চার্ম স্ট্রাইকারের গল্প | পর্ব : ২
পোস্টটি ৮৭৩ বার পঠিত হয়েছেলন্ডন যেমন বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ শহর, একইভাবে লন্ডনের প্রসিদ্ধতম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব আর্সেনাল। মঁপেলিয়ে থেকে ওলিভিয়ের জিরুদের লন্ডনে আগমন ছিলো পুরোপুরি লাইফ চেঞ্জিং এক্সপেরিয়েন্স। ফরাসি মায়ের কোল ছেড়ে অত্যাধুনিক ও চাকচিক্যময় লন্ডনের সাথে মানিয়ে নিতে শুরুর দিকে একটু সমস্যা হয় তাঁর। কিন্তু সেটা দূর হতে বেশি সময় লাগেনি। মাঠে নামার সাথে সাথে হাজারো গানার্স সমর্থক সাদরে বরণ করে নেয় তাঁকে।
আর্সেনালে প্রথম মৌসুম টা দারুণ কাটে তাঁর। নর্থ লন্ডনের দলটির হয়ে ৪৭ ম্যাচে ১৭ গোল ও ১১ টি এসিস্ট করেন তিনি। এর মধ্যে ছিলো বহু স্মরণীয় গোল, স্মরণীয় মূহুর্ত। রিডিং এর বিপক্ষে ৪-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর ৭-৫ গোলে আর্সেনালের ঐতিহাসিক কামব্যাকে তাঁর পা থেকে আসে এক গোল। ইউসিএল গ্রুপ স্টেজে তাঁর সাবেক ক্লাব মঁপেলিয়ের বিপক্ষে তাঁর জোড়া এসিস্টে নক আউট স্টেজে কোয়ালিফাই করে আর্সেনাল। এমিরেটস স্টেডয়ামে আর্সেনাল ফ্যান রা গান গেয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানায়। জানুয়ারি তে আর্সেনালের ফ্যানস প্লেয়ার অব দ্য মান্থ জয় করেন জিরুদ।
পরের সিজনেও দারুণ পারফর্মেন্স বজায় রাখেন ওলিভিয়ের জিরুদ। এফএ কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে তার জোড়া গোলে সেমি ফাইনালে পৌঁছে যায় গানার্সরা। সেমি ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটে জয়লাভ করার পর ফাইনালে হাল সিটি কে ৩-২ গোলে হারায় আর্সেনাল ও ট্রফি ঘরে তোলে। ফাইনাল ম্যাচে আরন রামসির জয়সূচক গোলে এসিস্ট করেছিলেন জিরুদ।
এফএ কাপে সেসময় রাজত্ব শুরু করে আর্সেনাল। লিগে যদিও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছিলোনা, কিন্তু এফএ কাপে ছিলো দুর্দান্ত। পরের সিজনেও এফএ কাপ জয়লাভ করে আর্সেনাল। ফাইনালে এস্টন ভিলা কে হারায় ৪-০ গোলে। সে ম্যাচে আর্সেনালের চতুর্থ গোল আসে বদলি হিসেবে নামা জিরুদের পা থেকে।
৯ ডিসেম্বর ২০১৫ আর্সেনালের হয়ে প্রথম হ্যাট্রিক করেন ওলিভিয়ের জিরুদ। ইউসিএল গ্রুপ স্টেজে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে তাঁর সে হ্যাট্রিকে ৩-০ গোলে জয়লাভ করে আর্সেনাল ও পৌঁছে যায় রাউন্ড অব সিক্সটিনে। চারদিন পর এস্টন ভিলার বিপক্ষে গোল করে আর্সেনালের হয়ে সপ্তম খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে পঞ্চাশ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। সব কম্পিটিশন মিলিয়ে ২৪ গোল করে সে মৌসুম শেষ করেন ওলিভিয়ের জিরুদ।
২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ব্যাকহিল স্কোরপিয়ান কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করেন জিরুদ, যেটিকে আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার এমিরেটস স্টেডিয়ামে দেখা তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠতম গোল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পরবর্তীতে তাঁর এ গোল বর্ষসেরা গোল হিসেবে ফিফা পুসকাস এওয়ার্ড জয় করে। সেবছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ইউরোপা লিগের ম্যাচে বাতে বরিসভের বিপক্ষে আর্সেনালের জার্সিতে শততম গোল করেন ওলিভিয়ের জিরুদ। অবশেষে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে আর্সেনাল ক্যারিয়ার শেষ করেন তিনি। নর্থ লন্ডনের দলটির হয়ে মোট ২৫৩ টি ম্যাচ খেলে গোল করেন ১০৫ টি।
