বোসম্যান রুলিং - যে নিয়ম বদলে দিয়েছিলো ফুটবল সিস্টেমকে!
পোস্টটি ১২৫২ বার পঠিত হয়েছেআমরা যারা ফুটবল পছন্দ করি কিংবা প্রতিনিয়ত নিজের পছন্দের দলকে সমর্থন করি তাদের কাছে একটি উৎসাহের জায়গা হচ্ছে " ট্রান্সফার উইন্ডো"। এই ট্র্যান্সফার উইন্ডো নিয়ে যেমন ফুটবল ফ্যানদের আগ্রহের কমতি থাকে না তেমনি ইউরোপের সকল ক্লাবের তীক্ষ্ণ নজর থাকে এর দিকে।
ট্র্যান্সফার উইন্ডো মানেই হচ্ছে কড়ি কড়ি অর্থের ছড়াছড়ি, ক্লাবগুলোর নিজেদের শক্তিমত্তা বৃদ্ধি বা হারানো জৌলুস ফেরানোর জন্যে পছন্দের প্লেয়ার সাইন করিয়ে নিজেদের দূর্বলতা কাটানোর একটি মোক্ষম সুযোগ। সাধারণত একটি পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে দুইবার দলবদলের সুযোগ দেওয়া হয় - একটি অংশকে বলা হয় সামার ট্রান্সফার উইন্ডো বা গ্রীষ্মকালীন দলবদল, যার সময়সীমা আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২ সপ্তাহ (সাধারণত জুন ১০ থেকে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত)। অপর অংশের নাম উইন্টার ট্রান্সফার উইন্ডো বা শীতকালীন দলবদল, যায় সময়সীমা প্রায় একমাস ( সাধারণত জানুয়ারী ৩১ তারিখ হতে ফেব্রুয়ারি ১ তারিখ পর্যন্ত )।
সাধারণত এইসকল দলবদলে দুইটি নির্দিষ্ট পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে একটি ফি নির্ধারণ করে পছন্দ ফুটবলারকে নিজেদের দলে ভেড়ায় ক্রেতা পক্ষ। এটি খুবই কমন এবং বহুল ব্যবহৃত একটি প্রসেস। কিন্তু এই প্রসেসের বাহিরে একটি প্রসেস আছে - ফ্রি ট্রান্সফার পদ্ধতি যা বোসম্যান ট্রান্সফার নামেও পরিচিত। মডার্ন ফুটবলে নরমাল ট্রান্সফারের পাশাপশি ফ্রি ট্রান্সফার পদ্ধতি খুবই বহুল প্রচলিত। তবে এই বোসম্যান ট্রান্সফার পদ্ধতি প্রচলনের পেছনে রয়েছে কিছু লক্ষণীয় ঘটনা। আজ আমরা সে বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্নভাবে জানবার চেষ্টা করবো।
প্রথমত, ফ্রি ট্রান্সফার কে কেনো বোসম্যান ট্র্যান্সফার বলা হয়? এই বোসম্যান নামকরণের পেছনে কি কোনো যথার্থ কারণ রয়েছে? উত্তর হচ্ছে , হ্যাঁ। সাবেক বেলজিয়ান ফুটবলার Jean - Marc Bosman এর নামে এই ট্রান্সফার পদ্ধতির নামকরণ করা হয়। পেশাদারী জীবনে মিডফিল্ড পজিশনে খেলা বোসম্যান খেলেছেন বেশ কিছু বেলজিয়ান ক্লাবে এবং বেলজিয়ামের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে। তার ধারবাহিকতায় ১৯৮৮ সালে দুইবছরের চুক্তিতে তিনি যোগ দেন বেলজিয়ান ক্লাব "আর এফসি লিইজে" তে।
সেখানে দুই মৌসুমে খেলার সুযোগ পান মাত্র ৩ ম্যাচ। যখন তার চুক্তি শেষের দ্বারপ্রান্তে অর্থাৎ ১৯৯০ সালের দিকে, তখন ফ্রান্সের সেকেন্ড ডিভিশনের ক্লাব Dunkerque বোসম্যানকে চুক্তির মেয়াদ শেষে ফ্রিতে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু তার রানিং ক্লাব "আর এফসি লিইজ" সেই ফ্রি মুভ নাকচ করে দেয়। এবং বোসম্যানকে নিতে হলে ৫,০০,০০০ ইউরো ফি পরিশোধের কথা জানায়। কেনোনা এর আগে ফুটবলে কখনো ফ্রি ট্রান্সফারের নজির দেখা যায়নি।
