অ্যাটাকিং বিল্ডআপে লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাকঃ ট্যাকটিক্যাল বিশ্লেষণ
পোস্টটি ৩৫৮৪ বার পঠিত হয়েছেজানুয়ারিতে ব্রামল লেইনে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারানোর পরে পেপ গার্দিওলার কাছে দলে আইমেরিক লাপোর্তের গুরুত্ব জানতে চাওয়া হয়েছিল। প্রায় পাঁচ মাসের চোট কাটিয়ে এদিন একাদশে ফিরে এসেছিলেন এই ফরাসি। “তাঁর এমনকিছু আছে যেটা স্কোয়াডের অন্য কারো মধ্যে নেই”, বলছিলেন সিটি ম্যানেজার, “সে একজন লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাক”।
“খেলাটা আরো দ্রুত ও ভালো করতে বিল্ড আপের সময় অনেক কিছুই আমরা চাইলেও পারি না, কারণ এই নয় যে স্কোয়াডের অন্য খেলোয়াড়রা খারাপ বরং লাপোর্তেই এই দলের একমাত্র বাঁ পায়ের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার”।
সিটির অ্যাটাকিং বিল্ড আপে লাপোর্তে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তার কারণ দেখিয়েছিলেন বটে কিন্তু লেফট ফুটেড হওয়ায় কিভাবে সুবিধা পাচ্ছেন তার বিষদ ব্যাখ্যায় জাননি। আমরা এই আর্টিকেলে কিছুটা এনালাইসিস করে দেখি কেন বাম পেয়ে সেন্টারব্যাকরা খেলার বিল্ড আপে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
কারণ দ্বিমুখীঃ পাসিং লেইন এবং ট্র্যাজেক্টরি।
গত ডিসেম্বরে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেড এর বিপক্ষে আর্সেনালের ৩-১ ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচে কেয়ারটেকার ম্যানেজার ফ্রেডি লিউনবার্গ ক্যালাম চেম্বার্স এর সাথে লেফট সেন্টারব্যাক হিসাবে ডান পায়ের সক্রাতিস পাপাস্থোপুলোস কে নামিয়েছিলেন। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের সেন্টারব্যাকদের মধ্যে মাঠের বাম পাশে বাম পায়ে পাস দেওয়ার দিক থেকে পার্সেন্টেজের হিসাবে সর্বনিম্ন রেকর্ড তার।
রাইট ফুটেড দের চেয়ে লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাক কেন লেফট সেন্টারব্যাক হিসেবে পাসিং এ বেশী স্বচ্ছন্দ ও কার্যকর তার একটা উদাহরণ দেখে আসি। সক্রাতিস এর পায়ে বল থাকা অবস্থায় ফেলিপে অ্যান্ডারসন প্রেসিং করছিলেন। সক্রাতিসের বামে টাচলাইনের কাছাকাছি রয়েছেন সতীর্থ কাইরান টিয়ার্নি। যদি সক্রাতিস ডান পায়ের ইনস্টেপ বা ভেতরের পাশ দিয়ে পাস দেওয়ার চেষ্টা করেন, বলের ট্র্যাজেক্টরি হবে কনভেক্স বা উত্তল এবং লেইনটি তূলনামূলকভাবে প্রেস করতে থাকা তিন ওয়েস্টহ্যাম প্লেয়ারের কাছে হবে। কিন্তু বা পায়ের ইনস্টেপ দিয়ে পাস দিলে ওয়েস্টহ্যাম ট্রায়োর থেকে দূরে থাকবে ট্র্যাজেক্টরি।
টিয়ার্নির কাছে বাম পায়ে পাস দিলেই ইন্টারসেপ্টেড হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। কিন্তু সক্রাতিস ডান পায়ের হওয়াতে এবং ওয়েস্টহ্যাম ট্রায়ো যেহেতু পাসিং লেইন বন্ধে ভালো শেইপ মেইন্টেইন করছিলো, সক্রাতিস শেষ পর্যন্ত লেনোর কাছে ব্যাকপাস দিতে বাধ্য হন।
