নিজ গৃহে পরবাসিনী বাংলাদেশ
পোস্টটি ৬২২৭ বার পঠিত হয়েছেবিপিএল থেকেই বিতর্কের মুখে শেরে বাংলার উইকেটের আচরণ। তবুও চট্রগ্রামে নিস্প্রান ড্রয়ের পর ঢাকায় ফলাফল নির্ভর উইকেট বানানোর তাড়না বোধহয় খুব বেশি কাজ করেছিল কর্তাব্যক্তিদের মাথায়। এমনিতেই আউটফিল্ডে একটি ডিমেরিটস পয়েন্টস নিয়ে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে আছে মিরপুর। তাই হয়ত এমন উইকেট বানানোটাই ছিল নিরাপদ যেখানে উইকেট পড়বে, রান আসবে কষ্টেসৃষ্টে আর ফলও আসবে নিশ্চিত, তাও টেস্টের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিনেই! গত দুই বছরে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই টোটকা কাজে লেগেছিল বেশ। তবে গেল বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নাথান লায়নের স্পিনে নাকাল হয়ে প্রশ্নটা উঠেছিল স্পিনে নিজেদের দক্ষতা নিয়েই। শক্তির জায়গা স্পিন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মন্ত্র নাহয় কার্যকর হল, কিন্তু টার্নিং উইকেটে স্পিন মোকাবেলায় আমাদের ব্যাটসম্যানরা কতটা প্রস্তুত? নাকি প্রতিপক্ষের সাথে ব্যবধানটা আঠার আর বিশ!
লায়নরা বাংলাদেশের সাথে সিরিজ শুরু দিন পনেরো আগেও ছিলেন ব্যাট বল থেকে অনেক দূরে। সিরিজ শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে চুক্তিসংক্রান্ত ঝামেলা চুকিয়ে দেশের মাটিতে একটি প্রস্তুতিতে ম্যাচ খেলেই বাংলাদেশে এসেছিল অজিরা। ফতুল্লায় একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও মাঠের বাজে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সেটিও হয় পরিত্যক্ত। একাডেমি মাঠে দিনকয়েকের প্রস্তুতির পর মিরপুরে টেস্ট হারলেও মরণকামড় প্রায় দিয়েই বসেছিল স্মিথবাহিনী। প্রথম টেস্ট খেলে কন্ডিশনের সাথে কিছুটা ধাতস্থ্য অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় টেস্টেই ফিরে এল সিরিজে। দুই ইনিংসেই লায়নের স্পিনের কোন জবাবই ছিলোনা ব্যাটসম্যানদের কাছে। মানসম্মত স্পিনের বিপক্ষে আমাদের দুর্বলতা ধরা পড়েছিল স্পষ্টভাবে। তবুও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে স্পিনে সমৃদ্ধ শ্রীলংকার বিপক্ষে আমরা ঝুঁকলাম স্পিন সহায়ক উইকেটেই!
এই উইকেটে যে দুদলেরই ৪০ উইকেট যে পড়তে যাচ্ছে তা ছিল অনুমিতই। পার্থক্যটা গড়ে দিতে হত ব্যাটসম্যানদের। নিজের উইকেটের মূল্যটা বুঝতে হবে, প্রতিটি বাজে বলের করতে হবে পূর্ণ সদ্ব্যবহার। সেই লড়াইয়ে যারা এগিয়ে থাকবেন, তারাই ম্যাচ জয়ের পথে এগিয়ে যাবেন। এমন ধরণের উইকেটে দ্রুত রান তোলার অতীতের ভালো রেকর্ডের কারণেই কিনা, একরকম হিসেবের বাইরে থেকেই তাই দলে চলে এলেন সাব্বির রহমান। সাথে চার বছর পর ফিরলেন অভিজ্ঞ সেনানী আব্দুর রাজ্জাক।