"আরএফসি লিইজ' বোসম্যানকে ফ্রিতে ছাড়তে অনিচ্ছুক আর ওইদিকে দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়ায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার ওয়েজ স্যালারি ৭৫ শতাংশ কমিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিপত্তি ঘটে এখানেই।যেহেতু বোসম্যান চুক্তির মেয়াদ শেষে অন্য ক্লাবে যেতে ইচ্ছুক - সেখানে তার কারেন্ট ক্লাবের অযৌক্তিক দাবি এবং মেয়াদ শেষ হবার মাস খানেক আগে তার বেতন লক্ষণীয় মাত্রায় হ্রাস করে ফেলে, তাই এই ভদ্রলোক বেলজিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, স্ট্যান্ডার্ড লিইজ এবং উয়েফার বিরুদ্ধে ১৯৫৭ সালের রোম চুক্তির ধারা অনুযায়ী আদালতে মামলা করেন।
বোসম্যানের সাথে ছিলো তার দুই আইনজীবী - লুক মিশন এবং লুইজ ডুপন। তাদের দাবি ছিলো - চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে থাকলে রানিং ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করলে নতুন মৌসুমের জন্যে কেনো এই ফ্রি মুভ বা ট্রান্সফার অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।
এই মামলা দায়ের করার পর বেলজিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন। যার ফলে তার ফুটবল ক্যারিয়ার বেশি লম্বা হতে পারেনি। মাঝে সেইন্ট কুয়েন্টিন নামে একটি ফরাসি ক্লাবে একবছর খেলেন তিনি।
আদালতে অভিযোগ দায়ের করার পর বিভিন্ন যুক্তি আলোচনা পর্যালোচনা ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখে বোসম্যান কেসের রায় প্রদান করা হয়। এই বোসম্যান কেসকে Union Royale Belge v Bosman নামে অভিহিত করা হয় যার বিচার কাজ European Court of Justice (ECJ) তে সম্পন্ন হয়। রায়ে ঘোষণা দেয়া হয় যে - বোসম্যান সহ ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর যেকোনো ফুটবলার তাদের রানিং ক্লাবের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার পর ইচ্ছা করলে অন্য কোনো ক্লাবে ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দিতে পারবেন। তাছাড়া যদি কোনো প্লেয়ার তার রানিং ক্লাবের সাথে চুক্তি নবায়ন করতে অনিচ্ছুক থাকেন তাহলে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যখন ৬ মাস বা তার কম সময় বাকি তখন থেকে অন্য যেকোনো ক্লাবের সাথে "প্রি কনট্র্যাক্ট" সাইন করে রাখতে পারেন।
অর্থাৎ তার রানিং ক্লাব এই ক্ষেত্রে কোনো ফি পাবেনা। যা হবে শুধু মাত্র ফুটবলার এবং নতুন ক্লাবের সঙ্গে ( যে ক্লাবে ফুটবলারটি যেতে ইচ্ছুক বা যে ক্লাবটি তাকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী)।
এই ক্ষেত্রে নতুন ক্লাবটি প্লেয়ারের সঙ্গে পার্সোনাল টার্ম গুলো এগ্রি করে ( যেমন: বার্ষিক বেতন, চুক্তির মেয়াদ এবং অন্যান্য যাবতীয় সকল বিষয়)।
এই রায়ের মাধ্যমে ট্রান্সফার মার্কেটে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন দেখা যায়। ফ্রি ট্র্যান্সফার এর সাথে জড়িয়ে যায় বোসম্যানের নাম।
