• ফুটবল

বিশ্বকাপ ফুটবলের উল্লেখযোগ্য যত রেকর্ড এবং ইতিহাস

পোস্টটি ৬০৯৬ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

বছর ঘুরে আবার এলো ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ। কাতারে এবার বসতে যাচ্ছে এই মেগা ইভেন্টের ২২ তম আসর। এর আগে ৯০ বছরে মোট অনুষ্ঠিত হয়েছে ২১ টি আসর। আফ্রিকা, ইউরোপ মহাদেশে ঘুরে ২০ বছর পর আবারও এশিয়ার মাটিতে ফিরলো "দ্যা গ্রেটেস্ট শো অন দ্যা আর্থ"। এই সুদীর্ঘ ২১ আসরে ঘটেছে অসংখ্য ঘটনা, রেকর্ডের পাতায় যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন নতুন সব রেকর্ড, রচিত হয়েছে অগণিত অনেক ইতিহাস। জানা অজানা এসব রেকর্ড, ইতিহাসের এক গুচ্ছ তথ্য নিয়েই সাজানো এই লিখাটি।আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো 

 

১. ব্রাজিল একমাত্র দল যারা এখন পর্যন্ত সব বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে (২২ বার) 

২. এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন দলের নামও ব্রাজিল। (৫ বার)

৩. সবচেয়ে বেশি রানার্সআপ হবার রেকর্ড জার্মানির (৪ বার -১৯৬৬,১৯৮২,১৯৮৬,২০০২)

৪. সর্বাধিক চারবার তৃতীয় হয়েছে জার্মানি ( ৪ বার - ১৯৩৪,১৯৭০,২০০৬, ২০১০)

৫. সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ব্রাজিলের (৭৩টি)

৬. সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হেরেছে মেক্সিকো (২৬ ম্যাচ)

৭. সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচে: অস্ট্রিয়া ৭ - ৫ সুইজারল্যান্ড (১৯৫৪ বিশ্বকাপ)

৮. সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড - হাঙ্গেরির। ১০-১ গোলে হারিয়ে এল সালভাদরকে (১৯৮২ বিশ্বকাপ)

৯. সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড জার্মানির লোথার ম্যাথিউসের (২৫ ম্যাচ)

১০. ২০০২ কোরিয়া জাপান বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২০টি ভেন্যুতে খেলা হয়েছে।

brazil

১১.আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড রয়েছে ৬টি দেশের।

উরুগুয়ে (১৯৩০)

ইতালি (১৯৩৪)

ইংল্যান্ড (১৯৬৬)

পশ্চিম জার্মানি (১৯৭৪)

আর্জেন্টিনা (১৯৭৮)

ফ্রান্স (১৯৯৮)

 

১২. ভিটোরিও পোজ্জো একমাত্র কোচ যিনি একাধিকবার বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ইতালির হয়ে ১৯৩৪ এবং ১৯৩৮ বিশ্বকাপ জয় করেন এই ইতালিয়ান।

 

১৩. মাত্র তিনজন প্লেয়ার এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের বিরল কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এরা হচ্ছেন: 

মারিও জাগালো (ব্রাজিল)

ফ্রেঞ্জ বেকেনবাওয়ার (জার্মানি)

দিদিয়ের দেশম (ফ্রান্স)

f5dead8e8313fbf74f22d555cebb647bceb653e6

১৪. ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ট্রফি জয়ের রেকর্ড রয়েছে ব্রাজিল এবং ইতালি।

 

১৫. এখন পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপের ফাইনাল অতিরিক্ত সময়তে গড়িয়েছে। (১৯৩৪,১৯৬৬,১৯৭৮,২০১০,২০১৪)

 

১৬. দুইটি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ মীমাংসিত হয়েছে পেনাল্টি শ্যুট আউটের মাধ্যমে - ১৯৯৪ এবং ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ। 

 

গোল সমাচার: 

 

i. এক বিশ্বকাপ আসরে সর্বোচ্চ সর্বমোট গোল সংখ্যা ১৭১ টি। মজার বিষয় হচ্ছে এই ঘটনা ঘটেছে দুইবার। ১৯৯৮ এবং ২০১৪ বিশ্বকাপে।

 

ii. এক বিশ্বকাপ আসরে সর্বনিম্ন সর্বমোট গোল সংখ্যা ৭০ টি। এই ঘটনা ঘটেছে প্রথম দুই বিশ্বকাপের আসরে।

