দ্য টেস্ট অ্যা নিউ অ্যারা ফর অস্ট্রেলিয়া'স টিম - পর্ব ২
পোস্টটি ১৭৮৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
ব্লগের নীতিমালা
ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
বিশ্বকাপ শুরুর সময় গনিয়ে আসছে......
তাই ছয় সপ্তাহ পূর্বে খেলোয়াড়দের নিয়ে টিম মিটিংয়ে বসলেন কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। সেখানে ছিলেন এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা স্মিথ এবং ওয়ার্নার। কেপটাউন -কে ভুলে যেতে একটা লাইনে মর্মার্থ বুঝিয়ে দিলেন ল্যাঙ্গার -
"ইটস অ্যা ডার্ক টাইম ফর অ্যাভরিওয়ান"।
স্মিথকে সচরাচর যেমন মনে হয় - মুখে আলতো হাসি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। কিন্তু ওয়ার্নারকে দেখে মনে হচ্ছে বারো মাস ধরে মনের ভেতরে বয়ে চলা ঝড় উগরে দিতে ঝিম ধরে আছেন। শুরু হয় বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। বড় মঞ্চ - আগাম বড় মঞ্চের ছোঁয়া দিতে সহকারী কোচ করে বড় মঞ্চের নায়ক রিকি পন্টিংকে দলের সাথে যুক্ত করা হলো।
খেলোয়াড়দের চাঙা রাখতে একসাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছন ল্যাঙ্গার। খেলোয়াড় -দের উজ্জীবিত করতে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য এক অর্ভ্যথনার আয়োজন করেন। কোচিং স্টাফ-সহ সবাই মিলে অংশগ্রহণ করেছেন অর্ভ্যথনায়। এভাবে -ই চলেছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি। চিরশত্রু ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ। বল টেম্পারিং কান্ডের পর প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড দর্শকদের সামনে পড়বেন স্মিথ এবং ওয়ার্নার!
প্রথম ম্যাচ প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান - ওয়ার্নার যখন ব্যাট করতে নামছেন গ্যালারী থেকে দুয়োধ্বনি ঝড়ের বেগে আসতে লাগলো। তাৎক্ষণিক নিজেকে সামলে নিতে একটু সময় নিলেন ওয়ার্নার! সাত উইকেটের সহজ জয় দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয় অজিদের। ওয়ার্নার প্রাথমিক অবস্থা সামাল দিয়ে খেলেন ৮৯ রানের অপরাজিত ম্যাচজয়ী ইনিংস।
নটিংহ্যামে - নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় অজিদের। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে স্বভাবতই কিছুটা চাপে ওয়ার্নার। সাথে শেষ দুই ম্যাচে নিজের অচেনা চেহারায়। ম্যাচটার গুরুত্ব ওয়ার্নারের কাছে আকাশ-সমান। চারদিকের কথার ঝড় - নিজের কাছে নিজের চ্যালেঞ্জ। ওয়ার্নার নিশ্চয়ই শুনছেন। কিছুটা নার্ভাস শুরু - ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজের পুরনো রুপ দেখিয়েছেন।
৯৫ রানের মাথায় এক্সট্রা কাভারের উপর দিয়ে বলকে গ্যালারীতে আছড়ে ফেলে ওয়ার্নারের ট্রেডমার্ক সেলিব্রেশন।
"দিস হান্ড্রেড এন্ড ওয়ান মিনস ওয়ার্ল্ড টু হিম"।
ভাষ্যকারের এই ছোট্ট লাইনে ওয়ার্নারের জন্য ইনিংটার মাহাত্ম্য ফুটে ওঠে। ছয় মাসে আগেও যে দলকে কেউ গোনায় ধরে নাই। সেই তারাই গ্রুপ পর্বের নয় ম্যাচের সাতটিতে জিতে সেমিফাইনালে উঠে যায়।
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার আগে ড্রেসিংরুম হতাশায় নিমজ্জিত। দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য উসমান খাওজা আর শন মার্শ ইঞ্জুরীতে পড়ে ছিটকে গেছেন। দলকে আবার চাঙা করে তুলতে সবাইকে নিয়ে বসলেন ল্যাঙ্গার।
"এটি আমাদের জন্য ইমোশনাল মোমেন্ট। গত বারো মাসে - যাদের জন্য আজকে এই অবস্থানে, আমরা দলের সেই সেরা দুই প্লেয়ারকে হারিয়েছি। যারা দলে জায়গা ডিজার্ভ করে।"
সাথে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ের রসদও যোগান দিলেন এভাবে - নট টু প্লে ইমোশান; প্লে সিকিউর"।
জুলাই ১১, বার্মিংহাম।