ম্যাচের কিছুক্ষণ পরেই আরেকটা ভালো উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়। সক্রাতিস (৫নং জার্সি) যখন চেম্বার্সের কাছ থেকে পাসটি রিসিভ করেন তার বডি শেইপ স্কোয়ার-অন অবস্থায়। টোরেইরা (১১নং জার্সি) এর নজর বলের দিকে নেই আর লেফটব্যাক কোলাসিনাচ দৃশ্যপটেই নেই। ওয়েস্টহ্যাম ফরোয়ার্ডের প্রেসিং এর কারণে সক্রাতিস লেনোকে ব্যাকপাস দিতে বাধ্য হন। অথচ একজন ন্যাচারাল লেফট-ফুটার এর বডি শেইপ আরো ওপেন হতো এবং বলটা ছেড়ে দিয়ে বাম পাশের বৃত্তচিহ্নিত স্পেসের সুবিধা নিয়ে বল সামনে বাড়াতে পারতো।
আর্সেনালের বিল্ডআপ এর এই সমস্যা যে কেবল সক্রাতিস এর জন্যে হচ্ছে তা নয়। আরেকটি উদাহরন যেখানে বল এখন টোরেইরার পায়ে। যদিও উরুগুয়াইয়ান একজন মিডফিল্ডার, সেন্টারব্যাক নন। কিন্তু ডান পায়ে না দিয়ে বাম পায়ে পাস দিলে কি সুবিধা পেতেন তা একটু আমরা বিশ্লেষণ করে দেখবো।
টোরেইরা ডান পায়ে টিয়ার্নিকে পাস দিলেন। প্রথমার্ধে এরকম খুব অল্প কয়েকবারই ঘটেছে যখন বাম পাশের পাসিং লেইন উন্মুক্ত ছিল। অন্যথায় রবার্ট স্নডগ্রাস দুর্দান্ত খেলে বাম পাশ থেকে আর্সেনালের আক্রমণ অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন বলা যায়। ওয়েস্টহ্যাম ক্যাপ্টেন মার্ক নোবল ওজিল (বৃত্তচিহ্নিত) কে দুর্বল মার্কিং করছেন। আর্সেনাল যদি ঠিকঠাক খেলতে পারে, একটা গোল থ্রেটেনিং পজিশন তৈরি হতে পারে।
স্নডগ্রাস টিয়ার্নিকে প্রেস করতে শুরু করেন। বলের ট্র্যাজেক্টরি ছিল সাইডলাইনের দিকে। কাজেই সামনের স্পেস কাজে লাগাতে হলে টিয়ার্নিকে প্রথমে বল রিসিভ করে এরপর সামনে আক্রমণে যেতে হবে।
কিন্তু এই বল রিসিভ করার মধ্যেই স্নডগ্রাস টিয়ার্নির কাছে চলে আসেন। ফলে টোরেইরাকে ব্যাকপাস দিতে বাধ্য হন। ওজিল এখনো ফ্রি ও ফাঁকা জায়গায়। কিন্তু টোরেইরা বা টিয়ার্নির কেউই তাকে পাস দিতে পারলেন না।
বাস্তবে, বল অবশেষে ওজিলের পায়ে পৌঁছানোর আগে আর্সেনালের আরও আটটি পাস এবং ৩০ সেকেন্ড সময় বেশী লাগে। মুভমেন্টের শুরুতে ওজিল ওয়েস্টহ্যাম এর ডিফেন্স এবং মিডফিল্ড লাইনের মাঝখানে ছিলেন। কিন্তু এখন ওজিল বল পেলেন মিডফিল্ড লাইনের ঠিক পিছনে যা তূলনামূলকভাবে অনেক কম থ্রেটেনিং পজিশন।
এখন এই পরিস্থিতিটাই একটু কল্পনায় নতুন করে সাজাই যেখানে টিয়ার্নি বলটা পাবেন একজন লেফট ফুটারের কাছ থেকে। এক্ষেত্রে বলের ট্র্যাজেক্টরি সাইডলাইনের দিকে না হয়ে সামনের দিকে হতো এবং আর্সেনাল লেফটব্যাক স্বাভাবিক গতিতে রানিং এ থাকা অবস্থাতেই বল পেতেন। ফলে মূল খেলায় বল রিসিভ করতে যে সময় লেগেছে সেটা নষ্ট হতো না, স্নডগ্রাস প্রেসিং এর সময় পেতেন না এবং একটিমাত্র পাসের মাধ্যমেই ছয় ওয়েস্টহ্যাম খেলোয়াড় সাময়িকভাবে বলের পেছনে পড়ে যেতেন।
