• ফুটবল

নানা রঙয়ের বর্ণিল এক চরিত্র!

পোস্টটি ৮৯৪ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

'হায়, এক জীবনে কত রকমের, কত ধরনের; কত বিচিত্র রকমের বিদায়ের ভার বহন করতে হয়। একটা বিদায়ে ছেড়ে যেতে হয় কত পরিচিত চেহারা! একটা বিদায় পিছনে ফেলে যায় কত হাসি, স্মৃতি! ' 

একজন ফুটবলারের বিদায়ে কার বেদনা বেশি?  ভক্তদের নাকি যে ফুটবলার  বিদায় নিবে তাঁর? দুই পক্ষই একই সমান কষ্ট  পায়। আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজের কথায় বলি, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কত সতীর্থকে নিজে বিদায় দিলেন। এবার তিনিই ফুটবলকে বিদায় জানালেন! এটাই নিয়ম। সবাইকে যে একদিন থামতে হয়! ৩৮ বছর বয়সে এসে জানিয়ে দিলেন বুটজোড়া তুলে রাখবেন। 

কার্লোস তেভেজ বর্ণিল এক চরিত্র! তিনি একরঙা কোনো চরিত্র নয়। ফুটবলপ্রেমীরা তাঁকে অনেক কিছুর জন্য  মনে রাখতে পারে। তবে, তাঁকে সবচেয়ে বেশি মনে রাখবে সম্ভবত বল পায়ে তাঁর গতি, অনমনীয়তা; কঠোর পরিশ্রমী মনোভাবের জন্য! 

তাঁর সময়ে  সবচেয়ে শক্তিমান ফরোয়ার্ডদের একজন ছিলেন। তেভেজ শুধু স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলতেন না। তাঁর সামর্থ্য ছিল উইঙ্গার,  আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলারও। তাঁর সময়ে ছিলেন প্রতিপক্ষের জন্য এক আতঙ্কের নামও।  

স্বদেশী ক্লাব বোকা জুনিয়ার্সের হয়ে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। খেলেছেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়ান্সে। ওয়েস্ট হামের হয়ে খেলার জন্য প্রথম ইংল্যান্ড পাড়ি জমান। এরপর দুই ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার  ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটির হয়েও মাঠ মাতিয়েছেন। ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে খেলেছেন। ইউরোপ ছেড়ে নতুন অভিজ্ঞতার জন্য চীনের ক্লাব সাংহাই শেনহুয়াতে খেলেছেন। কোথাও যেন  শান্তি পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় আবারো ফিরেছিলেন তাঁর যৌবনের ক্লাব বোকা জুনিয়ার্সেই।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৮৩ ম্যাচে ২৫০ টার মতো গোল করেছেন। ক্যারিয়ারে জিতেছেন ২৭ টা ট্রপি। ম্যানইউ এবং  সিটির হয়ে  প্রিমিয়ার লীগ জিতেছেন। জুভেন্টাসের হয়ে 'সিরি আ' জিতেছেন।ব্যক্তিগত অনেক পুরষ্কার তো জিতেছেনই। তবে তাঁর ক্যারিয়ারে সম্ভবত বড় অর্জন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়। 

আর্জেন্টিনার জার্সিতে তেভেজ কেমন ছিলেন?  ৭৬ ম্যাচে ১৩ গোল, ১৩ অ্যাসিস্ট। এই সংখ্যা গুলো কার্লোস তেভেজকে পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে পারছে না। কার্লোস তেভেজকে চিনতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০১০ সালের বিশ্বকাপে। মেক্সিকোর বিপক্ষে বুলেট গতির শটে করা সেই গোলের কথা যতবারই উঠবে,  ততবারই আসবে একটা নাম; কার্লোস আলবার্তো  তেভেজ। আর্জেন্টিনা জার্সি গায়ে নামলে, মাঠে সেরাটা দেওয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা।  এটাই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। ভুলে যাবেন না, আর্জেন্টিনার প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণ তাঁর হাত ধরেই এসেছিল। 

অল্প বয়স থেকেই জীবনের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তবুও ফুটবলটা ছাড়েননি।। দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে জিতেছেন। নিজেকে বানিয়েছেন অসংখ্য মানুষের অনুপ্রেরণা। তিনি জীবন যুদ্ধে জয়ী এক যোদ্ধার নামও। 

ফুটবল ছাড়া সময় গুলো ভালো কাটুক, কার্লোস..