এ জার্নি টু মেলউড
পোস্টটি ২০৬৬ বার পঠিত হয়েছেলিভারপুল শহরের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা 'ওয়েস্ট ডার্বি'তে বিশালাকার জায়গা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ট্রেইনিং গ্রাউন্ড 'মেলউড'। ট্রেইনিং গ্রাউন্ড'কে একাডেমির হেডকোয়ার্টার কিংবা এনফিল্ডের কাছে কেন রাখা হলোনা- তা নিয়ে আছে এক বিস্ময়। তবে সে বিস্ময়ের মোটামুটি একটা জুতসই সমাধান দিয়েছেন বিল শ্যাঙ্কলি, তা আমরা জানতে পারবো খানিক পরেই।
মেলউড নামকরণের গল্পঃ
মেলউডে মূলত একটি স্কুল ছিলো। স্থানীয় সে স্কুলের নাম ছিলো 'সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার স্কুল'। মাঠ'টি ব্যবহার করা হতো স্কুলের প্লে-গ্রাউন্ড হিসেবে। মেলউড নামকরণ হওয়ার পিছনে রয়েছে সুন্দর এক ঘটনা। সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার স্কুলে সেসময় ছেলেদের পাঠদান করাতেন 'ফাদার মেলিং' এবং 'ফাদার উডলক'। তারা পাঠ্যক্রমের বাইরে ছেলেদের ফুটবল খেলা শেখাতেন। খৃষ্ট ধর্মালম্বীদের গুরু সেই দুই ফাদারের মৃত্যুর পর, তাদের স্মরণার্থে ট্রেইনিং গ্রাউন্ডের নামকরণ করা হয় মেলউড। ফাদার মেলিং এর মেল এবং ফাদার উডলক এর উড- এ দুয়ে হয় মেলউড।
মেলউডের পূর্বকথাঃ
১৯৫৯ এর আগ পর্যন্ত মেলউডের অবস্থা ছিলো শোচনীয়। পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গ্রাউন্ডে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হচ্ছিলো। সে অবস্থা থেকে এ যাত্রায় রক্ষা করলেন সাবেক স্কটিশ ফুটবলার ও তৎকালীন লিভারপুল ম্যানেজার বিল শ্যাঙ্কলি৷ তার হস্তক্ষেপে মেলউড গ্রাউন্ডের সংস্কার করা হয়। শ্যাঙ্কলি সেসময় অদ্ভুত এক উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা এখনো পর্যন্ত মেনে চলা হয়। শ্যাঙ্কলি চাইতেন সব প্লেয়াররা এনফিল্ডে এসে একত্রিত হবে, তারপর ট্রেইনিং কস্টিউমস পরে বাসে করে শর্ট-ট্রিপে মেলউডে পৌঁছাবে। ট্রেনিং শেষ হলে আবারো এনফিল্ডে ব্যাক করবে এবং খাবার সেরে নিবে।
মিলেনিয়াম প্যাভিলিয়নঃ
২০০১ সালের জানুয়ারিতে লিভারপুল কোচ জেরার্ড হ্যোলিয়ারের উদ্যোগে মিলেনিয়াম প্যাভিলিয়নের কাজ শুরু হয়। মিলেনিয়াম প্যাভিলিয়ন মূলত অত্যাধুনিক ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি ব্যবস্থা। যেখানে কোচ এবং প্লেয়ারদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে৷ আমন্ত্রিত অতিথি দর্শকদের কথা চিন্তা করে ছোট একটি অংশ রাখা হয়েছে এতে। প্লেয়াররা সকাল ৯ টায় ট্রেইনিং করতে আসতো এবং দুপুর পর্যন্ত ট্রেনিং করে চলে যেতো। আবার বিকেলের সেশনে শুরু হতো সন্ধ্যায়।
ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটিঃ
মেলউডে বর্তমানে অত্যাধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ট্রেইনিং ফিল্ড ৩ টা ভাগে বিভক্ত। গ্রাউন্ডের সাথেই রয়েছে অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম ও ফিটনেস সেন্টার। ঢুকেই ডান পাশে রয়েছে মিডিয়া সেন্টার। প্লেয়ারদের খাবার-দাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট। তাছাড়া ড্রেসিংরুমের সাথে রয়েছে গোসল সেরে নেয়ার ব্যবস্থাও।
ছবি গ্যালারি:
- জিমনেসিয়াম-
- চ্যাম্পিয়ান্স ওয়াল-
- ট্রেইনিং গ্রাউন্ড-
মেলউড অধ্যায়ের সমাপ্তিঃ
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে লিভারপুল ঘোষণা দেয় তারা মেলউড থেকে তাদের ফাস্ট-টিম ট্রেইনিং গ্রাউন্ড ওয়েস্ট ডার্বির কির্কবিতে সরিয়ে নিবে। মেলউড হবে আবাসন প্রকল্পের আওয়াতাদিন। কির্কবিতে অবকাঠামো নির্মাণকাজের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করবে ক্লাব এবং স্পন্সর প্রতিষ্টানগুলো। ২০১৯-২০ মৌসুমেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। আর তা হলে মেলউড থেকে দীর্ঘদিনের স্মৃতি মুছে ফেলতে হবে অলরেডদের।
দেখা পেতে পারেন ফুটবলারদের;
লিভারপুল টিমের সাথে দেখা করতে হলে আপনাকে সকাল ৯:৪৫-১০ টার ভেতরে পৌঁছে যেতে হবে মেলউডে। বাস থেকে নামার সময় দেখা হয়ে যেতে পারে আপনার প্রিয় তারকার সাথে। তবে তাতে নিরাপত্তা কর্মীদের বাঁধার মুখে পড়ার সম্ভাবনা জোরালো...
- 0 মন্তব্য