এই পরিস্থিতিতে ওজিলের কাছে বল গেলে তার সামনে স্পেস বন্ধ করার জন্যে একজন ওয়েস্টহ্যাম ডিফেন্ডারকে লাইন ছেড়ে এগিয়ে আসতে হতো, ফলে একাধিক সম্ভাব্য স্পেস তৈরি হতে পারতো যার প্রতিটি থেকেই ভালো আক্রমণ হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু কিছুই হলো না শুধুমাত্র প্রথম পাসটি রাইট ফুটেড হওয়ার কারণে।
fbref এর ডাটা অনুযায়ী, এই ম্যাচে চেম্বার্স-সক্রাতিস সমন্বিতভাবে ১৭৭টি পাস দিয়েছেন যা আর্সেনালের ২০১৯-২০ মৌসুমে ফোর ম্যান ব্যাকলাইনে খেলা ম্যাচগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। স্বাভাবিকভাবে ধরে নেওয়া যায় তারা বল সামনে বাড়ানোর অনেক সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দুইজনে মাত্র দুইটি প্রোগ্রেসিভ পাস দিয়েছেন (অপোজিশন বক্সে পাস কিংবা পূর্ববর্তী ছয়টি পাসের চেয়ে কমপক্ষে দশ মিটার লম্বা ফরোয়ার্ড পাস) আর প্রতিপক্ষের ফাইনাল থার্ডেও পাসের সংখ্যা মাত্র দুই।
এই সেন্টারব্যাক ডুয়ো খেলালে নিচ থেকে আক্রমণ গড়ে উঠার হার অনেক কমে যায় বিধায় জানুয়ারী ট্রান্সফার উইন্ডোতে মিকেল আরটেটা একজন লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাক চেয়েছিলেন। পরে আর্সেনাল ফ্ল্যামেঙ্গো থেকে পাবলো মারি এবং এই গ্রীষ্মে লিলে থেকে গ্যাব্রিয়েলকে সাইন করায় যারা দুইজনেই ন্যাচারালি লেফট ফুটেড। মারি আসার পরে, তার সম্পর্কে আর্টেটার বক্তব্যে যেন গার্দিওলার কথাই প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। “মারি আমার ব্যাকলাইনে ভারসাম্য এনেছে”, বলছিলেন আরটেটা, “সে মাঠে নতুনত্ব ও বিকল্প এনে দেয় ও মাঠ বড় করে খেলতে সাহায্য করে"। মার্চ মাসে ওয়েস্টহ্যামের সাথে ফিরতি ফিক্সচারেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে উঠে। এদিন মারি ডেভিড লুইজের সাথে জুটি বেঁধেছিলেন যা ছিল আর্সেনালের মৌসুমে প্রথম ন্যাচারাল লেফট এবং রাইট ফুটেড সেন্টারব্যাক জুটি।
এই ম্যাচের একটা সিচুয়েশন দেখে আসি যখন গ্রানিত শাকা লেফটব্যাক পজিশনে চলে গিয়েছেন এবং সেই ম্যাচের মূল লেফটব্যাক বাকায়ো সাকা ওভারল্যাপ করে উঠে গেছেন। মারি ন্যাচারাল লেফট ফুটেড হওয়াতে তার পাসের ট্র্যাজেক্টরি হয়েছে আগের উল্টো যা ওয়েস্টহ্যামের মিডফিল্ড লাইনের পিছনে ফাইনাল থার্ডে সাকাকে খুঁজে নিয়েছে। অর্থাৎ মারির উপস্থিতি মাঠের বামপাশে আর্সেনালকে ভারসাম্য এনে দিয়েছে।
সিটিতে গার্দিওলা লাপোর্তের লেফট ফুটেড পাসিং স্কিল কিভাবে ব্যবহার করে তা দেখে থাকলে মারির এই পাসে আশ্চর্য হওয়ার কথা নয় আপনার। গত মৌসুমের শুরুতে স্পার্সদের সাথে ইত্তিহাদে ২-২ গোলের ম্যাচে লাপোর্তে ডিফেন্সের বাম পাশ থেকে নিয়মিতই লেফট ফুটেড প্রোগ্রেসিভ পাসের মাধ্যমে ফাইনাল থার্ডে বল পৌঁছে দিয়েছেন।