উপমহাদেশেরই স্পিনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে স্পিনবান্ধব উইকেট বানানোর সময় ঝুঁকিটা যেমন ছিল তেমনি ছিল সম্ভাবনাও। ঝুঁকিটা ছিল নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেদেরই বন্দী হয়ে যাওয়ার। প্রতিপক্ষ শিবিরে যে আছেন রঙ্গনা হেরাথ এবং দিলরুয়ান পেরেরার মত দুইজন বিপদজনক স্পিনার। ঢাকা টেস্টেই অভিষিক্ত আকিলা ধনঞ্জয়ও ইতিমধ্যেই নিজের দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে।
ভয়টা ছিল তখনি কারণ মিরপুরের উইকেট যে হতে যাচ্ছে হেরাথ-দিলরুয়ানদের জন্য বিদেশের মাটিতে দেশী উইকেটের স্বাদ! বিপরীতে মিরাজ--তাইজুলদের সাথে রাজ্জাকের উপস্থিতিতেও বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ কিছুটা পিছিয়েই ছিল। ইনজুরির কারণে টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়া সাকিব হতে পারতেন এই উইকেটে বাংলাদেশের ট্রাম্পকার্ড। ফলে একদিকে যেমন ব্যাটিং নিয়ে শঙ্কা ছিল প্রতিপক্ষের স্পিন মোকাবেলায়, তেমনি দুশ্চিন্তা ছিল নিজেদের স্পিন দিয়ে লংকাবধেও।
অন্যদিকে সম্ভাবনাটাও ছিল বেশ। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাদা জার্সিতে ঘরের মাটিতে যে নতুন বাংলাদেশকে দেখা গিয়েছিল তাতে সাফল্য এসেছিল ঢাকা-চিটাগংয়ের স্পিনস্বর্গেই। তাই এমন উইকেট সফল হওয়ার ফর্মুলাটা ভালোই জানা ছিল তামিম-মুশফিকেদের। প্রথম দিন থেকেই স্পিনাররা উইকেট থেকেই সহায়তা পাবেন, চতুর্থ ইনিংসে ২৫০ রানের বেশি তাড়া করাটা হয়ে যাবে প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার। স্পিনারের জন্য কাজটা হল ধারাবাহিকভাবে লাইন লেন্থ বজায় রেখে বল করে যাওয়া। বাকি কাজটা করে দিবে উইকেটই। সাথে আচমকা লাফিয়ে ওঠা কিংবা নিচু হয়ে যাওয়া বলে উইকেট প্রাপ্তির সম্ভাবনা তো আছেই।
ব্যাটসম্যানদের দৃষ্টিকোণ থেকে কঠিন এই উইকেট মাটি কামড়ে পড়ে থাকা কিংবা উইকেট সেট হওয়ার চেষ্টা দুটোই বৃথা। উইকেটে টিকে থাকতে হবে রান করেই। ওভারে একটি বাজে বল পেলে কাজে লাগাতে হবে সেটিই। কেননা এই উইকেট সেট হওয়া বলে কিছুই নেই। ঘন্টাদুয়েক ক্রিজে কাটিয়ে দেয়া ব্যাটসম্যানও যেকোন সময়ে বিভ্রান্ত হবেন উইকেটের বিরূপ আচরণে। ইনিংসের শুরু থেকেই চারপাশে ঘিরে ধরা ফিল্ডারদের চাপ থেকে বেরিয়ে 'ক্যাল্কুলেটেড রিস্ক' আপনাকে নিতেই হবে। চার ছয়ের মোহ কাটিয়ে ভরসা রাখতে হবে মূল্যবান সিঙ্গেল-ডাবলসে।
গুরুত্বপূর্ণ টসটি দিনেশ চান্দিমাল জেতায় শ্রীলংকা পেয়েছিল প্রাথমিক স্বস্তি। আর বাংলাদেশের জন্য ছিল বার্তা, হেরাথ-দিলরুয়ান-ধনঞ্জয়দের সামলে চতুর্থ ইনিংসে জেতার জন্য লক্ষটা রাখতে হবে সামর্থ্যের মধ্যেই। রাজ্জাক দেখালেন পুরনো জাদু, তুলে নিলেন চারটি উইকেট। সমানসংখ্যক উইকেট নিয়ে তাইজুলও অবদান রাখলেন শ্রীলঙ্কাকে 'মাত্র' ২২২ রানে বেঁধে ফেলার। তবে সুযোগ ছিল আরো কমে আটকে দেওয়ার। শুরুর সাফল্যের পর বোলাররা খেই হারালেন কিছু সময়ের জন্য। ফিল্ডারদের মাঝে দেখা গেলো শিথিলতা। এই সুযোগে ১১০ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানো শ্রীলংকা শেষ চার উইকেট তুলে নিলো ১১২ রান। কে জানতো ঠিকঠিক এই রানগুলোই হবে শ্রীলংকার বড় লিডের উপলক্ষ, সাথে ম্যাচ ও সিরিজ জয়েরও মূল ভিত্তি!