২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আর্সেনালের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী চেলসির হয়ে ১৮ মাসের কন্ট্র্যাক্ট সাইন করেন ওলিভিয়ের জিরুদ। পাঁচদিন পর ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে বদলি হিসেবে তাঁর অভিষেক হয়। ব্লুজদের হয়ে তাঁর প্রথম গোল আসে হাল সিটির বিপক্ষে এফএ কাপ পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে। ১৪ এপ্রিল বদলি হিসেবে নেমে জোড়া গোল করেন জিরুদ ও তাঁর গোলেই সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও পরে ৩-২ গোলে জয় পায় চেলসি। চেলসির হয়ে লিগে এ ম্যাচেই প্রথম গোল পান ওলিভিয়ের।
ইউরোপা লিগে সে সিজন তাঁর দুর্দান্ত যায়। ডায়নামো কিয়েভের বিপক্ষে ইউরোপা লিগ রাউন্ড অব সিক্সটিনের দ্বিতীয় লেগে চেলসির হয়ে হ্যাট্রিক করেন জিরুদ। পরের সেমি ফাইনালে স্লাভিয়া প্রাহার বিপক্ষে গোল করে প্রথম চেলসি খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপীয় টুর্নামেন্টে এক সিজনে ১০ গোল করার রেকর্ড গড়েন। ফাইনালে তাঁর সাবেক ক্লাব আর্সেনালের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জয় পায় চেলসি। সে ম্যাচে এক গোল ও এক এসিস্ট করেন জিরুদ। সে সিজনে ইউরোপা লিগে ১১ গোল করার মাধ্যমে ফ্রেঞ্চ ফুটবলার হিসেবে একটি ইউরোপিয়ান সিজনে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন জিরুদ।
২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার বিপক্ষে চেলসির ৪-০ গোলের জয়ে সবকটি গোল করেন ওলিভিয়ের জিরুদ। সেই সাথে সবচেয়ে বেশি বয়সী ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন। তিনদিন পর লিগে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোল করলে সবচেয়ে বেশি বয়সী ফুটবলার হিসেবে টানা ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ স্টার্টে গোল করার রেকর্ড গড়েন জিরুদ।
২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৭তম ফুটবলার ১০০ ম্যাচে বদলি হিসেবে নামার কীর্তি গড়েন জিরুদ৷ ২৩ ফেব্রুয়ারি বাইসাইকেল কিকে তাঁর একমাত্র গোলে রাউন্ড অব সিক্সটিনে আতলেতিকো মাদ্রিদ কে হারায় চেলসি। ২০২১ সালের ২৯ মে ফাইনালে ১-০ গোলে ম্যানচেস্টার সিটি কে হারিয়ে স্বপ্নের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করে চেলসি। তবে সে ম্যাচে মাঠেই নামতে হয়নি তাঁকে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে চেলসি ছেড়ে দুই বছরের চুক্তিতে মিলানে যোগ দেন জিরুদ। ২৯ আগস্টে ক্যালিয়ারির বিপক্ষে মিলানের হয়ে প্রথম গোল করেন। ১৬ অক্টোবর ভেরোনার বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে মিলান। অতঃপর জিরুদের দারুণ এক গোলের পর মিলান আবার কামব্যাক করে ও ৩-২ গোলে জিতে নেয় সে ম্যাচ। ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী তাঁর জোড়া গোলে মিলান ডার্বিতে ইন্টার কে ২-১ গোলে হারায় এসি মিলান। চারদিন পর কোপা ইতালিয়ায় আবার তাঁর জোড়া গোলে ল্যাৎসিও কে হারায় ৪-০ তে। গত ২৪ এপ্রিল তিনি সেই ল্যাৎসিওর বিপক্ষে আরও একটি অসাধারণ সমতাসূচক গোল করেন ও সে ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় মিলান।