লাপোর্তে প্রথমে জিনচেংকোকে পাস দেন। ফ্রেঞ্চম্যানের কাছ থেকে পাস পাওয়ার ঠিক ৬ সেকেন্ডের মাথায় জিনচেংকো স্টার্লিং কে গোলে শট নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেন।
এর ৯০ সেকেন্ড এরও কম সময়ের মধ্যে লাপোর্তে আবার ফাইনাল থার্ডে পাস দেন, এবার সরাসরি স্টার্লিংকেই।
এবং এর ঠিক তিন মিনিট পরেই আবারো। এবার জিনচেংকো ডিকয় হিসেবে সেন্ট্রালি সরে আসেন, সরিয়ে আনেন তার মার্কারকেও। ফলে লাপোর্তে আবারও স্টার্লিংকে দেওয়ার জন্যে ফ্রি পাসিং লেইন খুঁজে পান। অথচ রাইট ফুটেড কেউ হলে তার জন্যে পাসিং লেইন উন্মুক্ত থাকতো না।
শুধুমাত্র গ্রাউন্ড পাসের ক্ষেত্রেই যে মাঠের বামপাশে লেফট ফুটাররা সুবিধা পান তা নয়, লং এয়ার পাসেও বাড়তি সুবিধা আদায় করা সক্ষম এক্ষেত্রে। একটা উদাহরণ দেখি। ওয়েস্টহ্যামের মিডফিল্ড লাইনের মাথার উপর দিয়ে পিয়েরে-এমরিক অবামেয়াং এর উদ্দেশ্যে মারি বল বাড়ালেন।
ন্যাচারাল ফ্লাইটের কারণে বলটা স্পিন করে টাচলাইনের দিকে সরে গেছে। অবামেয়াং এর গোলমুখী দৌড় এর জন্যে হয়তো এটি নিখুঁত বল নয়। কিন্তু মাঠের বামপাশে প্রচুর স্পেস রয়ে গেছে যা অবামেয়াং এর বল রিসিভ এবং কন্ট্রোল করার জন্য প্রয়োজনীয়।
আবারো fbref এর তথ্যমতে এই ম্যাচে আর্সেনালের দুই সেন্টারব্যাক সমন্বিতভাবে ১৪৬ টি পাস দিয়েছেন যার মধ্যে আটটি ছিল প্রোগ্রেসিভ এবং আটটি প্রতিপক্ষের ফাইনাল থার্ডে। আগের ম্যাচের তুলনায় উন্নতি লক্ষণীয়। ডিফেন্সিভ জুটির পরিবর্তনের জন্যে কেবল পাসিং পারফর্ম্যান্সের উন্নতি হয়েছে তা নয়, বরং আর্সেনালের বল ডিস্ট্রিবিউশন ও মাঠের খেলায়ও স্পষ্ট প্রভাবে পড়েছে।
ডিফেন্স থেকেই অ্যাটাকিং বিল্ডআপ শুরু করে এমন দলগুলোর জন্যে লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাক অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অনেক দলই এই মুহুর্তে বাম পায়ের সেন্টারব্যাক খুঁজে বেড়াচ্ছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর মধ্যে অন্যতম। ওলে গানার সোলশায়ার এর মধ্যেই আসন্ন ট্রান্সফার উইন্ডোতে এরকম একজনের চাহিদার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
সোলশায়ার গত মৌসুমে লেফট সেন্টারব্যাক হিসাবে ডান পায়ের ম্যাগুয়ারকে খেলিয়েছেন। কিন্তু একজন বাম পায়ের সেন্টারব্যাক থাকার সুবিধা ফেব্রুয়ারিতে চেলসির বিপক্ষে ম্যাচেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ইউনাইটেড এদিন লুক শ, এরিক বাইয়ি এবং হ্যারি ম্যাগুয়ারকে নিয়ে থ্রি ম্যান ব্যাক সিস্টেমে খেলেছিলো। লুক শ ছিলেন লেফট সেন্টারব্যাক হিসাবে। পুরো ম্যাচে শ ডিফেন্ডার হিসেবে নয়টি প্রোগ্রেসিভ পাস দেন যা গত মৌসুমে সর্বোচ্চ এবং ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাগুয়ারের সমান। এখন রেলিগেটেড হওয়া ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পারফরম্যান্স এগিয়ে রাখবেন নাকি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা চেলসির সাথে পারফরম্যান্স তা আপনারই বিবেচনা।