 

iii. বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড হাঙ্গেরির দখলে। ১৯৫৪ বিশ্বকাপে ২৭ গোল করেছিলো তারা।

iv. এক বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের মালিক ফ্রান্সের জাস্ট ফন্টেইন। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ আসরে তিনি মাত্র ৬ ম্যাচে ১৩ গোল করেন।gettyimages-133243582

v.  বিশ্বকাপের সর্বকনিষ্ঠ গোল স্কোরার পেলে (১৭ বছর ২৩৯ দিন)। এবং সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ড ক্যামেরুনের রজার মিলা' র দখলে (৪২ বছর ৩৯ দিন)। 

vi. হাইয়েস্ট গোল স্কোরার - জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসা (১৬ গোল)

vii. হাইয়েস্ট এসিস্ট প্রোভাইডার - পেলে (১০টি)

viii. দ্রুততম গোল স্কোরার - তুরস্কের হাকান শুকুর (১১ সেকেন্ড)

ix. এক ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলদাতা রাশিয়ার ওলেগ সালেনকো। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ক্যামেরুনের বিপক্ষে একাই করেন পাঁচ গোল।

x. এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের ইতিহাসে মোট ওউন গোলের সংখ্যা ৫২টি। এর মধ্যে এক আসরে সর্বোচ্চ ১২টি ওউন গোল হয়েছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে।

 

ক্লিনশিট সমাচার:

 

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ক্লিনশিট রাখার রেকর্ড রয়েছে দুইজনের - ইংল্যান্ডের পিটার শিল্টন এবং ফ্রান্সের ফ্যাবিয়ান বার্থেজের সর্বমোট ১০ টি ক্লিনশিট রেখেছেন তারা।

 

হ্যাট্রিক সমাচার: 

 

i. এখন পর্যন্ত মোট ৫২ টি হ্যাট্রিক হয়েছে ফুটবলের বিশ্ব আসরে। 

 

ii. একাধিকবার হ্যাট্রিক করার রেকর্ড রয়েছে স্যান্ডর ককসিস (হাঙ্গেরি), জাস্ট ফন্টেইন (ফ্রান্স), জার্ড মুলার (জার্মানি), গাব্রিয়েল বাতিস্তুতা (আর্জেন্টিনা)। 

iii.  ককসিস, মুলার, ফন্টেইন প্রত্যেকেই এক আসরে দুইবার করে হ্যাট্রিক করেছেন।

iv. গাব্রিয়েল বাতিস্তুতা বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার যিনি দুইটি আলাদা বিশ্বকাপে হ্যাট্রিক করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন (১৯৯৪,১৯৯৮ বিশ্বকাপ)NUILS3BJBJDXJOLJSLQUQUTNWU

v. বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাট্রিক করার রেকর্ড রয়েছে জিউফ হার্স্টের।

vi. ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ বাদে প্রতিটি আসরেই হ্যাট্রিক করেছেন ফুটবলাররা।

 

কার্ড সমাচার:

 

i. বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত লাল কার্ড দেখানো হয়েছে মোট ১৭৩ বার। 

ii. ফাইনালে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে ৫ জন ফুটবলারকে।

iii. দ্রুততম লাল কার্ড দেখেন - উরুগুয়ের হোসে বাতিস্তা (৫৬ সেকেন্ডে)

iv. সবচেয়ে বেশি কার্ড দেখেন - হ্যাভিয়ের মাসচেরানো (৭ টি কার্ড)

v. জিয়ানলুকা পাগলিউকা একমাত্র গোলকিপার যিনি বিশ্বকাপে লাল কার্ড দেখেছেন। 

vi. সবচেয়ে বেশি ১০ বার লাল কার্ড দেখেছে ব্রাজিল।

vii. সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখেছে ক্রোয়েশিয়া (১৫ বার)

 

viii. এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সেন্ট অফ হয়েছে চারজন।২০০৬ সালের বিশ্বকাপে পর্তুগাল - নেদারল্যান্ড ম্যাচে দুইদলের দুইজন করে প্লেয়ার লাল APTR_Netherlands-Portugal-World-Cupকার্ড দেখেন। ম্যাচটি 'ব্যাটল অফ নুরেমবার্গ'  নামেও পরিচিত।

 

পেনাল্টি/ শ্যুট আউট সমাচার:

 

i. এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পেয়েছে স্পেন (১৮ টি)। এই পেনাল্টিকে গোলে কনভার্ট করার ক্ষেত্রেও শীর্ষে আছে স্প্যানিশরা (১৫টি)

ii. বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি শ্যুট আউটের মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা। সর্বমোট ৫ বার পেনাল্টি শ্যুট আউটের সম্মুখীন হয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশটি।1404951326000-gty-451935110_3548061_ver1.0

 

দর্শক সমাচার:

 

i. ফাইনালে সর্বোচ্চ অ্যাটেনডেন্স - ১৯৫০ বিশ্বকাপ; উরুগুয়ে - ব্রাজিল ( প্রায় ২ লাখ)

ii. রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩.৫ মিলিয়ন ফ্যান ১৯৯৪ বিশ্বকাপে খেলা দেখেন।1994-fifa

iii. সর্বোচ্চ গড় অ্যাটেনডেন্স ছিলো ১৯৯৪ বিশ্বকাপে(প্রতি ম্যাচে গড়ে ৬৮,৯৯১জন দর্শক ছিলো)