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার পরেই শ্রীলংকার ২২২ রানকেই লাগছিলো যেন বিশাল কোন সংগ্রহ। অতিরিক্ত স্পিন আতংকেই কিনা, প্রথম দিনে বাংলাদেশের চারটি উইকেটের মাত্র একটি গেলো স্পিনারদের ঝুলিতে। লাকমাল তুলে নিলেন দুটি আর মুমিনুল হলেন শিশুতোষ ভুলে রান আউটের শিকার। রান নিতে নিতে মাঝপথ থেকেই গতি কমিয়ে ফেলা মুমিনুল ক্রিজে ফেরার আগেই হলেন রান আউট। রানটি সম্পূর্ণ না করে পেছনে না তাকিয়ে কি ভেবে করে গতি কমিয়ে দিয়েছিলেন মিমি? দ্বিতীয় ইনিংসের চিন্তা কি মাথায় জেঁকে বসেছিল প্রথম ইনিংসেই? সে প্রশ্নের উত্তর বোধকরি নেই তার কাছেও।
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আশা দেখাচ্ছিলেন লিটন আর ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি পাওয়া মিরাজ। অলরাউন্ডার থেকে ক্রমশ স্পিনার বনে যাওয়া মিরাজ আরেকবার দেখিয়ে দিলেন ব্যাট হাতেও তার দেওয়ার আছে অনেক কিছুই। তবে ওপর প্রান্তে দ্বিতীয় দিন সকালেই শুরু হয়ে গেল আশা যাওয়ার মিছিল। ১০৭ রানে ৫ উইকেট থেকে চোখের নিমিষেই ইনিংসটা গুড়িয়ে গেল ১১০ রানে। সেই ১১০ রানেই, যেখান থেকে রোশেন-দিলরুয়ানরা করেছিলেন নতুন শুরু সেখানেই স্বপ্নের সলিল সমাধি করলেন মাহমুদুল্লাহ-সাব্বিররা। হেরাথ-দিলরুয়ান আতংকের মাঝে লাকমল আর অভিষিক্ত ধনঞ্জয়ার দখলে গেল ছয়টি উইকেট। অতীত ইতিহাস মেনেই মনের বাঘেই খেয়ে ফেললো টাইগারদের।
তবুও আশা ছিল স্পিনাররা দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলংকাকে অল্পেই বেঁধে ফেলবেন আর বাংলাদেশের লক্ষ্যটা রাখবেন দৃষ্টিসীমার ভেতরেই। যদিও চার বছর আগের এই মিরপুরেরই স্মৃতি জানান দিচ্ছিল জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে বিশেষ কিছু। পাড়ি দিতে হবে কঠিন দুর্গম পথ। সেবার চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের দেয়া মাত্র ১০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছিল বাংলাদেশের। হারাতে হয়েছিল ৭টি উইকেট। সেদিন দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মুশফিকুর। এবারো তার দিকে অনেকটাই নির্ভর করছিলো বাংলাদেশের জয়ের আশা।
প্রথম ইনিংসে বড় লিড পেয়ে শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানদের খেলছিলেন অনেকটা নির্ভর হয়ে। অন্যদিকে শুরু থেকেই মিরাজ-তাইজুল-রাজ্জাকদের মাঝে ছিল প্রতিটি বলেই উইকেট নেয়ার তাড়না। ফলে প্রতি ওভারেই হচ্ছিল একের অধিক বাজে বল। ঠান্ডা মাথায় খেলে সহজেই শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা রান বের করে নিচ্ছিলেন আর ম্যাচ থেকে ছিটকে দিচ্ছিলেন বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসেই টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করা রাজ্জাক এদিন ছিলেন ভীষণ বিবর্ণ। নিজেকে প্রমানের তাগিদেই হয়তো করতে চাইছিলেন বেশি কিছু। ফলে পাঁচটি ভাল করলেও একটি বাজে বলেই সব চাপমুক্ত হওয়ার রসদ পেয়ে গেছেন শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা।
এক পেসার নিয়ে খেলা বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে এলেন মুস্তাফিজুরই। কাটার, স্লোয়ার আর আউটসুইংয়ের অপূর্ব প্রদর্শনীতে এক স্পেলে তুলে নিলেন ৩টি উইকেট। নিতে পারতেন লাকমলের উইকেটটিও যদিনা 'স্লিপ বিশেষজ্ঞ' হিসেবে দলে আসা সাব্বির সহজ ক্যাচটি কঠিন করে ফেলে দিতেন। ১৭৮ রানে পড়েছিল সেই ক্যাচ, রোশেন আর লাকমল মিলে এরপর যোগ করলেন আরো ৪৮টি রান। এমন উইকেটে ব্যবধান গড়ে দেয় ছোট ছোট এই জুটিগুলোই।
