• ফুটবল

"ওলে'স অ্যাট দ্যা হুইল" চ্যান্ট কিভাবে এলো

পোস্টটি ৯৮৩ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস। স্পেশাল ওয়ান জোসে মরিনহোর উপর রেড ডেভিল ভক্তরা চরম নাখোশ। একে তো ড্র এর পর ড্র উপহার দিচ্ছে, সাথে যোগ হয়েছে বিরক্তিকর ফুটবল। তার উপর দলের খেলোয়াড়দের সাথে সম্পর্কের ঘটেছে অবনতি। সব মিলিয়ে মরিনহোর স্যাক হওয়াটা সময়ের ব্যাপার ছিলো। মরিনহোর পরে যখন ওলে গানার সোলশার কোচ হয়ে এলেন, সমর্থকেরা বেশ আনন্দিতই হলেন। ওলের আন্ডারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সূচনাটাও হয়েছিলো দারুণ। টানা ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ জিতেছিলো। 

তখন থেকেই ইউনাইটেড সাপোর্টারদের ভরসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতে থাকেন এই কোচ। ফার্গি অবসরে যাওয়ার পরেও এখনো রিবিল্ড প্রোসেসে থাকা দলকে আবার চ্যাম্পিয়ন করবেন, এই আশায় বুক বাঁধতে থাকেন ভক্ত সমর্থকেরা। তার সমর্থনেই এই চ্যান্ট শুরু করে। এরপর পিএসজি এর বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ এর হোম ম্যাচে ২-০ গোলে পরাজয়ের পরেও অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতে দলকে পরের পর্বে নেওয়ার ফলে এই চ্যান্ট আরো বিখ্যাত হয়ে যায়।

লিরিকঃ

Ole's at the wheel,
Tell me how does it feel,
We’ve got Sanchez, Paul Pogba and Fred,
Marcus Rashford, a Manc born and bred,
Duh du, du du du du du!
Duh du, du du du du du!

Greatest of English Football, We've won it all.

এটাই ছিলো প্রথম লিরিক এই গানের। আইকনিক ম্যানচেস্টার ব্যান্ড "দ্যা স্টোন রোজেস" এর গান "ওয়াটারফল" এর টোনে এই চ্যান্ট করা হয়। তবে অ্যালেক্সিস সানচেজ ২০২০ এ দল ছাড়ার পর যখন এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি প্রথম ট্রেনিং সেশনের পরেই ইউনাইটেড ছাড়তে চেয়েছিলেন, ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবেই ভালোভাবে নেন নি সমর্থকেরা। তাই পুরো গানটা আর গাওয়া হতো না, শুধু প্রথম দুই লাইনই গাইতেন সাপোর্টাররা। তবে এবার ট্রান্সফার উইন্ডোতে সানচো চলে আসার পর আবার শুরু হয়েছে ফুল চ্যান্ট। শুধু সানচেজের পরিবর্তে সানচো বসিয়ে দিয়েছেন।

Ole's at the wheel,
Tell me how does it feel,
We’ve got Sancho, Paul Pogba and Fred,
Marcus Rashford, a Manc born and bred,
Duh du, du du du du du!
Duh du, du du du du du!

Greatest of English Football, We've won it all.

ব্যাকস্টোরিঃ

তবে একটু অবাক লাগতে পারে যখন শুনবেন অরিজিনালি এই চ্যান্ট ওলের উত্তরসূরি জোসে মরিনহোর জন্যে সৃষ্টি হয়েছিলো। ২০১৮-১৯ সিজনে জুভেন্টাসের বিপক্ষে গ্রুপ স্টেজের অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ের পর উৎফুল্ল সমর্থকেরা অ্যালিয়েঞ্জ স্টেডিয়ামের বাইরে জড়ো হয়ে "জোসে অ্যাট দ্যা হুইল" চ্যান্ট করতে থাকেন। তবে রেড ডেভিলদের ফর্ম এরপর থেকেই পড়তির দিকে যায়। আর ডিসেম্বর নাগাদ লিগে লিভারপুলের সাথে ৩-১ গোলে পরাজয়ের পর স্পেশাল ওয়ানের বিদায় ঘন্টা বেজে যায়।

তবে মরিনহোর জন্যে শুরু করা এই চ্যান্টটি কখনোই তেমন জনপ্রিয়তা পায় নি। কিন্তু সোলশার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সবকিছু ভোজবাজির মত পালটে গেলো। এমনিতেই ১৯৯৯ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে দলকে ট্রেবল জেতানোয় ইউনাইটেড সাপোর্টারদের চোখের মণি ছিলেন। তখন থেকেই ওলে ইউনাইটেডে কাল্ট-ফিগার হিসেবে বিবেচিত। তাই ম্যানেজার হিসেবে যখন ওলে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, সবাই আশাবাদী হলেন তিনিই ইউনাটেড কে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন।

রেড ডেভিলদের হয়ে সোলশারের দূর্দান্ত শুরু হলো। যে পগবা মরিনহোর আন্ডারে ফর্ম হারিয়েছিলেন, তিনি ফর্ম ফিরে পেলেন, প্যারিস দূর্গে অসাধারণ জয় পেলো দল। ওলে চ্যান্ট এর জনপ্রিয়তাও বাড়তে থাকলো। পরের দুই সিজনে একবার থার্ড, একবার সেকেন্ড, দলকে ইউরোপার ফাইনালে খেলানো। এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোতে সানচো, ভারানের মত প্লেয়ার কেনা, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ফিরিয়ে আনা। টানা অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ের রেকর্ড। সব মিলিয়ে সাপোর্টাররা আশাবাদী। ফার্গুসনের পরে সোলশারই পারবেন আবার দলকে শীর্ষে তুলতে। শেষ পর্যন্ত এই সিজনে যদি ওলে বড় কোনো সাফল্য পেয়ে যান, "ওলে অ্যাট দ্যা হুইল" প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যান্টগুলোর লিস্টে জায়গা করে নেবে তাতে সন্দেহ নেই।