরাম বলছেন, “সাকিব আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার। আমাদের ক্রিকেট যে অবস্থায় আছে আমি মনে করি যে তিনটি ফরম্যাটই কিন্তু আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
তবে সাকিব এমন কিছু বলে থাকলে সেটা শুনে খারাপ লাগবে আকরামের, “এমনটা আসলে হওয়া উচিৎ না। আমার নিজের কাছে শুনেও ব্যাপারটি খারাপ লাগলো।”
সব মিলিয়ে বোর্ডে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি, “সবকিছু নিয়ে নির্বাচকদের সাথে আলাপ আলোচনা হয়েছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর পরই আয়ারল্যান্ডে ২৬ অথবা ২৭ তারিখে যাবে 'এ' দল। আলাপ আলোচনা করা হচ্ছে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে, যারা এখানে ভালো খেলছে।”
বোর্ড প্রেসিডেন্ট টেস্টের জন্য ‘স্পেশালিস্ট’ যে দলের তাড়না দিয়েছেন, বর্তমান অবস্থায় সেটা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন বিসিবির এই পরিচালক, “টেস্টের পারফরম্যান্স ভালো হয়নি দেখেই আমরা আলাপ আলোচনা করেছি। যেহেতু আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা ভালো করতে পারিনি সেই কারণে আলোচনা হয়েছে। মাঝে মধ্যে খারাপ পারফরম্যান্স হতেই পারে, তবে এত খারাপ হবে সেটি চিন্তা করিনি। এখান থেকে কিভাবে আমরা বের হয়ে আসবো সেটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
“টেস্টে আলাদা দল গঠনের মতো অবস্থা আমাদের এখনো হয়নি। যেহেতু আমাদের অপশন এখন অনেক কম। হিসেব করলে দেখবেন যে ৮০ ভাগ ক্রিকেটার কিন্তু তিন ফরম্যাটেই খেলছে। আপনার তো অপশনটি থাকতে হবে তাহলে আলাদা দল তৈরি করা যাবে।
“যখনই আপনি খারাপ খেলবেন তখনই আপনাকে নিয়ে কথা উঠবে। আর সত্যি কথা বলতে কি দীর্ঘ সংস্করণে অর্থাৎ টেস্টে ভালো করার ব্যাপারটি নির্ভর করে অনেকটা আপনার বোলারদের ওপর। যেহেতু প্রথম ইনিংসে আমরা ব্যাটিংয়ে অনেক খারাপ করেছি সুতরাং বোলিংয়ে ভালো করার দরকার ছিলো।”
পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের চোটেরও সমালোচনা করেছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আগামী দুই বছর বিদেশী লিগগুলোতে খেলার জন্য তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। আকরাম অবশ্য মুস্তাফিজকে নিয়ে আশাবাদের কথাই শোনালেন, “'সে মাত্র দুইবার বাইরে খেলতে গিয়ে চোটে পড়েছে, সবসময় নয়। চোট তো আর ইচ্ছাকৃতভাবে হয় না। সে কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করছে নিজেকে ফিরে পেতে। শ্রীলঙ্কার সাথে চার দিনের ম্যাচও খেলেছে। এবার যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। আমার কাছে মনে হয় সে পুরোপুরি ফিট আছে, এ কারণেই সে ম্যাচ খেলেছে এবং আগামীতে ভালো করবে বলে আশা করছি।”
সব মিলিয়ে পেসারদের শুধু পারফরম্যান্স নয়, ফিটনেসেও ঘাটতি আছে বলে মনে করেন আকরাম। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাউন্সি উইকেট তৈরির চেষ্টাও করে যাচ্ছে বিসিবি।*
*আকরাম খানের উদ্ধৃতি বাক্যগঠনে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করায় তা পরিবর্তিত