• ফুটবল

স্টিভেন জেরার্ড - জিরো হেটার্স প্লেয়ার

পোস্টটি ৯৩৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

১৯৮০ সালের ৩০ শে মে মার্সিসাইডে বাবা পল জেরার্ড আর মা জুলি আন জেরার্ডের ঘরে জন্ম স্টিভেন জর্জ জেরার্ডের । "ক্লাবফুট" নামক এক জন্মগত রোগ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন জেরার্ড, যার ফলে তাঁর পায়ের পাতা ছিল বাঁকানো। পরবর্তীতে এই রোগ সেরে যাওয়ার পরে শিশু অবস্থাতেই বেশ কয়েকবার ইঞ্জুরিতেও পড়েন। সবকিছু থেকেই সেরে উঠেছিলেন জেরার্ড। ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে খেলতে গিয়ে একবার এক বাগানের বেড়ায় আটকে গিয়েছিল বল। সেই বল লাথি মারতে গিয়ে জেরার্ড লাথি মেরে বসেছিলেন একটা কাঁটা বেলচাতে, সেটা ঢুকে গিয়েছিল জেরার্ডের বুড়ো আঙ্গুলে। ডাক্তার বলেছিলেন আঙ্গুলটাই নাকি ফেলে দিতে হবে। জেরার্ডের ফুটবল ক্যারিয়ার বলতে গেলে শুরুর আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার পথে, অন্য উপায় খুঁজতে লাগছিলেন তাঁর মা-বাবা। শেষমেশ বিকল্প পদ্ধতিতে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেন স্টিভেন জেরার্ড। পেশাদার ফুটবলে শুরুটা করেছিলেন ১৮ বছর বয়সেই, লিভারপুলের জার্সিতে। ২০০৩ সাল থেকে অলরেডদের হয়ে ক্যাপ্টেনসি করতে শুরু করেন। ২০০৫ সালের লিভারপুলের হয়ে জিতেন চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। সেই আসরের ফাইনাল ম্যাচে ছিলেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। মিলানের বিপক্ষে ৩ গোলে পিছিয়ে পড়েও শিরোপা জয়ের সেই ঐতিহাসিক ম্যাচটি "মিরাকল অফ ইস্তানবুল" হিসেবে এখনো পরিচিত ফুটবল ভক্তদের কাছে। ঠিক তার পরের বছর এফএ কাপ ফাইনালে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে সেই ফাইনালটি পরিচিত "দ্য জেরার্ড ফাইনাল" হিসেবে। এই দুই ফাইনালই দুই টুর্নামেন্টের বিখ্যাত ফাইনাল হয়ে আছে এখনো। অলরেডদের হয়ে ১৭ সিজনের ক্যারিয়ারে জিতেছেন ২টি এফএ কাপ, ৩ টি লিগ কাপ, ১ টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ১ টি কমিউনিটি শিল্ড, ১ টি উয়েফা কাপ এবং ১ টি উয়েফা সুপার কাপ। "দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ" কর্তৃক লিভারপুলের সর্বকালের সর্বসেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন জেরার্ড। অনেক দলগত এবং ব্যাক্তিগত অর্জনের পরেও জেরার্ড কখনোই প্রিমিয়ার লিগ জিততে পারেননি, সর্বোচ্চ সাফল্য লিভারপুলের হয়ে তিনবার রানার্সআপ হওয়া। ২০১৫ সালে লিভারপুল ছেড়ে পারি জমান মেজর লিগ সকারের ক্লাব এলএ গ্যালাক্সি তে। ২০১৬ সালে অবসরের আগ পর্যন্ত এক সিজনের চেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন সেখানেই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইংল্যান্ডের হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন জেরার্ড। ২০১২ ইউরো তে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পান, সে বছরের ইউয়েফা টিম অফ দ্য টুর্নামেন্টেও জায়গা পেয়েছিলেন। ২০১৪ বিশ্বকাপেও ছিলেন থ্রি লায়ন্সদের নেতৃত্বে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান জেরার্ড। ফুটবল ক্যারিয়ার শেষে কোচিংয়ে নাম লেখান জেরার্ড। লিভারপুলের ইয়ুথ একাডেমিতেই শুরু জেরার্ডের কোচিং ক্যারিয়ার। ২০১৭-১৮ মৌসুমে ছিলেন লিভারপুলের অ-১৮ দলের দায়িত্বে। পরের মৌসুমে দায়িত্ব নেন স্কটিশ প্রিমিয়ারশিপের ক্লাব রেঞ্জার্সের। এখনো পর্যন্ত আছেন রেঞ্জার্সের দায়িত্বেই। জেরার্ডের কোচিং ক্যারিয়ারের জন্য রইল শুভকামনা।