বোসম্যান রুলিং আইন পাশ হবার আগে ইউরোপের ক্লাবগুলো থ্রি প্লাস টু ( 3+2) নামে একটি রুলসের অধীনে ছিল। যেখানে শুরুর একাদশে ক্লাবগুলো মাত্র তিনজন বিদেশি ফুটবলার খেলাতে পারবে এবং বেঞ্চে দুইজন বিদেশি রাখতে পারবে। এই রুল নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলায় পড়ে ইংলিশ ক্লাব গুলো। কেনোনা ১৯৯৪ সালে উয়েফা ঘোষনা করে যে কোনো ইংলিশ ক্লাব স্কটিশ এবং ওয়েলস প্লেয়ারদের লোকাল কোটায় খেলাতে পারবেনা। তাদেরকে বিদেশি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। তবে পরবর্তীতে সব ক্লাবের জন্যে আশীর্বাদ হয়ে আসে বোসম্যান রুলিং। এর মাধ্যমে ক্লাবগুলো নিজেদের ইচ্ছা মতো ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ভুক্ত দেশের প্লেয়ার খেলাতে পারবে। শুধু মাত্র ইইউ এর বাহিরে থাকা প্লেয়ারদের খেলানোর উপর বাধ্যবাধকতা থাকে।
এই আইন পাশ হবার পর ফুটবলারদের হাতে আগের চাইতে বেশি ক্ষমতা চলে যায়। যারফলে কয়েকটি জিনিসের প্রবণতা বেড়ে যায়। যেমন:
১. ফুটবলারদের বেতন বাড়ানোর প্রবণতা ( অনেক সময় অযৌক্তিক দাবিও করে থাকে)
২.ফুটবল ট্র্যান্সফারের ক্ষেত্রে এজেন্ট সিস্টেমের আবির্ভাব।
৩. ধনী ক্লাবগুলো প্লেয়ারদের আকর্ষণীয় স্যালারি প্রদানের মাধ্যমে ফ্রিতে নিজেদের দলে ভেড়ানোর প্রবণতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। মূলত এখানে "টাকা" একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে!
এর মাধ্যমে মাঝারী বা ছোট ক্লাবগুলো একটু বিপাকের মধ্যে পড়ে। দেখা গেলো যে এইসকল ক্লাবের একটি উঠতি বয়সী খুব ভালো প্লেয়ার একটা সময় পর তার বেতন অনেক বেশি দাবি করলো - যা মেটানো ক্লাবের পক্ষে সম্ভব না। তখন সেই প্লেয়ারটি চাইলে ফ্রিতে অন্য কোথাও মুভ করতে পারবে যেখানে তার সকল চাহিদা পূরণ হবে। এই ক্ষেত্রে সেই প্লেয়ারকে বিক্রি করে ক্লাবটি যে আয় করতে পারতো সেই রাস্তাটি এখন বন্ধ হবার একটি অপশন খুলে গিয়েছে।
বোসম্যান রুলিং চালু হবার সাথে সাথে এর প্রভাব মার্কেটে পড়া শুরু করে।১৯৯৬ সালে পল কেইনের স্কটিশ ক্লাব অ্যাভার্ডিন থেকে নরওয়েজিয়ান ক্লাব ভাইকিং স্টেভেঞ্জার এর মুভটি ছিলো প্রথম ব্রিটিশ বোসম্যান ট্রান্সফার।
তবে বিখ্যাত ডাচ ফুটবলার এডগার ডেভিস প্রথম কোনো হাই প্রোফাইল ফুটবলার যিনি এই বোসম্যান ট্রান্সফারের সাহায্যে ১৯৯৬ সালে আয়াক্স থেকে এসি মিলানে যোগ দেন।
তার পথ অনুসরণ করে পরেরবছর আরেক ডাচ লিজেন্ড প্যাট্রিক ক্লাইভার্ট আয়াক্স থেকে এসি মিলানে যোগ দেন। এছাড়া ১৯৯৮ সালে ড্যানিশ ফুটবলার ব্রায়ন লাউড্রপ রেঞ্জার্স থেকে চেলসিতে যোগ দেন এই রুলের সাহায্যে।
আরেকটি বড় চমক ছিলো ১৯৯৯ সালে ব্রিটিশ ফুটবলার স্টিভেন ম্যাকম্যানাম্যান এর লিভারপুল থেকে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি দেবার ঘটনাটি।
ম্যাকম্যানাম্যান ছিলেন প্রথম কোনো হাইপ্রোফাইল ব্রিটিশ ফুটবলার যিনি বোসম্যান ট্রান্সফারের মাধ্যমে নতুন ক্লাবে যোগ দেন। সেই সময় তিনি সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ব্রিটিশ ফুটবলার ছিলেন। ধীরে ধীরে এটি একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়।