"দি ওলডেস্ট অফ রাইভালরি ইন দ্য গেম ইটস ইংল্যান্ড এগেইনস্ট অস্ট্রেলিয়া। ইট ইজ ওয়াল্ড কাপ সেমিফাইনাল"। এভাবে -ই ম্যাচের শুরুর দৃশ্য ধরা পড়ে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিক বোলারদের তোপে ২২৩ রানেই অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। সেই রান ৮ উইকেট এবং ১০৭ বল হাতে রেখে সহজেই টপকে যায় ইংল্যান্ড। সাথে অজিদের ২০১৯ বিশ্বকাপ যাত্রার বিদায় ঘন্টাও বেজে যায়। নাথান লায়ন নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে-
"দ্যায়ার ওয়াজ অ্যা ড্রিম এন্ড দ্যাট টেকেন অ্যাওয়ে"
"দ্য অ্যাশেজ ইজ জাস্ট স্পোর্টস গ্রেটেস্ট রাইভালরি"।
এ বাক্যের সাথে শুরু হয়ে যায় অ্যাশেজ দামামা।গ্যালারী ভর্তি লাখো দর্শকের গগনবিদারী চিৎকার। কথার লড়াই, শরীরী ভাষা, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আর কিংবদন্তী হয়ে উঠার মঞ্চ - দ্য
আল্টিমেট টেস্ট ফর অ্যা অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড প্লেয়ার।
এজবাস্টন, বার্মিংহাম প্রথম টেস্ট।
পঞ্চাশ হাজার দর্শকের দুয়োধ্বনি শুনতে শুনতে ময়দানি লড়াইয়ে নামছেন - কেপটাউনে বল ট্যাম্পারিং কান্ডের মূল হোতা ক্যামেরন ব্যানক্রফট এবং ডেভিড ওয়ার্নার। সেদিনের পর এই প্রথম দুজন একসাথে বাইশ গজে। জুটি টিকলো না বেশীক্ষণ। ওয়ার্নারের অ্যাশেজ বিভীষিকার প্রথম ধাপ। উইকেটে আসলেন স্টিভ স্মিথ। প্রত্যাবর্তনের টেস্ট তার জন্য। চিরশত্রুর ঘরের মাঠে রাজার রুপকথা প্রত্যাবর্তন হবে - এই গল্প ক্রিকেট বিধাতা নিজ হাতে লিখেছেন নিশ্চয়ই!
৯৮ রানের মাথায় বেন স্টোকসের বলটাকে কাভারের দিকে ঠেলে দিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পোঁছালেন স্মিথ। ড্রেসিংরুমে সতীর্থ আর কোচিং স্টাফদের উল্লাস দেখে বিশ্বজয়ের উদযাপন ভেবে বসবেন না! সেঞ্চুরী তো কত হয় কিন্তু এই সেঞ্চুরীর আলাদা মাহাত্ম্য আছে সেটা প্রকাশে বোধহয় এমন বিশ্বজয়ী উল্লাস!
ব্যাট দিয়ে অভিবাদনের জবাব দেয়ার আগে দু'পা এগিয়ে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন স্মিথ। তারপর ব্যাটটাকে উঁচু করে অভিবাদনের জবাব দিলেন। নিজের স্বভাবজাত উদযাপনের সাথে আরো একবার ব্যাট তুললেন গ্যালারীর উদ্দেশ্য। ক্ষণিকের এই কয়েক মিনিটে তৃতীয়বার ব্যাট তুললেন আর চুমু খেলেন নিজের হ্যালমেটে। এতটা আবেগ এতটা ভালোবাসা দিয়ে সেঞ্চুরী উদযাপন সচরাচরদেখার সৌভাগ্য হবে না।
প্রতিপক্ষ, দর্শক, দুয়োধ্বনি সবকিছুর বিপরীতে দাঁড়িয়ে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৪৪ এবং ১৪২ রানের দুটি ইনিংস খেললেন রাজা। বার্মিংহাম থেকে ঘোষণা দিলেন প্রত্যাবর্তনের। প্রথম টেস্ট ২৫১ রানে জিতে ১-০ তে এগিয়ে যায় অজিরা। এতদিন পড়ে জেনেছি মাঠের বাইরে মার্নস লাবুশানে এবং স্টিভ স্মিথের কেমিস্ট্রির কথা। এবার সত্যি সত্যি দেখছি দুজনের কেমিস্ট্রি জমে উঠার মুহূর্তগুলো।
লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড, লর্ডস।
দ্বিতীয় টেস্ট - ২০১৯ অ্যাশেজ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে স্মিথ বীরত্বগাঁথা আর স্মিথ সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবে। জোফরা আর্চারের বাউন্সারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েও থেমে যান না স্মিথ। পরক্ষণে নেমে খেলেন ৯২ রানের মহামূল্যবান ইনিংস। আউট হওয়ার পর ড্রেসিংরুমে স্মিথের অভিব্যক্তি দেখে নিজেকে আবার নতুনভাবে আবিষ্কার করি। খেলাটার প্রতি কতটা ভালোবাসা, একাগ্রতা আর দলের প্রতি একনিষ্ঠতা থাকলে এরকম অভিব্যক্তি আসতে পারে তা শুধু উপলব্ধির বিষয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে স্মিথের পরিবর্তে ইতিহাসের প্রথম 'কনকাশন সাবস্টিটিউট' হিসেবে নেমে নিজেই ইতিহাস হয়ে গেলেন মার্নস লাবুশানে। দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করে অ্যাশেজ সিরিজে ১-০ এগিয়ে থাকলো অস্ট্রেলিয়া।
হেডিংলি, লিডস।