চতুর্থ ইনিংসে যখন বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ালো ৩৩৯ রানের। সবচেয়ে আশাবাদী মানুষটিও হয়ত জেনে গিয়েছিলেন এই টেস্ট জিততে হলে দরকার অতিমানবীয় নৈপুণ্য। অথচ ইনজুরির আঘাতে সেই 'অতিমানব' সাকিব আল হাসান তো দলেই নেই! তবুও যারা ছিলেন, সম্ভব ছিল তাদের মাঝেও কারো তেমন কিছু করে দেখানোর। সেজন্য প্রয়োজন ছিল একাগ্রতা, প্রয়োজন ছিল নিজেদের ওপর বিশ্বাসটা রাখা আর প্রয়োজন ছিল বুকের ভেতর "আমরা করবো জয়' এর মন্ত্রটাও। কিন্তু তার প্রতিফলন আর হল কোথায়? ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তামিম সাজঘরে।
ইমরুল খেলতে লাগলেন মেলায় হারিয়ে যাওয়া বালকের মত, যে কিনা জানেনা তাকে কি করতে হবে! না রক্ষণাত্ত্বক, না আক্রমনাত্বক, ইমরুল যেন খেলছিলেন 'নিজের খেলা'! তাইতো তেড়েফুঁড়ে ডাউন দ্যা উইকেটে গিয়ে হেরাথকে মাথার ওপর দিয়ে মারলেন ছয়। মিরপুরের প্রায় কালচে হয়ে যাওয়া এই উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে ৩৩৯ রান তাড়া করতে নেমে হেরাথকে ছয় - দৃশ্যটা যেন চোখের সামনে দেখেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে রিপ্লেতে দেখে ভ্রম ভাঙলো। হেরাথও হয়ত বুঝে গিয়েছিলেন ইমরুল খেলছেন তার নিজেরই অচেনা খেলা। তাই মাত্রই ছয় খাওয়া প্রায় একই জায়গায় পরের বলটি ফেললেন। বড় শট মারার পরের বল মারা যাবেনা - বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অলিখিত এই নিয়মে ইমরুল এক পা সামনে বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে গেলেন। স্লিপে সহজ ক্যাচ। রেগে ব্যাট দিয়ে সজোড়ে প্যাডে আঘাত করলেন ইমরুল। হয়ত আফসোস করছিলেন, কেন এই বলটিও সীমানাছাড়া করতে গেলেননা!
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্রাত্য মুমিনুল রান করছিলেন বলের সাথে পাল্লা দিয়ে। তাতে অবশ্য দোষের কিছু ছিলোনা, রান তো করতে হতোই। তবে আক্রমণ থেকে রক্ষণে যাওয়ার পথে তিনিও ইমরুলের মতোই প্রায় একই বলে একই আউট হয়ে গেলেন। দ্রুত প্রস্থান লিটনেরও। প্রেসবক্সে ততক্ষনে হিসেব গণনা শুরু হয়ে গেছে চা বিরতির পর খেলা গড়াবে কিনা! আশাবাদী একজন খেলা কাল সকালে গড়াতে পারে বলে যেন জনরোষের মুখেই পরে গেলেন। তাকে ভুল প্রমান করে নিমিষেই নেই মাহমুদুল্লাহ-সাব্বিরের উইকেট। লাঞ্চের জন্য ডাইনিংয়ে ততক্ষনে লাইন পড়ে গেছে। পোস্ট ম্যাচ কনফারেন্স ধরতে হবে যে! তবে বাংলাদেশ দলের তাড়াটা ছিল বোধহয় আরো বেশি। তাই টপাটপ উইকেট পতনে ১২৩ রানেই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়লো বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসও।
নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে গিয়ে নিজের নাকটা তো খোয়া গেলোই, রোখা গেলোনা পরের যাত্রাটাও। ঘরের মাটিতে বিদেশী সেজে বাংলাদেশ দল ধনঞ্জয়-হেরাথের স্পিন বিষে নীল হয়ে চার বছর পেল দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ হারের স্বাদ।
হাথুরু বাংলাদেশের মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন অনেকদিন হল। নতুন ঠিকানায় প্রথম মিশনেই এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সফল তিনি। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই উল্টোপথে হাঁটা বাংলাদেশ দল এখনো পায়নি পথের দিশারা। ত্রিদেশীয় সিরিজে দাপুটে শুরুর পর শেষ দুই ম্যাচের ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে সেটির শিরোপাও চলে গেছে হাথুরুর নতুন শিষ্যদের দখলে। ২০১৪ পরবর্তী বাংলাদেশ দলটার সাথে এই দলটিকে এখন বড্ড বেমানান লাগে। অথচ দলে আসেনি বড় কোন রদবদল। তাহলে গলদটা কোথায়? এই একটি প্রশ্নের মাঝেই লুকিয়ে আছে আরো অনেক প্রশ্ন। উত্তরগুলোর সন্ধান না করা গেলে সামনে হয়ত অপেক্ষা করছে এমন অজস্র মিরপুর।
- 0 মন্তব্য