• ক্রিকেট

মুশি-রিয়াদ; আপনারা আমাদের মনের মত নন কেন?

পোস্টটি ১৪১৯ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

 

মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ কে নিয়ে যেটা হয় বা হচ্ছে সেটা বাড়াবাড়িই। কোনো এথিকসের বালাই না করেই যা ইচ্ছা বলা, এগুলি ক্রিকেট ফ্যানরা ঠিক করতেছেনা। যেহেতু সবাই করতেছে, এসবে একটা আনন্দ আছে আসলে। ডিফার কমেন্ট আসেনা তেমন। তবে এগুলি আসলে ভালো জিনিস না। দুঃখজনক জিনিস।

আপনাদের এই রাগটা আসলে কিসের? 

পারফর্ম করতে না পারায় এত রাগ? মিডিয়াতে আয়না বিষয়ক আলাপে এত রাগ? দলে খেলে যাচ্ছে, রাগ?

ধারণা করি, আপনারা আসলে জানেনই না কেন এত রাগ আসে আপনাদের। শুধুমাত্র অন্যরা রাগ দেখাচ্ছে এবং তা পুঁজি করে রেগে যাচ্ছেন সবাই। তা নাহলে এত রাগের আসলে কারণ আমি অন্তত খুঁজে পাই না। 

 

 

মুশফিক-কে নিয়ে রাগঃ 

মোস্ট অব দেম ঘুমিয়ে থাকে, সেসময় মুশফিক প্রাক্টিস করছে, এই ধরনের একটা ক্যাপশন সম্প্রতি খুব আলোচিত। যা মুশফিক তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। এটা দেখেই আপনারা রেগে গেলেন। আপনারা ধারণা করলেন, এতে করে দেশের মানুষের কাজকে মুশফিক ছোট করেছে, তাদের ডেডিকেশনকে ছোট করেছে। এবং মুশফিক যে শুধু একা সকালে ওঠেননা, আপনারাও যে ওঠেন সেই সমস্ত রুটিন কমেন্টে দেখা যেতে লাগল। কি চমৎকার! উল্লেখ্য যে, এর আগে প্রেসেও মুশফিক উক্ত ক্যাপশনের মতো কিছু কথা বলেছিলেন, যা তার সেলফ-স্যাটিস্ফেকশন হিসেবেই স্বাভাবিক বিবেচনায় আসে। যাইহোক, এখন আসলেই কি এসব লিখে মুশফিক আমাদের অনেক ছোট করে ফেললো? শুধুমাত্র এই ক্যাপশনের মাধ্যমে আমরা কতটুকু ছোট হলাম আসলে? 

খুব সাংঘাতিক ছোট হবার মতো সেন্স আমার মাথায় আসেনা। অন্যদের আসছে। 

মুশফিক তার পেজে তার রেকর্ড শেয়ার করলে দেখলাম অনেকের ভালো লাগেনা। সে তার পেজে তার রেকর্ড শেয়ার করবেনা? মানে অন্য ক্রিকেটাররা করেনা, এটা দেখে অভ্যস্ত আপনারা, তাই মুশফিককেও করতে দিবেননা? কেনো আসলে, মুশফিক বলেই নাকি? কারণ তার একটা সেলফ- স্যাটিস্ফাই হবার প্রবণতা আছে, যা আপনারা হতে দিতে চাননা। 

মুশফিককে আপনারা আবেগী হতে দিতে চান না। মুশফিক কতটুকু আবেগী হবে, তা আপনারা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন, আশ্চর্য ব্যাপার না? ‘ইম্যাচিউর’ শব্দের খুব ব্যবহার করে বেশ কিছু মতামত দেখলাম। জিনিসটা ইম্যাচিউরিটি না। জিনিসটা হচ্ছে, আপনি সবাইকে একভাবে সাজাতে চাচ্ছেন। কিন্তু সবাই যে একরকম না এবং কেউ যে তার রেকর্ড নিয়ে অনেক বেশি উল্লাস করবে বা ফেসবুকে পোস্ট করবে, তা দেখে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক লোকজনরা লজ্জা পাচ্ছেন। কি অদ্ভুত! 

মুশফিক এখন যাই পোস্ট করতেছে, সেখানেই একটা সমস্যা আপনারা খুঁজে পাচ্ছেন। মুশফিকের অনেক 'ইম্যাচিউরিটি' খোঁজার যে চমৎকার দায়িত্ব ক্রিকেট ফ্যানরা বর্তমানে পালন করছে, তা বেশ জনপ্রিয় এখন। 

 

মাহমুদুল্লাহ-কে নিয়ে রাগঃ

মাহমুদুল্লাহ কে আপনার কোন কোন ফরম্যাটে চান না, তা আরো সুন্দরভাবে বলা যায়। এখানেও এত রাগ করবার কিছু নাই। এমনভাবে বলবেননা যে, শুধুমাত্র তাদের কারণে দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অবসর নেওয়া, নিতে পারা, টিমের চাওয়া, নিজের চাওয়া এসব কিছু রিলেটেড। দর্শকরা কিভাবে ভাবে, তা এর সাথে যুক্ত না। একজন খেলোয়াড় অনেকগুলি বছর একটা দলে খেলতে খেলতে, একটা ভিত তো জমেই যায়। এটা বাস্তবতা। সেখান থেকে হুট করে বের হয়ে আসা যায়না অত সহজে, কেউ পারে, সবাই পারবে এমন না।

অবসর নিয়েই যদি কথা বলতে হয়, আরো গুছিয়ে নিয়ে এসব বলা দরকার। যাদেরকে এত তকমা দেওয়া হয়েছে একসময়, হুট করে তাদেরকে একদম দরকার নাই- এমন ভাবাটা আপনাদের চিন্তার সমস্যা। দরকার নাই এভাবে কাউকেই বলা যায় না। এই বলাটা ঠিক না। অথচ কিছুদিন আগেও পাইপলাইন নিয়ে অনেক কথা সকলেই বলেছেন। যাকগে সময় বদলাবে। এইতো? তো সময়টা আরেকটু দিন, যাবার সময় তো হয়েই গেছে তাদের। জিনিসগুলি বিশ্রি করবেননা দয়া করে। 

 

মোটকথাঃ মোটকথা এই যে, অন্ধ হয়ে যাইয়েননা যে। মাথাটা ঠান্ডা রাখেন।