তৃতীয় টেস্টের জন্য নিজেকে ফিট ঘোষণায় স্মিথ বরাবরের মতোই সাহসিকতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। দলের স্বার্থে হাফ-ফিট স্মিথ নিজেকে সরিয়ে নিলেন। বিবরণীতে জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেন স্মিথ খেলতে চাইলে তাকে 'না' করার উপায় ছিল না।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৯ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট মাত্র ৬৭ রানে। চতুর্থ ইনিংসে ৩৫৮ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ইংল্যান্ডের সামনে। প্রায় হাতের মুঠোয় পুরে ফেলা অ্যাশেজ শিরোপা ছোট ছোট মুহূর্তের ভুলে ফসকে যায় বেন স্টোকস বীরত্বগাঁথায়। বেন স্টোকসের সেই মহাকাব্যিক ইনিংস। এক উইকেটের জয় দিয়ে সিরিজে ১-১ সমতা আনে ইংল্যান্ড।
পুরোপুরি বিমর্ষ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা, পিনপতন নীরবতা ড্রেসিংরুমে। এমন হারে স্বর হারিয়ে ফেলেছে ক্রিকেটাররা। টিম মিটিংয়ে ল্যাঙ্গার -
"এই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যেতে হবে"
ভুল শুধরাতে দেখালেন ইংল্যান্ডের শেষ উইকেট জুটির ক্লিপ। দেখালেন কোথায় কোথায় সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
ওল্ডট্রার্ফোড, ম্যানচেস্টার।
চতুর্থ টেস্টে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেন স্টিভ স্মিথ। এটা কোন রুপকথার গল্প নয়। এটা স্টিভ স্মিথের ফেরার গল্প। আবার ফিরেই দ্বি-শতক করলেন। স্মিথের দ্বি-শতক ২১১ রানের সুবাধে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪৯৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বির্পযয়ের মুখে ৮২ রানের আরেকটি কার্যকরী ইনিংস খেললেন স্মিথ। ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ৩৮২ রান।
মেঘলা আকাশের মতো ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো ম্যাচে অষ্টম উইকেটে শেষ সেশনে দাঁড়িয়ে গেলেন ক্রেইগ ওভারটন এবং জ্যাক লিচ। জ্যাক লিচকে সিলি পয়েন্টে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙ্গেন লাবুশেন। ইংল্যান্ডের কপিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিতে বেশী সময় নিলেন না হ্যাজেলউড। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললেন ক্রেইগ ওভারটনকে। মর্যাদার অ্যাশেজ ট্রফি নিজেদের কাছে রাখার উদযাপন আর উল্লাস অজিদের চোখেমুখে।
নতুন যুগের উল্লাস....ওহ নো...রিভিউ নিলেন ব্যাটসম্যান.... উৎকন্ঠা ড্রেসিরুম থেকে কাঁধে হাত রেখে সারিবদ্ধ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের মাঝে।
কা'মন... দ্যাটস আউট..দ্যাটস আউট.. দ্যাটস আউট প্লিজ এই শব্দগুলো ভেসে আসছে ড্রেসিংরুম থেকে।
যেসব জিনিস কখনো -ই দেখা বা জানা হতো না সেসব দেখছি! থার্ড আম্পায়ারের ভয়েস - ইমফ্যাক্ট ইন লাইন....উইকেটস হিটিং.....মাই ডিসিশন ইজ আউট... বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়লো অজিরা।
এ উল্লাস মর্যাদার। এ উল্লাস অ্যাশেজ ট্রফির - যে ট্রফি অজি আর ইংলিশদের কাছে বিশ্বকাপ ট্রফির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেটার মর্যাদা সবকিছুর উপরে তাদের কাছে। সেই ট্রফি নিজেদের কাছে ধরে রাখার উল্লাস।
শেষ টেস্ট অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৫ রানে হারিয়ে সিরিজ সমতায় রাখতে সক্ষম হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ২৩ রানে ব্রডের বলে বেন স্টোকসকে ক্যাচ দিয়ে স্টিভ স্মিথ যখন সাজঘরে ফিরবেন লর্ডসের গ্যালারী তখন স্মিথ বন্দনায় করতালিতে মুখরিত। হার্শা ভোগলের ভাষায় -
"অল দোয়জ বুচ হ্যাভ টার্ন ইনটু ওয়াও"।
টেস্ট শেষে অজি ড্রেসিংরুমে দু'দলের খেলোয়াড়দের সেদিনের দৃশ্যগুলো প্রমাণ করে ক্রিকেট শুধু বাইশ গজে লড়াইয়ের দামামা নয়।ক্রিকেট একে অপরকে শ্রদ্ধার। ক্রিকেট ভাতৃত্বের।ক্রিকেট মেলবন্ধনের। সাথে নিজের যোগ্যতায় শ্রদ্ধা আদায় করে নেয়ারও।
- 0 মন্তব্য