ফ্রান্সের হয়ে তাঁর ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিলো বেশ দেরিতেই। ২০১১ সালের শেষ দিকে মঁপেলিয়ের হয়ে তাঁর পারফর্মেন্স নজর কাড়ে ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ লরা ব্লাঁর। নভেম্বরে বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ডাক পান তিনি। জিরুদের জন্য এটি ছিলো বিরাট কিছু। বিরাট এক স্বপ্ন পূরণ। দুই ম্যাচেই বদলি হিসেবে নামেন জিরুদ। অতঃপর ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি জার্মানির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলের জয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের দেখা পান তিনি। তিনমাস পর ফ্রান্সের ইউরো ২০১২ স্কোয়াডে ডাক পান। তবে সেই টুর্নামেন্টে খেলার তেমন সুযোগ পাননি তিনি।
ফ্রান্সের নতুন কোচ দিদিয়ের দেশম ২০১৪ বিশ্বকাপের জন্য আবারও জিরুদকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেন৷ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে হন্ডুরাসের বিপক্ষে বদলি হিসেবে নামার পর দ্বিতীয় ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুর একাদশে জায়গা পান জিরুদ। সে ম্যাচে ১৭ তম মিনিটে বিশ্বকাপে প্রথম গোল করেন তিনি। এ গোলটি আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ছিলো ফ্রান্সের বিশ্বকাপের ইতিহাসে শততম গোল।
২০১৬ ইউরোর প্রথম উদ্বোধনী ম্যাচ ছিলো ফ্রান্সের জার্সিতে জিরুদের পঞ্চাশতম ম্যাচ। সে ম্যাচে রোমানিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ে দিমিত্রি পায়েতের ক্রস থেকে ফ্রান্সের প্রথম গোলটি করেন ওলিভিয়ের জিরুদ। অতঃপর কোয়ার্টার ফাইনালে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ৫-২ গোলের জয়ে করেন জোড়া গোল। ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে হেরে সেবার আর ট্রফি তুলে ধরা হয়নি, তবে ৩ গোল ও ২ এসিস্ট করে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা নির্বাচিত হন ও ব্রোঞ্জ বুট জিতে নেন।
২০১৭ সালের ২ জুন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন জিরুদ। এর মাধ্যমে ১৭ বছরের মধ্যে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ফ্রান্সের জার্সিতে হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন তিনি।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপে তিনি ফ্রান্সের হয়ে সবকটি ম্যাচ খেলেন। সেবার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। তবে পুরো টুর্নামেন্টে ১৩ টি শট নিলেও সেবার কোনো গোল পাননি জিরুদ।
ফ্রান্সের হয়ে ১১২ টি ম্যাচ খেলেছেন জিরুদ, গোল করেছেন ৪৮ টি। বর্তমানে ফ্রান্সের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়েরি অঁরির ৫১ গোলের থেকে মাত্র ৩ গোল দূরে আছেন জিরুদ। হয়তো অদূরেই অঁরির রেকর্ড ভেঙে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড নিজের করে নেবেন জিরুদ।
ক্যারিয়ারে দলগত শিরোপা প্রায় সবকিছুই জিতেছেন। মঁপেলিয়ের হয়ে লিগ ওয়ান; আর্সেনালের হয়ে তিনটি এফএ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ড; চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ ও এফএ কাপ; ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ। দলীয় শিরোপার দিক থেকে তাঁর ক্যারিয়ার কানায় কানায় পূর্ণ। তবে ব্যাক্তিগত অর্জন তাঁর তেমন বিশেষ কিছু নেই। ইউরো তে ব্রোঞ্জ বুট জিতেছিলেন, ফিফা পুস্কাস এওয়ার্ড জিতেছেন। এর বাইরে একবার প্রিমিয়ার লিগ প্লেয়ার অব দ্য মান্থ, একবার লিগ টু প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার, এইতো। বড় তেমন কিছু নেই।