২০০০ সালের পরবর্তী সময় যা আরো জনপ্রিয়তা লাভ করে। সোল ক্যাম্বেলের টটেনহ্যাম টু আর্সেনাল মুভটি ছিলো সে সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সমালোচিত একটি ট্রান্সফার। ২০০১ সালে তিনি আর্সেনালে প্রতি সপ্তাহে এক মিলিয়ন ইউরো আয় করতেন।
যেখানে দশ বছর আগেও কোনো ফুটবলার ০.০১ মিলিয়নের বেশি এক সপ্তাহে আয় করতে পারতোনা।
যেহেতু প্লেয়ারদের আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে, এরই মধ্যে চালু হয়ে যায় অ্যাজেন্ট সিস্টেম। বোসম্যান রুলিং এর সবচেয়ে অন্যতম প্রভাব হিসেবে একে বিবেচনা করা হয়। প্লেয়ারদের অ্যাজেন্টরা তাদের প্লেয়ারদের জন্য সেরা সেরা অফার বিবেচনা করে তাদের পরামর্শ দিতেন এবং বিনিময়ে পেতেন মোটা অঙ্কের অর্থ। এর ফলে মিনো রাইওলা, জর্জ মেন্ডেজ , পিনি জাহাভি, পল স্ট্রেটফর্ড, পেরে গার্দিওলা ( পেপ গার্দিওলার ভাই) এর মতো বিখ্যাত অ্যাজেন্টদের দেখা পায় ফুটবল বিশ্ব।
এখন পর্যন্ত অসংখ্য বোসম্যান ট্রান্সফার সম্পন্ন হয়েছে। ২০০০ সাল পরবর্তী সময় নামিদামি প্লেয়ারদের এই ট্র্যান্সফার মুভ আরো বেশি মাত্রায় লক্ষ করা যায়। তেমন আরো কিছুই বোসম্যান ট্রান্সফারের লিস্ট নিচে প্রদান করা হলো :
১. জিয়ানলুকা ভিয়ালি - জুভেন্তাস টু চেলসি (১৯৯৬)
২. রবার্তো বাজ্জিও - মিলান টু বোলোনিয়া (১৯৯৭)
৩. হেনরিক লারসন - সেল্টিক টু বার্সেলোনা (২০০৪)
৪. মাইকেল বালাক - বায়ার্ন মিউনিখ টু চেলসি (২০০৬)
৫. মার্কাস বাবেল - বায়ার্ন মিউনিখ টু লিভারপুল (২০০০)
৬. এস্টাবেন ক্যামব্রিয়াসো - রিয়াল মাদ্রিদ টু ইন্টার মিলান (২০০৪)
৭. আন্দ্রেয়া পিরলো - এসি মিলান টু জুভেন্তাস (২০১১)
৮. রবার্ট লেওয়ান্ডস্কি - বরুশিয়া ডর্টমুন্ড টু বায়ার্ন মিউনিখ (২০১৪)
৯. রাউল - রিয়াল মাদ্রিদ টু শালকে (২০১০)
১০. ইব্রাহিমোভিচ - পিএসজি টু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২০১৬)
১১. পল পগবা - ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড টু জুভেন্টাস (২০২২)
১২. লিওনেল মেসি - বার্সেলোনা টু পিএসজি (২০২১)
এছাড়া এই লিস্টে রয়েছে রুডিগার টু মাদ্রিদ, উয়াইনেল্ডাম এবং ডোনারোমা টু পিএসজি সহ আরো অসংখ্য নাম। এতেই বুঝা যায় বোসম্যান ট্র্যান্সফার কতোটা জনপ্রিয়, বহুল ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি। একদিকে এই নিয়ম যেমন প্লেয়ারদের কাছে বেশি ক্ষমতা প্রদান করেছে অন্যদিকে ধনী ক্লাবগুলোও হালের সেরা সেরা প্লেয়ারদের নিজেদের দলে ভেড়ানো শুরু করে দেয়। আর্থিকভাবে কম স্বচ্ছল ক্লাবগুলো প্রায়ই ক্ষতির মুখে পড়লেও নির্দিষ্ট সংখ্যক ফরেন প্লেয়ার খেলানোর সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে আসে সব ক্লাবগুলো যা একটি বড় স্বস্তির বিষয়। পরিশেষে সুবিধা অসুবিধা দুটোই থাকলেও এই নিয়মে আধুনিক ফুটবল এবং ট্রান্সফার সিস্টেমে বিশাল প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছে যার ফলে অনেক নিয়ম পরিবর্তন হয়ে যায়!
ছবিতে: মাঝখানে বোসম্যান, ডান পাশে লুক মিশন এবং বাম পাশে লুইজ ডুপন।
- 0 মন্তব্য