ট্রান্সফার মার্কেটে হন্যে হয়ে লেফট ফুটেড সেন্টারব্যাকের খোঁজে আরেক দল নামতে পারে-টটেনহ্যাম। এতদিন দলের একমাত্র ন্যাচারাল লেফট ফুটেড সিবি হয়ে থাকা ভার্তোনগেন এর বিদায়ে স্পার্স এর বিল্ডআপ অপশন সীমিত হবেই। ব্যাক ফোর এ দুই রাইট ফুটেড সেন্টারব্যাকের জায়গায় দুই রাইট ও লেফট ফুটেড এর কম্বিনেশন খেলালে স্পার্সদের প্রোডাকটিভ পাসের সংখ্যা চোখে পড়ার মত বৃদ্ধি পায় তা নিচের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
সাউদাম্পটন অল্প সংখ্যক ক্লাবগুলোর একটা যারা এই মুহুর্তে ব্যাকলাইনে ব্যালেন্সিং নিয়ে চিন্তিত নয়। যদিও তারা খুব একটা পজেশনাল ফুটবল খেলে না, তবে ১০.৯ মিলিয়ন পাউন্ডে রিয়াল ভ্যালাদোলিদ থেকে সাইন করানো ২১ বছর বয়সী ডিফেন্ডার মোহাম্মদ সালিসু দলে ভারসাম্য আনবেন আশা করা যায়। এই সিজনে কতটা গেইম টাইম পাবেন তার উপর নির্ভর করে আগামী মৌসুমে অনেক বড় দলই হয়তো সালিসুকে দলে টানতে চাইবে। এক ইউরোপিয়ান ক্লাবের ডাটা স্কাউটের মতানুসারে, মৌসুমে যদি ২০০০+ মিনিট খেলার সুযোগ পান তো আগামী মৌসুমে ২৫-৩০ মিলিয়ন পাউন্ড দাম উঠতে পারে তার।
গ্রীষ্মের দলবদলের বাজারে বোর্নমাউথের নাথান অ্যাকে কে দলে টানতে কেন ম্যানচেস্টার সিটির ৪১ মিলিয়ন পাউন্ড খসে গেলো তা কিছুটা হলেও বোধগম্য হয়েছে আশা করি। কারণ এরকম প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লেফট ফুটেড সিবি এই মুহুর্তে বাজারে কমই আছে। যদিও লেফট ব্যাকেও সাবলীল তবুও অ্যাকে খুব সম্ভবত লাপোর্তের বিকল্প হিসাবেই থাকবেন। লাপোর্তের মত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু লং টাইম ইনজুরির ইতিহাস আছে এমন খেলোয়াড়ের বিকল্প দলে টানতে বিনিয়োগটাও একটু বেশী হতে হয় বৈকি। অ্যাকের সাইনিং এর মাধ্যমে মৌসুমব্যাপী লেফট সেন্টারব্যাক থেকে অতিরিক্ত পাসিং লেইন, অ্যাঙ্গেল এবং ট্র্যাজেক্টরি প্রাপ্তিটা গার্দিওলা নিশ্চিত করলেন বলা যায়।
গ্রীষ্মের দলবদলের বাজার থেকে ইউনাইটেড কিংবা স্পার্স দলে কোনো বাম পায়ের সেন্টারব্যাক ভেড়াতে পারেন কিনা তার উপর সামনের মৌসুমের অনেক কিছুই নির্ভর করছে। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যাওয়ার লড়াইটা এবার চেলসি, ইউনাইটেড, আর্সেনাল ও স্পার্স এর মধ্যে উপভোগ্যই হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ে এই বাম পায়ের সেন্টারব্যাকরাই বাজির ঘোড়া হয়ে উঠেন কিনা তাই দেখার বিষয়।
Disclaimer: লেখাটি দ্যা অ্যাথলেটিক এ প্রকাশিত টম অরভিল এর আর্টিকেল থেকে অনূদিত।
সকল Image Source: দ্যা অ্যাথলেটিক
- 0 মন্তব্য