মূলত ব্যক্তিগত অর্জনের দিকে তেমন সফল না হওয়ার জন্যই তাকে সবসময় অবমূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু তিনি যেখানে খেলেছেন, সেখানে ঠিকই কদর পেয়েছেন। এর বিশেষ কিছু কারণ আছে। ক্রুসিয়াল মোমেন্টে তিনি বহুবার ত্রাতার ভূমিকা পালন করেছেন। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ ম্যাচই খেলেছেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে, কিন্তু যখনই দলের প্রয়োজন, তখন তিনি ঠিকই অবদান রেখেছেন। ফলে তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন কখনোই তেমন উজ্জ্বল হয়নি।
তাঁর ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পারফর্মেন্স অনেক বিতর্কিত, কারণ চ্যাম্পিয়ন দলের মেইন স্ট্রাইকার হয়েও তার কোনো গোল ছিলোনা। কিন্তু সেবার তিনি স্কোরার হিসেবে একদমই খেলেননি। মূলত গ্রিজমান ও এমবাপ্পের জন্য স্পেস ক্রিয়েট করা ছিলো তাঁর মূল দায়িত্ব, তিনি সেটা সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
এইবার চলুন দেখি, কেন তিনি ভাগ্যবান। ২০ বছর অপেক্ষার পর ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ জয় করে ফ্রান্স। আর এটি একমাত্র বিশ্বকাপ, যেখানে ফ্রান্সের প্রধান স্ট্রাইকার হিসেবে ছিলেন জিরুদ। মঁপেলিয়ে ক্লাব ইতিহাসের একমাত্র লিগ শিরোপা জয় করে তাঁর হাত ধরে। আর্সেনালে তিনি যতদিন ছিলেন, ততদিন লিগে খুব ভালো না করলেও এফএ কাপ কে আর্সেনাল প্রায় নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলো। অতঃপর যখন তিনি চেলসিতে গেলেন, তখন দীর্ঘ নয় বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চেলসি জয় করে চ্যাম্পিয়নস লিগ। চেলসি ছেড়ে এরপর তিনি যোগ দিলেন এসি মিলানে। ফলাফল, দীর্ঘ এগার বছরের অপেক্ষার পালা শেষে এবার শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসি মিলান। জিরুদ যেন সবখানে শিরোপা জয়ের আশীর্বাদ হয়ে যান।
ওলিভিয়ের জিরুদ কোনো বিশ্বমানের কিংবদন্তি পর্যায়ের খেলোয়াড় নন। কিন্তু তিনি একজন নিঃস্বার্থ ফুটবলার, যিনি খেলে গেছেন শুধুই দলের প্রয়োজনে। সুপার সাব হিসেবেই পার করে দিয়েছেন প্রায় পুরো ক্যারিয়ার। যখনই দল তাঁকে চেয়েছে, তখনই তিনি অবদান রেখেছেন। নিজের ব্যক্তিগত অর্জনের দিকে কখনো খেয়াল করেননি। দল যা চেয়েছে, তিনি তাই দিয়েছেন।
ফুটবল জগতে এমন নিঃস্বার্থ ফুটবলার প্রায় বিরল। এরা কখনো স্পটলাইটে আসেনা, ট্রলের শিকার হয় শত সহস্রবার। কিন্তু তারপরও দলীয়স্বার্থে উজাড় করে দেয় নিজেকে। জিরুদদের যে যতই ট্রল করুক, জিরুদরা সেসব পরোয়া করেনা। আপনমনে পালন করে যায় তাদের দায়িত্ব। তাই কিছু পরিসংখ্যানপ্রেমী ফুটবল ফ্যান আর নিউজ পোর্টাল যতই জিরুদকে ট্রল করুক, মাঠের কোণে বসে থাকা সেই শিশুটি তাঁকে ভুলবেনা, যাকে শেষ মিনিটের জাদুতে মুগ্ধ করেছিলো এ জাদুকর। ফুটবল মাঠের ঘাসেরা তাঁকে ভুলবেনা। ভুলবেনা জীবনের শেষ বেলায় দলের একটি জয় দেখতে আসা কোনো এক বৃদ্ধ। আর এটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া।
- 0 মন্তব্য